ভরসা: লাল-হলুদের তুরুপের তাস ক্লেটন। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।
সুপার কাপের ডার্বিতে তিনি জোড়া গোল করেছিলেন। আইএসএলে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে প্রথম পর্বের দ্বৈরথেও গোল করেছিলেন ক্লেটন সিলভা। যুবভারতীতে রবিবারের ফিরতি ডার্বিতেও ইস্টবেঙ্গলের তুরুপের তাস এই ব্রাজিলীয় স্ট্রাইকার। এফসি গোয়ার কাছে হেরে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত লাল-হলুদ সমর্থকরা তাঁকে ঘিরেই ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছেন। ক্লেটন কি পারবেন আরও একবার মশাল জ্বালাতে?
শুক্রবার সকাল ন’টা থেকে যুবভারতীতে অনুশীলন শুরু হওয়ার কথা ছিল ইস্টবেঙ্গলের। কিন্তু সোয়া দশটা নাগাদ ফুটবলারদের নিয়ে মাঠে নামলেন কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত। ড্রেসিংরুমে তিনি ব্যস্ত ছিলেন গোয়া ম্যাচে বিপর্যয়ের ময়নাতদন্তে। ফুটবলারদের বুঝিয়ে দিয়েছেন কার কোথায় ভুল হচ্ছে। মাঠে নেমেও কার্লেসকে দেখা গেল ক্লেটনের সঙ্গে আলাদা করে কথা বলছেন।
গোয়ার ফুটবলাররা ব্রাজিলীয় স্ট্রাইকারকে কখনওই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে দেননি। মোহনবাগানের কোচ আন্তোনিয়ো লোপেস হাবাসও যদি আপনার জন্য চক্রব্যূহ রচনা করেন? প্রশ্ন শুনে একটুও বিচলিত হলেন না ক্লেটন। বলে দিলেন, ‘‘আমাকে আটকালেও বিকল্প পথ রয়েছে।’’ অনুশীলনে বারবারই ক্লেটনকে দেখা গিয়েছে সতীর্থদের ভুলভ্রান্তি শুধরে দিচ্ছেন। উজ্জীবিত করেছেন নন্দ কুমার, মহেশ সিংহ-দের। ডার্বির জন্য নিজেকে কী ভাবে উদ্বুদ্ধ করছেন? ব্রাজিলীয় স্ট্রাইকার বললেন, ‘‘ডার্বি নিয়ে বেশি ভাবনা-চিন্তা করলেই মনের উপরে চাপ বাড়ে। তাই আমি নিজেকে শান্ত রাখার চেষ্টা করি।’’
মরসুমের শুরুতে ডুরান্ড কাপে রানার্স ইস্টবেঙ্গল। চ্যাম্পিয়ন সুপার কাপে। আইএসএলে প্রথম পর্বের ডার্বিতে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে অসাধারণ খেলেছিল মশালবাহিনী। যদিও এগিয়ে গিয়েও জিততে পারেননি ক্লেটনরা। ২-২ ড্র হয়েছিল ম্যাচ। তার পরেই ছন্দপতন। শেষ সাতটি ম্যাচের মধ্যে পাঁচটিতে হেরে ইস্টবেঙ্গলের প্লে-অফে যোগ্যতা অর্জনের স্বপ্ন ভেঙে যাওয়ার মুখে। বৃহস্পতিবার পঞ্জাব এফসি-র কাছে নর্থ ইস্ট ইউনাইটেড এফসি হারায় অবশ্য কিছুটা সুবিধে হয়েছে ইস্টবেঙ্গলের। যদিও ক্লেটন খুব একটা উচ্ছ্বসিত নন। বলে দিলেন, ‘‘অন্যরা হারলেও আমরা তো জিততে পারছি না।’’ এই কারণেই ক্লেটন গোয়া ম্যাচের ব্যর্থতা ভুলতে চান না তিনি। বললেন, ‘‘আগের ম্যাচে গোয়া আমাদের মাঝমাঠকে অচল করে দিয়েছিল। কিন্তু আমরা কেউ-ই এই ব্যর্থতাকে ভুলতে চাই না। বরং শিক্ষা নিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে চাই।’’ কী শিক্ষা নিলেন? ক্লেটনের ব্যাখ্যা, ‘‘আমাদের মাঝখান দিয়ে আক্রমণ করতে হবে। দুই প্রান্ত দিয়ে উঠে ভিতরে ঢুকে আসা অত্যন্ত জরুরি।’’
ইস্টবেঙ্গল ছেড়ে বোরখা এরেরা-র গোয়ায় যোগ দেওয়া। তার পরে সউল ক্রেসপোর চোট। টানা ব্যর্থতার প্রধান কারণ যে মাঝমাঠের ছন্দ নষ্ট হয়ে যাওয়া, মেনে নিচ্ছেন ক্লেটনও। ক্রেসপো এখন সুস্থ। অঘটন না ঘটলে ডার্বিতে হয়তো শুরু থেকেই খেলবেন স্পেনীয় তারকা। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে ক্লেটন বলে চললেন, ‘‘সউল ফিরলে খুবই ভাল হবে।’’ ক্লেটনের সঙ্গে একমত নন্দও। বললেন, ‘‘সউলকে আমাদের ভীষণ ভাবেই প্রয়োজন।’’
ক্লেটনের পাশাপাশি ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা রবিবার তাকিয়ে থাকবেন তাঁর দিকেও। ডার্বিতে ইতিমধ্যেই দু’টি গোল করা নন্দ বলে দিলেন, ‘‘রবিবার জিততে চাই। চেষ্টা করব ডার্বিতে ফের গোল করার।’’