IPL 2022

IPL 2022: খরচ তিন শব্দ! কলকাতার বিদায়ের দিনে নিজের অভিমানই কি বুঝিয়ে দিলেন অশোক ডিন্ডা

কেকেআরে বাঙালি ক্রিকেটার না থাকা, বাংলার ক্রিকেটের সঙ্গে রাজ্যের সিনিয়র ক্রিকেটারদের মতবিরোধ, এই সবই হয়তো বোঝাতে চাইলেন ডিন্ডা।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০২২ ১২:১৬
ফেসবুক পোস্টে কী বোঝাতে চাইলেন ডিন্ডা

ফেসবুক পোস্টে কী বোঝাতে চাইলেন ডিন্ডা ফাইল চিত্র

এক লাইনের ফেসবুক পোস্ট। লেখা মাত্র তিনটি শব্দ। ‘গুডবাই কেকেআর ২০২২’। কলকাতা নাইট রাইডার্স আইপিএলের প্লে-অফের লড়াই থেকে ছিটকে যাওয়ার পরেই নিজের ফেসবুকে এই কথা লেখেন এক সময় কেকেআরের হয়ে খেলা বাংলার ক্রিকেটার অশোক ডিন্ডা। কিন্তু শেষ বার তো তিনি কলকাতার হয়ে খেলেছেন ২০১০ সালে। বাংলার হয়েও আর খেলেন না। ক্রিকেট থেকে শতহস্ত দূরে রাজনীতির ময়দানে ব্যস্ত। তাহলে ১২ বছর পরে কেন কলকাতা ছিটকে যাওয়ার পরে এরকম পোস্ট করলেন তিনি? কী কারণ থাকতে পারে এর পিছনে?

নাম কলকাতা নাইট রাইডার্স হলেও বহু বছর ধরে দলে কোনও বাঙালি ক্রিকেটার না থাকায় কলকাতা ফ্র্যাঞ্চাইজির সমালোচনা করেন অনেকে। তাঁদের দাবি, মুম্বইয়ের অভিনেতা দল কিনেছেন, দল সামলান দক্ষিণ ভারতের ব্যক্তি, তাঁরা আর বাঙালিদের আবেগ কী বুঝবেন। সত্যিই তো, আইপিএলের শুরুর কয়েকটি বছরে তাও সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, অশোক ডিন্ডা, লক্ষ্মীরতন শুক্ল, ঋদ্ধিমান সাহা, দেবব্রত দাসরা খেলেছিলেন এই দলে। কিন্তু সৌরভ কলকাতা ছেড়ে পুণেতে যোগ দেওয়ার পর থেকে বাঙালির সংখ্যা কমতে কমতে শূন্যতে গিয়ে ঠেকে। লিগের বাকি কোনও দলে এমন নেই। সবাই রাজ্য দলের কয়েক জন ক্রিকেটারকে রাখেন। সে দিক থেকে কেকেআর ব্যতিক্রম।

Advertisement
ডিন্ডার ফেসবুক পোস্টের স্ক্রিনশট

ডিন্ডার ফেসবুক পোস্টের স্ক্রিনশট

বাংলার ক্রিকেটের সঙ্গেও ডিন্ডার সম্পর্ক তিক্ততার মধ্যে দিয়ে শেষ হয়েছিল। ২০১৯ সালের রঞ্জি ট্রফিতে অন্ধ্রপ্রদেশের বিরুদ্ধে ম্যাচের আগে বাংলার সাজঘরে বোলিং কোচ রণদেব বসুর সঙ্গে প্রায় হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন ডিন্ডা। তড়িঘড়ি দল থেকে বাদ দেওয়া হয় অভিজ্ঞ সৈনিককে। কোচ অরুণ লালও নাকি ডিন্ডার ফিটনেসে খুশি ছিলেন না। অভিমানী ডিন্ডা সিদ্ধান্ত নেন বাংলা ছেড়ে দেবেন। পরের বছর বাংলা ছেড়ে গোয়া চলে যান তিনি। সেখানে এক বছর খেলার পরে ২০২১ সালে ক্রিকেটকে বিদায় জানান ডিন্ডা। তার পর থেকে বাংলা ক্রিকেটের কোনও বিষয়ে থাকতে দেখা যায়নি তাঁকে।

বাংলার ক্রিকেটের সঙ্গে বাংলার ক্রিকেটারদের খারাপ সম্পর্কের টাটকা উদাহরণ ঋদ্ধিমান সাহা। জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ার পরে এ বছর রঞ্জির গ্রুপ পর্বের খেলায় বাংলার হয়ে খেলতে চাননি ঋদ্ধি। বিশ্রাম নিয়েছিলেন। জানা যায়, সেই সময় সিএবি-র এক কর্তার কিছু মন্তব্যে অভিমান হয় ঋদ্ধির। অপমানিত ঋদ্ধি ঠিক করেন যে, বাংলার হয়ে আর কোনও দিন খেলবেন না। সিএবি সভাপতি অভিষেক ডালমিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করে ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’ চেয়ে বসেন, যাতে তিনি অন্য রাজ্যের হয়ে খেলতে পারেন। অবশেষে পরিস্থিতি সামলাতে মাঠে নামেন কোচ অরুণ লাল। তিনি ঋদ্ধির সঙ্গে কথা বলার পরে বাংলার হয়ে তাঁর খেলার একটা সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

কলকাতা নাইট রাইডার্সে বাঙালি ক্রিকেটার না থাকা, বাংলার ক্রিকেটের সঙ্গে বার বার রাজ্যের সিনিয়র ক্রিকেটারদের মতবিরোধ, এই সব বিষয়ের ফলে আখেরে ক্ষতি হয়েছে বাংলার ক্রিকেটেরই। কেকেআরের আইপিএল থেকে বেরিয়ে যাওয়া সেই তালিকায় নতুন সংযোজন। সেটাই হয়তো নিজের ছোট্ট পোস্টের মধ্যে দিয়ে বোঝাতে চাইলেন ডিন্ডা।

আরও পড়ুন
Advertisement