স্পেন দল। ছবি: রয়টার্স।
ইউরো কাপে সব বড় দলই অন্তত এক বার করে মাঠে নেমে পড়েছে। তবে প্রতিযোগিতার প্রথম ‘বড় ম্যাচ’ দেখা যেতে চলেছে বৃহস্পতিবার। গ্রুপ পর্বে মুখোমুখি হচ্ছে স্পেন এবং ইটালি। ইউরো কাপে দুই দলের একাধিক স্মরণীয় ম্যাচ রয়েছে। পুরনো শত্রুতা ঝালিয়ে নিতে বৃহস্পতিবার আবার নামছে দুই দল।
তবে ম্যাচের আগে দুই দলের অবস্থা দু’রকম। প্রথম ম্যাচে ক্রোয়েশিয়াকে অনায়াসে ৩-০ হারিয়েছে স্পেন। তারুণ্যে নির্ভরশীল স্পেন দলের নিখুঁত পাসিং এবং অবিরাম আক্রমণের কোনও জবাব খুঁজে পায়নি ক্রোয়েশিয়া। প্রথমার্ধেই তিনটি গোল দিয়েছিল স্পেন। অন্য দিকে, ইটালি কোনও মতে ২-১ গোলে আলবেনিয়াকে হারিয়েছে। তা-ও আবার ২৩ সেকেন্ডে গোল খেয়ে পিছিয়ে পড়ে। ধারে-ভারে বৃহস্পতিবারের ম্যাচে এগিয়ে থেকে নামবে স্পেনই।
এক সময় জ়াভি, আন্দ্রে ইনিয়েস্তা, জ়াবি আলোন্সো, সের্জিয়ো বুস্কেৎসদের আমলে ‘তিকিতাকা’ ফুটবলে মাতিয়ে দিয়েছিল স্পেন। লেমিনে ইয়ামাল, পেদ্রি, রদ্রি, নিকো উইলিয়ামসদের দিয়ে সেটাই খেলানোর চেষ্টা করছেন কোচ লুই দে লা ফুয়েন্তে। তবে এই স্পেন শুধু পাস করে না, আক্রমণের ঝড়ে বিপর্যস্ত করে ফেলে প্রতিপক্ষকে।
পুরনো স্পেনের তিকিতাকা খেলার সবচেয়ে বড় সাক্ষী ইটালিই। ২০১২ সালের ইউরো কাপ ফাইনালে জ়াভি, ইনিয়েস্তাদের ঝড়ে চার গোল খেয়েছিল আন্দ্রে পিরলো, লিয়োনার্দো বোনুচ্চিদের ইটালি। এ বার নিকোলো বারেল্লা, আলেসান্দ্রো বাস্তোনিরা সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি নিশ্চয়ই চান না।
২০০৮ সাল থেকে টানা পাঁচ বার ইউরো কাপে ইটালি এবং স্পেন একে অপরের বিরুদ্ধে খেলবে। শেষ পাঁচটি সাক্ষাতে দুই দলই দুটো করে ম্যাচ জিতেছে। গত বার ইউরোর সেমিফাইনালে টাইব্রেকারে ইটালি হারিয়েছিল স্পেনকে। সেই ম্যাচের প্রতিশোধও থাকবে স্পেনের মাথায়।
বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে স্পেনকে নিয়ে ইটালির কোচ লুসিয়ান স্পালেত্তি বলেন, “আমার কাছে এটা ‘ডার্বি’ নয়। ইউরো খেললে প্রতিটা ম্যাচই ফাইনাল। আলবেনিয়ার বিরুদ্ধে যে রকম খেলেছিলাম সে রকমই খেলব। ইউরোপের অন্যতম শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে নামতে চলেছি। যদি বল ওদের নিয়ন্ত্রণ করতে দিই তা হলে খুব খারাপ ফলাফল অপেক্ষা করছে।”
তিনি আরও বলেন, “গোলের সামনে কী ভাবে উন্নতি করতে হবে, সেটা নিয়ে ভাবছি না। গোলের সামনে কত বার বল নিয়ে যেতে পারছি সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। ওখানেই আসল কাজটা হয়ে যাচ্ছে। বাকিটা ঠিক করে নেওয়া যাবে।”
নিজেদের খেলা নিয়ে আত্মবিশ্বাসী স্পেনের কোচ ফুয়েন্তেও। তাঁর দাবি, ইটালির সামনে নতুন স্পেনকে দেখা যেতে পারে। ফুয়েন্তে বলেছেন, “আমাদের জাতীয় দলে অনেক মুখ রয়েছে। অন্য দেশগুলো ধরতেও পারবে না, পরের ম্যাচে আমরা কোন পরিকল্পনা নিয়ে নামব। এ কারণেই ছেলেদের নিয়ে আমরা খুশি। স্পেনের থেকে যে ফুটবল দেখে আমরা অভ্যস্ত, সেটাই উপহার দিতে চাই।”
এ দিকে, রাত ৯.৩০টার ম্যাচে ইংল্যান্ড খেলতে নামছে ডেনমার্কের বিরুদ্ধে। সার্বিয়ার বিরুদ্ধে কোনও মতে জেতা ইংল্যান্ড শক্তিশালী ড্যানিশদের বিরুদ্ধে কী করবে, তা দেখতে উৎসুক সকলেই। তবে ইংল্যান্ডের ফুটবলারদের নিয়ে বরাবরই সে দেশের সংবাদমাধ্যমের উৎসাহ তুঙ্গে থাকে। এ বারও তাঁরা ড্যানিশদের উড়িয়ে দেওয়ার স্বপ্ন দেখছেন।
গত বারের ইউরো কাপের সেমিফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল দুই দল। সে বার ড্যানিশদের হারাতে প্রচুর পরিশ্রম করতে হয়েছিল ইংল্যান্ডকে। অতিরিক্ত সময়ে হ্যারি কেনের গোল জেতায় ইংল্যান্ডকে। সেই হ্যারি বৃহস্পতিবারও থাকছেন। ডেনমার্কের বড় সুবিধা হল ক্রিশ্চিয়ান এরিকসেনকে পাওয়া, যিনি আগের প্রতিযোগিতায় হৃদ্যন্ত্রের সমস্যার কারণে প্রথম ম্যাচের পরেই ছিটকে গিয়েছিলেন।
ডেনমার্ক ম্যাচ নিয়ে দলের ফুটবলার বুকায়ো সাকা বলেছেন, “একটা জিনিস স্পষ্ট জানি, বৃহস্পতিবার একটা কঠিন লড়াইয়ের সামনে। গত বারের ইউরো কাপে খেলেছিলাম ওদের বিরুদ্ধে। সেটা অতিরিক্ত সময়ে গিয়েছিল। এ বারও কঠিন হবে লড়াই।”