সুনীল ছেত্রী। — ফাইল চিত্র।
ভারতীয় ফুটবলে শেষ হয়েছে সুনীল ছেত্রীর যুগ। বৃহস্পতিবার ভিডিয়োবার্তা দিয়ে ভারতীয় দলের অধিনায়ক জানিয়ে দিয়েছেন, আগামী ৬ জুন তিনি শেষ ম্যাচ খেলতে নামবেন। সুনীলের অবসরের কথা ভেবে ভারতের ফুটবলপ্রেমীদের মন যেমন ব্যথিত, তেমনই চিন্তিত। এই খবর জানার পরে সবার আগে যে প্রশ্নটা উঠছে তা হল, সুনীলের উত্তরসূরি কে? তিনি না থাকলে কে ভারতের জার্সিতে গোল দেবেন? কে বিপদের মুখে দলকে উদ্ধার করবেন? কে চাপের মুখে আদর্শ নেতার মতো দলের বাকিদের শান্ত রেখে খেলাবেন? প্রশ্ন অনেক থাকলেও উত্তর অজানা। তবু বর্তমান ভারতীয় দলের কথা মাথায় রেখে আনন্দবাজার অনলাইন খুঁজে নিল তিন ফুটবলারকে, যাঁরা আগামী দিনে সুনীলের উত্তরসূরি হয়ে উঠতে পারেন।
মনবীর সিংহ
দীর্ঘ দিন ধরেই তিনি খেলছেন জাতীয় দলের হয়ে। তবে এখনও নিজেকে পুরোপুরি সুনীলের যোগ্য উত্তরসূরি করে তুলতে পারেননি। মোহনবাগানের হয়ে একটু পিছন থেকে খেললেও জাতীয় দলে তাঁকে মূলত ফরোয়ার্ড হিসাবেই খেলান কোচ ইগর স্তিমাচ। তবে মনবীরের সবচেয়ে বড় সমস্যা হল ধারাবাহিকতার অভাব। জাতীয় দলের হয়ে খেলতে গেলে যে পরিমাণ দায়বদ্ধতা, যে মানসিকতা থাকতে হয় তার অভাব রয়েছে মনবীরের খেলায়। ৪১টি ম্যাচে মাত্র সাতটি গোল করেছেন তিনি। বড় ম্যাচে তাঁকে অনেক ভাল খেলতে হবে। চাপের মুখে বাড়তি দায়িত্ব নিতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা, তাঁকে সবার আগে পারফরম্যান্সের জোরে দলে নিয়মিত হতে হবে। তবে এই মুহূর্তে ৯ নম্বরে খেলতে পারার মতো সঠিক ফুটবলার না থাকায় ভরসা রাখতে হচ্ছে মনবীরের উপরেই।
লালিয়ানজুয়ালা ছাংতে
কয়েক বছর আগেও ছাংতেকে নিয়ে এত মাতামাতি হত না। উঠতি, প্রতিভাবান ইত্যাদি বিশেষণের বাইরে তাঁকে নিয়ে চর্চা হত না। যত সময় যাচ্ছে তত ছাংতে নিজেকে ধারালো করে তুলছেন। বয়স কম। নিজেকে ঠিক ভাবে ধরে রাখতে পারলে এবং বছরের পর বছর পারফরম্যান্স উপহার দিয়ে যেতে পারলে সুনীলের উত্তরসূরি হয়ে উঠতেই পারেন। আগে মূলত উইঙ্গার হিসাবে খেলতেন ছাংতে। গোলের থেকে গোলের পাস বাড়াতে বেশি স্বচ্ছন্দ ছিলেন। কিন্তু গত বারের আইএসএলে ছাংতে গোলও করেছেন প্রচুর। বক্সের মধ্যে তাঁর ধূর্ততা, গতি নজর কেড়েছে আলাদা করে। শুধু তা-ই নয়, দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার একটা সহজাত ক্ষমতা রয়েছে। ফলে তাঁকে নিয়ে স্বপ্ন দেখাই যেতে পারে।
বিক্রম প্রতাপ সিংহ
ভারতের হয়ে সবে মাত্র তিনটি ম্যাচ খেলেছেন। গোল করতে পারেননি। তাঁকে সুনীলের উত্তরসূরি বেছে নেওয়া দেখে অনেকেই বিস্মিত হতে পারেন। তবে বাস্তবের কথা মাথায় রাখলে, ভবিষ্যতে বিনিয়োগ করা যেতে পারে এমন ফুটবলারের তালিকায় নিঃসন্দেহে বিক্রমের নাম আসবে। মাত্র ২২ বছর বয়স। ভারতের বিভিন্ন যুব দলে খেলে উঠে এসেছেন। প্রথমে ইন্ডিয়ান অ্যারোজ়ে ছিলেন। সেখান থেকে সরাসরি মুম্বই সিটি এফসি-তে। দেশের অন্যতম সেরা দলে খেলার সুবাদে প্রশিক্ষণ পেয়ে বিক্রম নিজেকে আরও ধারালো করে তুলেছেন। বিক্রমের গতি যেমন রয়েছে, যেমন বক্সের মধ্যে ডিফেন্ডারদের পায়ের ফাঁক খুঁজে গোল করার ক্ষমতাও রয়েছে। শারীরিক ভাবেও সমর্থ হওয়া তাঁর কাছে বাড়তি সুবিধা।