স্ত্রী মত্ত হয়ে অসামাজিক কাজ না করলে, শুধু মদ্যপানকে স্বামীর প্রতি নিষ্ঠুরতা বলা যায় না। পর্যবেক্ষণ ইলাহাবাদ হাই কোর্টের। — প্রতীকী চিত্র।
স্ত্রী শুধুমাত্র মদ্যপান করা মানেই তা স্বামীর প্রতি নিষ্ঠুরতা হয়ে যায় না। এ কথা জানিয়েছে ইলাহাবাদ হাই কোর্ট। কোন ক্ষেত্রে নিষ্ঠুরতা হিসাবে বিবেচনা করা যায়, তা-ও জানিয়েছে আদালত। হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ, মত্ত হয়ে কোনও অন্যায্য বা অসামাজিক কাজ না করলে, শুধু মদ্যপান করা স্বামীর প্রতি নিষ্ঠুরতা নয়। কলকাতা নিবাসী মহিলার লখনউ নিবাসী স্বামীকে এ কথা জানিয়েছে আদালত।
একটি বিবাহের ওয়েবসাইট থেকে আলাপ হয়েছিল দম্পতির। ২০১৫ সালে তাঁরা বিয়ে করেন। কিন্তু একসঙ্গে বেশি দিন সংসার করা হয়নি। এখন স্বামী-স্ত্রী আলাদাই থাকেন। আইনি খবর পরিবেশনকারী ওয়েবসাইট ‘বার অ্যান্ড বেঞ্চ’ অনুসারে, ছেলেকে নিয়ে কলকাতায় থাকেন মহিলা। স্বামী থাকেন লখনউয়ে। বিয়ের এক বছর পর থেকেই তাঁরা আলাদা হয়ে যান। ২০১৬ সালে কলকাতায় চলে আসেন স্ত্রী। এই অবস্থায় স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ চেয়ে প্রথম লখনউয়ের এক পারিবারিক আদালতের দ্বারস্থ হন স্বামী। সেখানে আর্জি খারিজ হয়ে যায়। পরে ইলাহাবাদ হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন স্বামী।
বিবাহবিচ্ছেদের মামলার শুনানি চলছিল ইলাহাবাদ হাই কোর্টের বিচারপতি বিবেক চৌধরি এবং বিচারপতি ওমপ্রকাশ শুক্লের বেঞ্চে। স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন স্বামী। মামলাকারীর বক্তব্য, তাঁকে না জানিয়েই স্ত্রী বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে চলে যান। এবং মদ্যপানও করেন। স্বামীর বিবাহবিচ্ছেদের মামলার প্রেক্ষিতে আদালতে কিছু জানাননি মহিলা। ফলে একতরফা অভিযোগের প্রেক্ষিতেই মামলাটি আদালতে ওঠে।
ইলাহাবাদ হাই কোর্ট বলেছে, “স্ত্রী মত্ত হয়ে কোনও অন্যায্য বা অসামাজিক কাজ না করলে, শুধু মদ্যপান করাকে স্বামীর প্রতি নিষ্ঠুরতা বলা যায় না। মদ্যপান করাকে মধ্যবিত্ত সমাজে এখনও খারাপ ভাবে দেখা হয় এবং এটিকে সংস্কৃতি-বহির্ভূত বলে বিবেচনা করা হয়। তবে মদ্যপান করলে তা মামলাকারীর প্রতি নিষ্ঠুরতা হয়ে উঠেছে, এমন কোনও নথি পাওয়া যায়নি।”
হাই কোর্ট জানিয়েছে, মহিলা মদ্যপান করার জন্য দুর্বল বা অসুস্থ সন্তান প্রসব করেছেন, এমন কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। গর্ভবতী থাকাকালীন মহিলার কোনও শারীরিক সমস্যাও ছিল না। মহিলার কাছে পুরুষ বন্ধুদের থেকে বিভিন্ন ফোন আসত বলে যে অভিযোগ স্বামী করেছেন, তার-ও কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে আদালত। তবে যে হেতু মহিলা ২০১৬ সাল থেকে আলাদা থাকছেন এবং মামলাতেও কোনও বক্তব্য জানাননি, তাই বিবাহবিচ্ছেদের আর্জি মঞ্জুর করেছে হাই কোর্ট।