আল রিহলা বলে দিতে হয় চার্জ। ফাইল ছবি
এ বারের বিশ্বকাপ খেলা হচ্ছে ‘আল রিহলা’ বলে। আমেরিকার এক সংস্থা এ বারের বল তৈরি করেছে। সেই বলেরই সাম্প্রতিক একটি ছবি অবাক করেছে গোটা বিশ্বের ফুটবলপ্রেমীদের। দেখা গিয়েছে, বলের একটা অংশ খুলে ফেলে চার্জ দেওয়া হচ্ছে। ঠিক মোবাইল, ল্যাপটপের মতোই। আর একটি ছবিতে দেখা গিয়েছে, পাশাপাশি চারটি বল রাখা। প্রতিটিতেই চার্জ দেওয়া হচ্ছে।
কেন এ বারের বলে চার্জ দিতে হচ্ছে? রহস্যটি ঠিক কী?
খোলসা করেছেন বলের নির্মাতারাই। আসলে এ বারের বল বাকি সবগুলির থেকে আলাদা। বলের ভেতরে সেন্সর বসানো রয়েছে। ম্যাচের সময় সেগুলি প্রতি মুহূর্তে তথ্য পাঠাচ্ছে সার্ভারে। সেকেন্ডে ৫০০ বার তথ্য পাঠানো হচ্ছে। প্রতি বার বলের সঙ্গে কোনও কিছু স্পর্শ হলে নির্ভুল তথ্য চলে যাচ্ছে সার্ভারে। সেই সেন্সরের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে একটি ব্যাটারি, যার ওজন ১৪ গ্রাম। সেই ব্যাটারিকেই ম্যাচের আগে চার্জ দিতে হচ্ছে। এক বার চার্জ দিলে ছ’ঘণ্টা ব্যাটারির আয়ু থাকে। নির্ভুল তথ্য পেতে প্রতি ম্যাচের আগে বল চার্জ দেওয়া জরুরি।
World Cup balls charging. They contain sensors that collect spatial positioning data, ball-tracking and impact detection, in real time. pic.twitter.com/WcuqsUnI4s
— Weird Confessions Uganda (@UG_confesses) November 29, 2022
আল রিহলা বলের গুরুত্ব বোঝা গিয়েছে পর্তুগাল বনাম উরুগুয়ে ম্যাচে। ওই ম্যাচে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর একটি গোল নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। বলের নির্মাতারা সেন্সর থেকে পাওয়া তথ্যতে জানিয়ে দিয়েছেন, রোনাল্ডোর সঙ্গে বলের কোনও স্পর্শই হয়নি। ফলে সেই গোল দেওয়া হয় ব্রুনো ফের্নান্দেসকে।
বল প্রস্তুতকারী সংস্থার তরফে বলা হয়েছে, “আমাদের যে প্রযুক্তি রয়েছে তা বলছে, রোনাল্ডোর কোনও স্পর্শ ওই সময় বলে লাগেনি। বল গোলের দিকে যাওয়ার সময় যে স্পন্দন আমরা দেখেছি, তাতে এটা স্পষ্ট যে কোনও রকম ছোঁয়া লাগেনি। এ বারের বিশ্বকাপে আল রিহলা নামে যে বল ব্যবহার করা হচ্ছে, সেটার মধ্যে সেন্সর লাগানো আছে। সেটার সাহায্যেই আমরা বলতে পারি যে, বল রোনাল্ডোর মাথায় লাগেনি।”
গ্রুপ পর্বে উরুগুয়ে বনাম পর্তুগাল ম্যাচে প্রথম গোল হয় ৫৪ মিনিটে। প্রথমার্ধে পর্তুগাল বলের দখল বেশি রাখলেও গোল করতে পারেনি। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর দিকে ফের্নান্দেসের ক্রসে মাথা ছোঁয়ানোর জন্য লাফান রোনাল্ডো। বল জালে জড়িয়ে যেতেই উৎসব করেন তিনি। মনে হয় গোলটা তিনিই করেছেন। কিন্তু রিপ্লেতে দেখা যায় বলটি রোনাল্ডোর মাথায় লাগেনি। ফের্নান্দেসের মারা বলটাই জালে জড়িয়েছে। গোলটি তাঁর প্রাপ্য। সেটাই দেওয়া হয়। কিন্তু ম্যাচ শেষের পরেও রোনাল্ডোকে দেখা যায় ওই গোলটি নিজের বলে দাবি করতে। তিনি জানান, বলটি তাঁর মাথা ছুঁয়ে গোলে ঢুকেছে। কিন্তু তা মানা হয়নি।