ম্যাক অ্যালিস্টারের গোলের পরে তাঁর দিকে ছুটে যাচ্ছেন লিয়োনেল মেসি। ছবি: রয়টার্স
আর্জেন্টিনার জার্সিতে তাঁর প্রথম গোল। তাও আবার ফুটবল বিশ্বকাপে। আর সেই গোলেই খুলল প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে যাওয়ার রাস্তা। শুধু গোল করা নয়, গোটা ম্যাচ জুড়ে অসাধারণ ফুটবল খেলেছেন অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার। তার পুরস্কারও পেয়েছেন। নিজের ম্যাচের সেরার পুরস্কার তাঁর হাতে তুলে দিয়েছেন লিয়োনেল মেসি।
ম্যাচ শেষে সেরার পুরস্কার দেওয়া হয় মেসিকে। কিন্তু তিনি সেই পুরস্কার নিয়ে হাতে তুলে দেন ম্যাক অ্যালিস্টারের। প্রথম বিশ্বকাপ খেলতে নেমে ম্যাক অ্যালিস্টার যা খেলেছেন তার পুরস্কার মেসির কাছে থেকে পেয়েছেন তিনি।
ম্যাক অ্যালিস্টারের বাবা কার্লোসও আর্জেন্টিনার হয়ে ফুটবল খেলেছেন। দিয়েগো মারাদোনার সতীর্থ ছিলেন তিনি। আর ছেলে সতীর্থ মারাদোনার। তবে আর্জেন্টিনা দলে শুরুটা ভাল হয়নি ম্যাক অ্যালিস্টারের। তাঁর আইরিশ উচ্চারণ ও চুলের রঙের জন্য দলে তাঁকে সবাই ‘আদা’ নামে ডাকতেন। সেটা ভাল লাগত না তাঁর। উদ্ধারে এগিয়ে আসেন মেসি। তিনি দলের সবাইকে নিষেধ করেন ম্যাক অ্যালিস্টারকে সেই নামে না ডাকতে। সে দিন মেসি তাঁকে উদ্ধার করেছিলেন। পোল্যান্ডের বিরুদ্ধে ধার শোধ করলেন তিনি। মেসির পেনাল্টি নষ্টের পরে তাঁর গোলেই এগোল আর্জেন্টিনা।
মেসির সঙ্গে তাঁর প্রথম সাক্ষাৎ এখনও মনে আছে ম্যাক অ্যালিস্টারের। নিজের আদর্শকে দেখে কথা বলতে পারেননি তিনি। শুধু তাকিয়ে দেখেছিলেন। ম্যাক অ্যালিস্টারের কথায়, ‘‘আমার চোখ-মুখ লাল হয়ে গিয়েছিল। আমি গিয়ে হ্যালো পর্যন্ত বলতে পারিনি। বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবলারকে দেখে আমি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। সেই সাক্ষাৎ আমার সারা জীবন মনে থাকবে। আমার বাবা মারাদোনার সঙ্গে খেলেছেন। আমি মেসির সঙ্গে খেলছি। এটা সত্যিই ঈশ্বরের আশীর্বাদ।’’
মেসি পেনাল্টি ফস্কালেও পরের গোল দু’টির কৃতিত্ব তাঁকেই দিয়েছেন ম্যাক অ্যালিস্টার। ফুটবলার মেসি নন, অধিনায়ক মেসির প্রশংসা করেছেন তিনি। ম্যাক অ্যালিস্টার বলেছেন, ‘‘আমরা প্রথম থেকেই ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে খেলতে নেমেছিলাম। আমাদের লক্ষ্য ছিল, জিততেই হবে। তাই মেসির পেনাল্টি নষ্টের পরেও দলের কেউ হতাশ হয়নি। মেসি সবাইকে এসে বলে, ‘ভেঙে পড়ার কিছু হয়নি। এখনও অনেক সময় আছে। আমি পারিনি, তোমরা গোল করবে।’ মেসির এই কথায় দলের সবাই আরও আক্রমণাত্মক খেলা শুরু করেছিল। তারই ফল পেয়েছি।’’
পোল্যান্ডের বিরুদ্ধে তাঁরা দলগত খেলার পুরস্কার পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন ম্যাক অ্যালিস্টার। বলেছেন, ‘‘আমরা দলগত ফুটবল খেলেছি। এই দলটার সবাই সবার জন্য খেলে। সেটাই আমাদের বাকিদের থেকে আলাদা করেছে। এ রকম একটা দলের সদস্য হতে পেরে গর্বিত।’’