আন্তোনিয়ো লোপেজ় হাবাস। —ফাইল চিত্র।
গত বছর ডিসেম্বর মাসে এফসি গোয়ার কাছেই ঘরের মাঠে ১-৪ গোলে হেরেছিল মোহনবাগান। তার পর থেকে টানা হারছিল দল। অবশেষে জুয়ান ফেরান্দোর কাছে থেকে আন্তোনিয়ো লোপেজ় হাবাস দায়িত্ব নেওয়ার পরে জয়ে ফিরেছে বাগান। বুধবার সামনে সেই গোয়া। এ বার তাদের মাঠেই খেলা। সেই ম্যাচে নামার আগে ঘরের মাঠে হারের আতঙ্ক কাটিয়ে উঠতে চান হাবাস। কিন্তু তার পরেও চিন্তা কমছে না তাঁর।
গোয়া ম্যাচের আগে আইএসএলের ওয়েবসাইটে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হাবাস বলেন, “ওই ম্যাচে যা হয়েছিল, তা এ বারেও হবে বলে মনে হয় না আমার। এটা নতুন ম্যাচ আর আমাদের দলের অবস্থাও এখন অন্য রকম। অনেকেই দলে ফিরেছে। জাতীয় দলের খেলোয়াড়রাও ফিরে এসেছে। আমরা আমাদের লক্ষ্যে অবিচল রয়েছি। ১০০ শতাংশ দিয়ে ম্যাচটা জিতব, এটাই আমাদের লক্ষ্য। দলের অবস্থা বেশ ভাল। দলের ছেলেদের ওপর আমার যথেষ্ট ভরসা আছে।’’
তবে পর ক্ষণেই চিন্তিত দেখিয়েছে হাবাসকে। তার একমাত্র কারণ, বাগান ফুটবলারদের গোল নষ্টের বহর। এ বারের আইএসএলে গোল করার ১৩৬টি সুযোগ তৈরি করেছে বাগান। কিন্তু গোল করতে পেরেছে মাত্র ২৩টি। অর্থাৎ, সুযোগ থেকে গোল করার শতকরা হার ১৭ শতাংশ, যা খুবই কম। হায়দরাবাদের বিরুদ্ধেও ৩০টি শট মেরে মাত্র দু’টি গোল করেছে সবুজ-মেরুন। এই পরিসংখ্যান ভাল করতে হবে বলেই জানিয়েছেন হাবাস।
বাগান কোচ বলেন, “এই ব্যাপারটা খেলার তীব্রতা ও খেলোয়াড়দের মানসিকতার ওপর নির্ভর করে। খেলোয়াড়দের সব সময় ভাবতে হবে ম্যাচে একটাই সুযোগ পাওয়া যাবে আর সেই সুযোগই কাজে লাগাতে হবে। গোল দেওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের ছেলেদের আরও মনযোগী হতে হবে। অনেক সুযোগ পেলে সমস্যা নেই। কিন্তু দু-একটা সুযোগ পেলে সেক্ষেত্রে নিখুঁত হওয়া জরুরি।”
প্রতিযোগিতার বাকি সব ক’টি ম্যাত জিততে চান হাবাস। আইএসএলের লিগ-শিল্ড জিততে পারলে পরের বছর এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ২-তে সরাসরি খেলার সুযোগ পাবে মোহনবাগান। সেই প্রতিযোগিতার প্লে-অফ খেলার সুযোগ আগেই পেয়ে গিয়েছে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইস্টবেঙ্গল। তাই এ দিন হাবাস স্পষ্ট ভাবে বলেছেন, “আমার লক্ষ্য প্রতিটি ম্যাচে জেতা। তা হলেই আমরা প্রথম স্থানে খেলতে পারব। দ্বিতীয় বা তৃতীয় স্থান নিয়ে আমার কোনও ভাবনা নেই। আমি খেলোয়াড়দের বলে দিয়েছি যে প্রথম স্থানই আমার লক্ষ্য। ফুটবলে এক একটা দিন আলাদা হতেই পারে। কখনও ড্র করব, কখনও হারব। কিন্তু প্রতিটা ম্যাচেই আমরা খেলতে নামব তিন পয়েন্টের কথা ভেবে। তার জন্য সবাইকে সাহায্য করতে হবে। দলগত সংহতিই আসল। নির্দিষ্ট কৌশলও থাকতে হবে।”
মোহনবাগানের পক্ষে ভাল খবর হল, পরের ম্যাচে তিন ফুটবলার ফিরছেন। গোয়া ম্যাচে লিস্টন কোলাসো, দীপক টাংরি, আর্মান্দো সাদিকুরা প্রথম একাদশে ফিরছেন। আনোয়ার আলিও প্রায় ফিট। এ দিন আনোয়ারকে নিয়ে হাবাস বলেছেন, “আনোয়ার ৮০-৮৫ শতাংশ ফিট। ভাল জায়গায় রয়েছে। খেলার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে মঙ্গলবার ঠিক করব খেলাব কি না।”
হায়দরাবাদ ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে কিছুটা সময় খেলেছিলেন হুগো বুমোসের জায়গায় দলে আসা জনি কাউকো। সোমবারের অনুশীলনে তাঁর সঙ্গে আলাদা করে কথা বলেন হাবাস। কাউকোকে কি গোয়া ম্যাচে শুরু থেকে খেলাবেন? হাবাসের উত্তর, “আস্তে আস্তে ওকে বেশি সময় খেলাব। একবারেই পুরো ম্যাচ খেলানো যাবে না। প্রতি দিন যতটা সম্ভব বেশি করে খেলানোর চেষ্টা করব।”
বুধবার গোয়ার মাঠে গোয়াকে হারাতে পারলে গোয়ার শীর্ষে যাওয়া আটকানো যাবে। সেই সঙ্গে লিগ তালিকায় চতুর্থ স্থান থেকে তৃতীয় স্থানে উঠে আসবে মোহনবাগান। সেই জোড়া লক্ষ্য নিয়ে গোয়ার বিরুদ্ধে ৩ পয়েন্ট ছাড়া আর কিছু ভাবছেন না হাবাস।