Mohun Bagan

মোহনবাগানের বার্ষিক সাধারণ সভায় উত্তেজনা, চেয়ার ছোড়াছুড়ি দুই গোষ্ঠীর সমর্থকদের

শনিবার বার্ষিক সাধারণ সভা ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠল মোহনবাগান তাঁবু। সচিব দেবাশিস দত্ত এবং প্রাক্তন সচিব সৃঞ্জয় বোসের গোষ্ঠীর মধ্যে চেয়ার ছোড়াছুড়ি, হাতাহাতির অভিযোগ উঠেছে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫ ১৮:৪৫
football

মোহনবাগান ক্লাবের তাঁবু। ছবি: সমাজমাধ্যম।

শনিবার বার্ষিক সাধারণ সভা ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠল মোহনবাগান তাঁবু। সচিব দেবাশিস দত্ত এবং প্রাক্তন সচিব সৃঞ্জয় বোসের গোষ্ঠীর মধ্যে চেয়ার ছোড়াছুড়ি, হাতাহাতির অভিযোগ উঠেছে। আসন্ন নির্বাচন ঘিরেই এই ঝামেলা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। গোটা ঘটনায় ক্ষিপ্ত ক্লাবের সদস্যেরা।

Advertisement

এ দিন ক্লাবের বর্তমান কার্যকরী সমিতির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) ছিল। দুপুর দেড়টা থেকেই হাজির হতে থাকেন সমর্থকেরা। দুপুর ৩টের সময় এজিএম শুরু হয়। সচিব দেবাশিস দত্ত প্রথমে বক্তব্য রাখেন। এর পর প্রাক্তন সচিব সৃঞ্জয় বসু বক্তব্য রাখতে গিয়ে নির্বাচনের দাবি তোলেন, যেটি হওয়ার কথা মার্চ মাসে। নির্ধারিত সময়ে নির্বাচনের দাবি করেন সৃঞ্জয়।

তখন দেবাশিস জানান, নির্বাচন পরে হবে। জুন বা জুলাই মাসে নির্বাচন হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। এর পরেই দুই গোষ্ঠীর সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতি লেগে যায়। চেয়ার ছোড়াছুড়ি হয়। পরিস্থিতি কিছু ক্ষণের জন্য নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। মধ্যস্থতা করতে এগিয়ে আসেন সহ-সভাপতি কুণাল ঘোষ। দেবাশিসের বিরোধী গোষ্ঠীর অভিযোগ, সচিব জোর করে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। ভোটার তালিকা তৈরি হয়নি বলে দাবি করছেন।

ঝামেলার মধ্যে কিছু কর্তা বাইরে চলে আসেন। তাঁরা জানান, মোহনবাগান তাঁদের কাছে মায়ের মতো। সেই ক্লাবে এ রকম ঝগড়া-অশান্তি মেনে নিতে পারছেন না বলেই চলে এসেছেন। কিছু ক্ষণের বিরতির পর আবার শুরু হয় বার্ষিক সাধারণ সভা। সভা শেষে বেরিয়ে এসে সৃঞ্জয় জানান, একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল বৈঠকে। সেটা মিটে গিয়েছে।

কুণাল বলেছেন, “এটা মোহনবাগান পরিবারের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। নির্বাচন সংক্রান্ত নিয়ম নিয়ে দু’টি ব্যাখ্যা দু’পক্ষ উপস্থাপন করেছে। ফলে একটা মতানৈক্য তৈরি হয়েছিল। আমি অনুরোধ করি সচিব কার্যকরী সমিতির বৈঠক ডাকুন। সেখানে বিশেষ আমন্ত্রিত করে বিরোধী গোষ্ঠীর কয়েকজনকে ডাকা হোক। তাঁরা মুখোমুখি এক টেবিলে আলোচনা করুন। তার পর আইন অনুযায়ী যা হওয়ার সেই সিদ্ধান্ত নেবেন মোহনবাগান বর্ষীয়ান সদস্য তথা প্রাক্তন বিচারপতি অসীম রায়। আমি খুশি যে দু’পক্ষই আমার অনুরোধ গ্রহণ করেছে এবং সচিব জানিয়েছেন, ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তিনি কার্যকরী সমিতির বৈঠক ডাকবেন।”

সভা শেষের পর বাইরে এসে সৃঞ্জয় বলেছেন, “নির্বাচন নিয়ে আমার কিছু কথা ছিল। নানা দিক থেকে নানা মন্তব্য আসছিল। সহ-সভাপতি কুণাল ঘোষ জানিয়েছেন, ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আবার কার্যকরী সমিতির বৈঠক ডাকা হবে। সেখানে নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হবে। আমরা চাই স্বচ্ছ নির্বাচন হোক। যে নির্বাচনী মডেল রয়েছে সেটা অনুসরণ করে। আমি চাই এই কমিটি যে ভাবে ২০২১ সালে দ্রুততার সঙ্গে নির্বাচন করেছিল, এ বারও যেন সেটাই করা হয়।”

তবে ঝামেলার বিষয়টিকে পাত্তা দিলেন না দেবাশিস। বলেছেন, “ধাক্কাধাক্কিতে কেউ হয়তো আহত হয়েছে। আমার জানা নেই। আমি কিছু দেখিনি। তবে এ রকম ক্লাবে উত্তেজনা থাকবেই। আমরা ফুটবলের সমর্থক। ৯০ মিনিট ধরে উত্তেজনা থাকে। আমরা জিততে এতটাই অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছি উত্তেজনা থাকবেই। কিছু সময়ের জন্য হয়তো একটা ঝামেলা হয়েছিল। এটা কোনও ঘটনাই নয়। ১৯৯৪ সাল থেকে মোহনবাগানে আছি। আগে এজিএম হতই না। এখন তো তবু ঠিক সময়ে নির্বাচন হয়। এজিএমে গণ্ডগোল আগে অনেক বেশি হয়েছে।”

তাঁর সংযোজন, “অনেক রকম আলোচনা হয়েছে। ফুটবল স্কুল খোলার দাবি এসেছে। নির্বাচন সঠিক সময় আইন মেনে হবে। যত দ্রুত সম্ভব তত দ্রুত হবে। আমরা ফেব্রুয়ারি মাসে আবার কমিটির বৈঠক ডাকব। আইনজীবীর পরামর্শ নেব। যারা নির্বাচনের কথা বলছে তাদেরও ডাকব। বিশেষজ্ঞের মতামত নেব।”

Advertisement
আরও পড়ুন