FIFA World Cup 2022

সোনালি প্রজন্মের অবসান, ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে ড্র করে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় বেলজিয়ামের

গোটা ম্যাচে আধিপত্য নিয়ে খেলে এবং একের পর এক আক্রমণ করেও ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে গোলশূন্য ড্র করল বেলজিয়াম। রবার্তো মার্তিনেসের দল ছিটকে গেল বিশ্বকাপ থেকেই।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২২ ২২:২৬
মদ্রিচদের বিরুদ্ধে ড্র করে ছিটকে গেলেন লুকাকুরা।

মদ্রিচদের বিরুদ্ধে ড্র করে ছিটকে গেলেন লুকাকুরা। ছবি: রয়টার্স

গোটা ম্যাচে আধিপত্য নিয়ে খেলে এবং একের পর এক আক্রমণ করেও ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে গোলশূন্য ড্র করল বেলজিয়াম। রবার্তো মার্তিনেসের দল ছিটকে গেল বিশ্বকাপ থেকেই। এর সঙ্গেই শেষ হল বেলজিয়ামের সোনালি প্রজন্মের। কারণ এই দলের অনেক ফুটবলারকেই আর সামনের বিশ্বকাপে দেখা যাবে না। এই ম্যাচে বেলজিয়াম যা মিস্ করেছে, তা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা অসম্ভব। রোমেলু লুকাকু একাই দ্বিতীয়ার্ধে হ্যাটট্রিক করে ফেলতে পারতেন। কিন্তু কোনও বারই বল ক্রোয়েশিয়ার জালে জড়ায়নি।

কিছু দিন আগেই বেলজিয়ামের তারকা ফুটবলার কেভিন দ্য ব্রুইন বলেছিলেন, বিশ্বকাপ জেতার ক্ষমতা নেই তাঁদের। কারণ দলের ফুটবলাররা ‘বুড়ো’ হয়ে গিয়েছেন। সেই কথা যে আক্ষরিক অর্থেই সত্য়ি, তা প্রমাণিত হল বৃহস্পতিবার। গত বারের তৃতীয় স্থানাধিকারী বেলজিয়াম কাপ জেতা তো দূর, ছিটকে গেল এ বারের গ্রুপ পর্ব থেকেই। ইপিএল-সহ ইউরোপের বিভিন্ন লিগে দাপটের সঙ্গে খেলেন বেলজিয়ামের প্রথম একাদশের প্রায় সব ফুটবলার। তা সত্ত্বেও দেশের হয়ে তাঁরা চূড়ান্ত ব্যর্থ। গোটা দল একত্রিত হয়ে খেলতেই পারেনি বিশ্বকাপে। স্বপ্ন দেখিয়েও বার বার ব্যর্থ হয়েছে তারা।

Advertisement

ম্যাচের শুরু থেকেই দুই দল আক্রমণের ঝড় বইয়ে দেয়। তবে বেশি আধিপত্য নিয়ে খেলছিল বেলজিয়ামই। এই ম্যাচ তাঁদের কাছে বিশ্বকাপে বেঁচে থাকার ম্যাচ ছিল। খেলছিলও সে ভাবেই। রক্ষণে পাহাড় হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন জ্যান ভার্টোঙ্গেন এবং টবি অল্ডারওয়েরেল্ড। আক্রমণে তেমনই ঝড় তুলছিলেন কেভিন দ্য ব্রুইন এবং ইয়ানিক কারাস্কোরা। তবে খেলার বিপরীতে ১৫ মিনিটেই পেনাল্টি পেয়ে যায় ক্রোয়েশিয়া। বক্সের মধ্যে পড়ে যান কারাস্কো। তাঁকে আঘাত করেন ক্রামারিচ।

সেই পেনাল্টি নিয়ে দীর্ঘ ক্ষণ চলে নাটক। পেনাল্টি স্পটে বল বসিয়ে অপেক্ষা করছিলেন লুকা মদ্রিচ। এমন সময় রেফারি ভার-এর সঙ্গে আলোচনা করার সিদ্ধান্ত নেন। দেখা যায় আক্রমণের সময়ই অফসাইডে ছিলেন ক্রোয়েশিয়ার দেজান লোভরেন। ফলে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত বাতিল করে বেলজিয়ামকে ফ্রিকিক দিয়ে দেন রেফারি।

৩৩ মিনিটের মাথায় ব্রোজোভিচের শট দারুণ ভাবে বাঁচিয়ে দেন বেলজিয়ামের ডেনডকার। বিরতির কিছু ক্ষণ আগে অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয় ক্রামারিচের শট। তার পরেই ক্রোয়েশিয়ার জুরানোভিচের একটি হেড গোললাইন থেকে ক্লিয়ার হয়ে যায়। বিরতিতে সাজঘরে ফিরেই বেলজিয়াম ফুটবলাররা নিশ্চয়ই জানতে পেরেছিলেন কানাডার বিরুদ্ধে ১-১ ড্র চলছে মরক্কোর খেলা।

৫১ মিনিটের মাথায় দ্য ব্রুইনের শট গোলের বাইরে দিয়ে বেরিয়ে যায়। তিন মিনিট পরে ব্রোজোভিচের শট বাঁচিয়ে দেন বেলজিয়াম গোলকিপার থিবো কুর্তোয়া। পরের মিনিটেই তিনি মদ্রিচের শট বাঁচান। গোলের লক্ষ্যে লুকাকুকে নামিয়েছিলেন মার্তিনেস। ৬০ মিনিটে সেই লুকাকুর শট পোস্টে লাগে, যা অনায়াসে গোল করা উচিত ছিল ইন্টার মিলান তারকার। দু’মিনিট পরে আবার সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করেন তিনি। দ্য ব্রুইনের ক্রস থেকে ফাঁকায় দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় বল পেলেও বাইরে হেড করেন।

এর পর বেশ কিছু ক্ষণ দুই দলের উল্লেখযোগ্য আক্রমণ করেনি। তবে দুই দলই গোলের সন্ধানে আপ্রাণ চেষ্টা করছিল। এক বার ক্রোয়েশিয়া আক্রমণ করছিল তো পর ক্ষণেই বেলজিয়ামের আক্রমণ ভেসে আসছিল। নির্ধারিত সময় শেষের তিন মিনিট আগে আবার সুযোগ নষ্ট করেন লুকাকু। মিউনিয়েরের ভাসানো বলে সরাসরি হেড করার বদলে বুকে রিসিভ করতে যান। সঙ্গে সঙ্গে বল ধরে নেন ক্রোয়েশিয়ার গোলকিপার। ওখানেই আশা শেষ হয়ে যায় বেলজিয়ামের। গ্রুপের অন্য ম্যাচে মরক্কো ২-১ ব্যবধানে কানাডাকে হারানোয় তারাই গ্রুপ শীর্ষে থেকে পরের পর্বে গেল।

আরও পড়ুন
Advertisement