নীরজ চোপড়া। —ফাইল চিত্র।
এখনও রাগ কমছে না নীরজ চোপড়ার। এশিয়ান গেমসে সোনা জেতার পরেও চিনের অফিশিয়ালদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন অলিম্পিক্সজয়ী ভারতীয় জ্যাভলিন থ্রোয়ার। বুধবার এশিয়ান গেমসে জ্যাভলিনে নীরজ প্রথম থ্রোয়ের পর চিনের অফিশিয়ালদের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন। দু’দিন কেটে গেলেও নীরজ এখনও শান্ত হননি।
চিন থেকে সোনা জিতে দেশে ফিরেছেন নীরজ। ভারতে এসে এক সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমার প্রথম থ্রোটা খুব ভাল হয়েছিল। ৮৮ মিটার পার করে গিয়েছিল বলেই আমার ধারণা। অনেক ক্ষণ অপেক্ষা করেছিলাম। ভাবছিলাম এই বোধ হয় আমার ছোড়া দূরত্বটা দেখাবে স্ক্রিনে। অনেক ক্ষণ অপেক্ষা করার পর দেখি আমার পরে যে ছুড়েছিল, তার দূরত্ব মাপার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। মনে হয় আমার পরে যে ছুড়েছিল, তারটা মাপার জন্য দৌড়ে গিয়েছিলেন অফিশিয়ালেরা। তখনও আমার দূরত্বটা মাপাই হয়নি।”
প্রচণ্ড বিরক্ত ছিলেন নীরজ। তিনি গিয়ে জানতে চান কতটা দূরে জ্যাভলিন ছুড়েছিলেন। নীরজ বলেন, “আমি গিয়ে অফিশিয়ালদের বলি যে, আমার ছোড়া দূরত্ব দেখাচ্ছে না। কিন্তু তত ক্ষণে ওরা ভুলে গিয়েছে আমার জ্যাভলিন কত দূর গিয়েছিল। রেগে গিয়েছিলাম আমি। ওদের বলি, “এটা কী করে করতে পারলেন আমরা। প্রায় ১৫ মিনিট ধরে কথা বলি। তার পর ওরা বলে যে, আর কিছু করার নেই। আমাকে আবার জ্যাভলিন ছুড়তে হবে।”
নীরজ হতাশ হয়ে গিয়েছিলেন বলেও জানান। তিনি বলেন, “প্রথম থ্রোটা ভাল হওয়ার পর এই ভাবে বাতিল হয়ে যাওয়ায় আমি হতাশ হয়েছিলাম। প্রথম থ্রো ভাল হলে আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি হয়। পরের থ্রোগুলো ভাল হয়। পরের ১৫ মিনিটে আমার মনঃসংযোগ নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করছিলাম। পরের দু’তিনটে থ্রোয়ের সময় আমার মাথা ঠিক মতো কাজ করছিল না। এমন সময় কিশোর জেনা একটা ভাল থ্রো করে। ওর থ্রো দেখে দারুণ আনন্দ পেলাম। একটা প্রতিযোগিতা পেলাম। অলিম্পিক্সের জন্য যোগ্যতা অর্জন করে ও। সেটা দেখে আমি অনুপ্রেরণা পাই। মনে হল আমাকেও ভাল করতে হবে। তার পরেই আমার সোনা জেতার থ্রোটা আসে। তবে সব থেকে ভাল ব্যাপার হচ্ছে সোনা এবং রুপো দুটোই ভারত পেয়েছে।”
চিনের হ্যাংঝাউয়ে এ বারের এশিয়ান গেমস হচ্ছে। সেখানেই চিনের অফিসিয়ালদের বিরুদ্ধে এর আগেও অভিযোগ উঠেছে ভারতীয় প্রতিযোগীর বিরুদ্ধে চক্রান্ত করার। বুধবার ৮৮.৮৮ মিটার দূরে জ্যাভলিন ছুড়ে সোনা জেতেন নীরজ। কিন্তু তাঁর প্রথম থ্রোটি বাতিল করে দেওয়া হয়েছিল। নীরজ জ্যাভলিন ছোড়ার পর প্রায় ১৫ মিনিট হয়ে গেলেও সেই দূরত্ব মাপা যায়নি। শেষ পর্যন্ত থ্রোটি বাতিল করে দেওয়া হয়। দ্বিতীয় বার জ্যাভলিন ছুড়তে হয় তাঁকে। বুধবার মোট সাত বার জ্যাভলিন ছুড়তে হয় নীরজকে। প্রযুক্তিগত ত্রুটির জন্য নীরজের থ্রো বাতিল করা হয়। সোনা জয়ের পর নীরজ বলেছিলেন, “সাধারণত একটি প্রতিযোগিতায় ছ’বার জ্যাভলিন ছুড়তে হয়। কিন্তু এ দিন সাত বার ছুড়তে হল। এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি কখনও হইনি। কিছু একটা গণ্ডগোল ছিল। আমার থ্রোটা ওরা মাপেনি। কিন্তু এর মধ্যেই পরের জন এসে জ্যাভলিন ছুড়ে দেয়। ফলে আমি কত দূর ছুড়েছি সেই মার্ক হারিয়ে ফেলে ওরা। প্রথম থ্রোটা খুব ভাল হয়েছিল। আমি ভিডিয়ো দেখব ওই থ্রোয়ের। জানতে চাই কত দূর ছুড়েছিলাম।”