IFA

প্রথম ডিভিশনে ক্লাবগুলির ওঠা-নামা নিয়ে সিদ্ধান্ত হল না, ক্ষুব্ধ মদন

প্রথম ডিভিশন থেকে ক’টি দল প্রিমিয়ার ডিভিশনে উঠবে এবং ক’টি দল দ্বিতীয় ডিভিশনে নামবে, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত হল না। ক্লাবগুলির প্রস্তাব গভর্নিং বডির কাছে পাঠাবেন আইএফএ সচিব।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০২৩ ২১:২৪
Picture of Madan MItra with IFA officials

মঙ্গলবারের বৈঠকে বাঁদিক থেকে মদন মিত্র, আইএফএ সচিব অনির্বাণ দত্ত এবং আইএফএ সভপতি অজিত বন্দ্যোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।

কলকাতা ফুটবল লিগের প্রথম ডিভিশনের ক্লাবগুলির প্রতিনিধিদের সঙ্গে প্রায় সোয়া ২ ঘণ্টার বৈঠকেও সমাধান সূত্র পেল না ইন্ডিয়ান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন বা আইএফএ। প্রথম ডিভিশন থেকে কতগুলি দল প্রিমিয়ার ডিভিশনে উঠবে আর কতগুলি দল দ্বিতীয় ডিভিশনে নেমে যাবে তা নিয়ে, সিদ্ধান্ত সংস্থার গভর্নিং বডির কোর্টেই ঠেলে দিলেন আইএফএ সচিব অনির্বাণ দত্ত।

সচিব ছাড়াও মঙ্গলবার আইএফএ দফতরে প্রথম ডিভিশনের ক্লাবগুলির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে ছিলেন বাংলার ফুটবল নিয়ামক সংস্থার সভাপতি অজিত বন্দ্যোপাধ্যায়। বেলঘরিয়া অ্যাথলেটিক ক্লাবের তরফে রাজ্যের প্রাক্তন ক্রীড়ামন্ত্রী মদন মিত্র, সুরুচি সঙ্ঘের তরফে তৃণমূল নেতা স্বরূপ বিশ্বাস, কালীঘাট ফুটবল লাভার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় উপস্থিত ছিলেন। রাজ্যের দমকল মন্ত্রী সুজিত বসুর শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবের প্রতিনিধিও এসেছিলেন বৈঠকে। ক্লাবগুলি প্রস্তাব দেয়, প্রথম ডিভিশন থেকে চারটি দল উঠুক প্রিমিয়ার ডিভিশনে। দু’টি দল নামুক দ্বিতীয় ডিভিশনে। ক্লাবগুলির এই প্রস্তাব মানেননি আইএফএ কর্তারা। তাঁরা পাল্টা প্রস্তাব দেন চারটি দল উঠলে চারটি দল নামুক। যা পছন্দ হয়নি ক্লাবের প্রতিনিধিদের। দু’তরফে এ নিয়ে বেশ কিছুক্ষণ আলোচনা চলে। যুক্তি-পাল্টা যুক্তি দেওয়া হয় উভয় পক্ষ থেকেই। যদিও শেষ পর্যন্ত মঙ্গলবারের বৈঠকে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়নি। আইএফএ সচিব বলেছেন, ‘‘ক’টি ক্লাব উঠবে বা নামবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার এক্তিয়ার গভর্নিং বডির। প্রথম ডিভিশনের ক্ষেত্রে অন্যরকম পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় গভর্নিং বডি সচিব হিসাবে আমাকে দায়িত্ব দিয়েছিল। ক্লাবগুলির প্রস্তাব গভর্নিং বডির কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। গভর্নিং বডির বৈঠকেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।’’ আইএফএ সভাপতি অজিত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘কয়টি ক্লাব উপরের ডিভিশনে উঠবে বা নীচের ডিভিশনে নামবে, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। দলগুলিকে দু’টি গ্রুপে ভাগ করে খেলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেরা ছ’টি দলকে নিয়ে হবে সুপার সিক্স পর্ব। রাজ্য সরকারের বেঙ্গল ফুটবল অ্যাকাডেমি প্রথম ছয় দলের মধ্যে থাকলে সাতটি দলকে নিয়ে সুপার সেভেন পর্ব হবে। কারণ বেঙ্গল ফুটবল অ্যাকাডেমি যেমন নীচের ডিভিশনে নামবে না, তেমন উপরের ডিভিশনেও উঠবে না।’’

Advertisement

সোয়া ২ ঘণ্টার বৈঠকেও ওঠা-নামা নিয়ে সিদ্ধান্ত না হওয়ায় ক্ষুব্ধ প্রথম ডিভিশনের ক্লাব কর্তারা। মদন বলেছেন, ‘‘আমরা আমাদের প্রস্তাব দিয়েছি। আইএফএ কর্তারা সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন। আশা করব আমাদের প্রস্তাব মেনে নেওয়া হবে।’’ স্বপনের বক্তব্য, ‘‘আইএফএ আমাদের প্রস্তাব না মানলে আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।’’ স্বরূপের বক্তব্য, ‘‘আইএফএ কর্তারা পিরামিড কাঠামোর কথা বলছেন। প্রতিটি ডিভিশনের ওঠা নামা অঙ্ক করে আমরা দেখিয়ে দিয়েছি, আমাদের প্রস্তাবে তার কোনও ক্ষতি হচ্ছে না। চাইলে সচিব প্রায় আড়াই ঘণ্টা বৈঠকে সিদ্ধান্ত নিতে পারতেন।’’ উল্লেখ্য, স্বরূপ আইএফএ-র সহ-সভাপতিও।

সিদ্ধান্ত না হলেও আইএফএ-র সঙ্গে এখনই কোনও লড়াইয়ে যেতে চাইছে না প্রথম ডিভিশনের ক্লাবগুলি। যদিও চারটি দলের অবনমন মানতে নারাজ তাঁরা। তাঁদের দাবি, তাতে ফুটবলাররা উৎসাহ হারাবে। ক্ষতি হবে বাংলার ফুটবলের। প্রথম ডিভিশনে বিদেশি ফুটবলার খেলানো যাবে না বলে আইএফএ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভূমিপুত্রদের নিয়ে দল তৈরির নিয়মকে স্বাগত জানিয়েছেন ক্লাবের প্রতিনিধিরা। যদিও অসন্তোষ প্রকাশ করে মদন বলেছেন, ‘‘এই নিয়ম আগে জানালে আমাদের সুবিধা হত। দল তৈরি করে ফেলার পর বললে কী করে হবে? এ বছর ছাড় দেওয়া হোক। আসলে বড় দলকে সুবিধা করে দিতেই এ রকম নিয়ম করা হয়েছে। একই ব্যক্তি একই বিষয়ে কী ভাবে দু’রকম নিয়ম করতে পারেন?’’ আইএফএ কোন দলকে সুবিধা করে দিতে চাইছে, তা নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি মদন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তাঁর জবাব, ‘‘আপনারা খোঁজ নিয়ে দেখুন।’’

আরও পড়ুন
Advertisement