সেমিফাইনালে হারলেন ইগা শিয়নটেক। ছবি: রয়টার্স।
অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে মেয়েদের ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছেন এরিনা সাবালেঙ্কা এবং ম্যাডিসন কিজ়। বৃহস্পতিবার প্রথম সেমিফাইনালে সাবালেঙ্কা ৬-৪, ৬-২ স্ট্রেট সেটে হারিয়েছেন পাওলো বাদোসাকে। দ্বিতীয় সেমিফাইনালে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর দ্বিতীয় বাছাই ইগা শিয়নটেককে ৫-৭, ৬-১, ৭-৬ গেমে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছেন ম্যাডিসন কিজ়। ম্যাচ পয়েন্ট বাঁচিয়ে ফাইনালে উঠে চমকে দিয়েছেন তিনি।
দ্বিতীয় সেমিফাইনাল শেষ হতে হতে মেলবোর্নে মধ্যরাত পেরিয়ে গিয়েছে। শিয়নটেকের ফোরহ্যান্ড কোর্টের বাইরে যেতেই লাফিয়ে উঠলেন কিজ়। সেই সঙ্গে রড লেভার এরিনার সমর্থকেরাও। ম্যাচের পর সাক্ষাৎকার দিতে এসে প্রাক্তন টেনিস খেলোয়াড় ক্যাসে ডেলাকুয়া বলে দিলেন, বহু দিন পর মেয়েদের সেমিফাইনালে এত টান টান একটা লড়াই দেখলেন।
এর আগে শিয়নটেকের বিরুদ্ধে মাত্র একটি ম্যাচ জিতেছিলেন কিজ়। চারটি হেরেছেন স্ট্রেট সেটে। তৃতীয় সেটে এক সময় ৬-৫ গেমে এগিয়ে ছিলেন শিয়নটেক। ম্যাচ পয়েন্ট থাকার সময় শিয়নটেকের একটি ব্যাকহ্যান্ড নেটে লাগে। সেই ম্যাচ টাইব্রেকারে টেনে নিয়ে গিয়ে জিতেছেন কিজ়।
প্রথম সেটে প্রথম দিকের কয়েকটি গেমে কোনও খেলোয়াড়ই নিজেদের সার্ভিস ধরে রাখতে পারেননি। কিজ় এবং শিয়নটেক বার বার নিজের সার্ভিস হারাচ্ছিলেন। পঞ্চম গেমে প্রথম বার নিজের সার্ভিস ধরে রাখেন শিয়নটেক। সেখান থেকে তিনি এগিয়ে যান ৫-২ গেমে। ভাবা হয়েছিল প্রথম সেট সহজেই পকেটে পুরে নেবেন। তা হয়নি। ফিরে এসে ৪-৫ করে দেন কিজ়। তবে অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে সেই সেট পকেটে পুরে নেন শিয়নটেক।
পোল্যান্ডের খেলোয়াড়কে চেনাই গেল না দ্বিতীয় সেটে। কিজ়ের সার্ভিস এবং ফোরহ্যান্ডের সামনে অসহায় লাগছিল শিয়নটেককে। কোনও রকম প্রতিরোধই দেখা গেল না। মানসিক ভাবে এগিয়ে থেকে তৃতীয় সেট খেলতে নেমেছিলেন কিজ়। তৃতীয় সেটে লড়াই হল হাড্ডাহাড্ডি। গ্র্যান্ড স্ল্যামের সেমিফাইনালে যে রকম লড়াই হওয়া উচিত সেটাই হয়েছে। দুই খেলোয়াড় একে অপরকে এক ইঞ্চিও জমি ছাড়েননি। ৬-৬ শেষ হওয়ার পর সেট গড়ায় ১০ পয়েন্টের টাইব্রেকারে। সেখানেও জমাটি লড়াই। শেষ হাসি হাসেন কিজ়।
বৃহস্পতিবার সকালের ম্যাচে সহজেই জিতে যান দু’বারের বিজয়ী এরিনা সাবালেঙ্কা। টানা তৃতীয় বার অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ফাইনালে উঠেছেন তিনি। পাওলো বাদোসাকে ৬-৪, ৬-২ গেমে হারিয়েছেন তিনি। এই নিয়ে টানা ২০টি ম্যাচ জিতেছেন সাবালেঙ্কা। তার মধ্যে এ বছরই জিতেছেন টানা ১১টি ম্যাচ।
টানা তিন বার অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জেতার থেকে মাত্র এক ধাপ দূরে তিনি। শেষ বার এই কাজ করে দেখিয়েছিলেন মার্টিনা হিঙ্গিস। ১৯৯৭-১৯৯৯— টানা তিন বার ট্রফি জিতেছিলেন তিনি। সেরিনা উইলিয়ামসের পর প্রথম খেলোয়াড় হিসাবে টানা তিনটি অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ফাইনালে ওঠার নজির গড়লেন সাবালেঙ্কা।
বাদোসার সঙ্গে মুখোমুখি সাক্ষাতে ৬-২ এগিয়ে গেলেন সাবালেঙ্কা। তবে ম্যাচের শুরুটা ভাল করেছিলেন বাদোসাই। রড লেভার এরিনায় ম্যাচ শুরু হওয়ার সময় বৃষ্টির কারণে ছাদ আংশিক ঢাকা ছিল। সেই অবস্থায় বাদোসা ২-০ এগিয়ে যান। তৃতীয় গেমে ৪০-০ পয়েন্টে এগিয়ে থাকলেও কাজে লাগাতে পারেননি। সাবালেঙ্কা ব্রেক করেন। সেই গেমটি চলে আট মিনিট। এর পর টানা চারটি গেম জেতেন সাবালেঙ্কা। ৪-২ এগিয়ে যাওয়ার পর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি সাবালেঙ্কাকে। গোটা ম্যাচে আর একটিও ব্রেক পয়েন্টের মুখোমুখি হননি।
গোটা ম্যাচে সাবালেঙ্কা ২৬টি উইনার মেরেছেন। তাতেই তাঁর দাপট বোঝা গিয়েছে। বাদোসা মেরেছেন মাত্র আটটি। ম্যাচের পর বেলারুসের খেলোয়াড় বলেছেন, “প্রথম ০-২, ০-৪০ পিছিয়ে থাকার পরেও ম্যাচটা জেতার পর মনে হচ্ছে সত্যিই ভাল খেলেছি। অসাধারণ একটা ম্যাচ। যখন ওকে দু’বার ব্রেক করে ৩-২ এগিয়ে গেলাম, তখনই মনে হয়েছিল খেলায় ফিরে এসেছি।”