বড় ম্যাচে বিনা পয়সার বাড়তি টিকিট দিতে রাজি নন ইমামি কর্তৃপক্ষ। গ্রাফিক: সৌভিক দেবনাথ
মরসুমের শেষ বড় ম্যাচ। শনিবার আইএসএলের দ্বিতীয় লেগের খেলায় মুখোমুখি হবে ইস্টবেঙ্গল এবং এটিকে মোহনবাগান। এখন কলকাতার ফুটবলের মান যাই হোক না কেন, ডার্বি মানেই ফুটবলপ্রেমীদের মধ্যে উত্তেজনা। তবে এ বারের উত্তেজনা বেশি মাঠের বাইরে। কারণ, টিকিট বিতর্ক।
প্রতি বারের মতো এ বারও রয়েছে বিনা পয়সার টিকিটের আবদার। আর ম্যাচের আয়োজক ইস্টবেঙ্গলের বিনিয়োগকারী সংস্থা ইমামি জানিয়ে দিয়েছে, তাদের পক্ষে এই আবদার পুরোটা মানা সম্ভব নয়। গত তিন দিনে ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান তো বটেই, আইএফএ-ও ইমামির দেওয়া টিকিট ফিরিয়ে দিয়েছে। দু’টি ক্লাব শুধু তাদের সদস্যদের জন্য টিকিট তুলেছে।
এ রকম অভিযোগ শোনা যায়, বিনা মূল্যের কিছু টিকিট কর্তারা নিজেরা ব্যবহার করেন। কিছু বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-পরিজন বা পরিচিতদের দিয়ে থাকেন তাঁরা। ক্ষমতার শ্লাঘা অনুভব করেন কেউ কেউ। বছরের পর বছর বিনা পয়সায় বড় ম্যাচের স্বাদ নিতে নিতে অনেকেই মনে করেন, এই টিকিট তাঁদের অধিকার। কলকাতার ফুটবলে এটাই দস্তুর। বিনা পয়সার টিকিট এক প্রথাগত দাবি।
সেই দাবি, আবদার বা অধিকার সবটা মানতে পারছে না ইমামি। তাদের পক্ষে যতটা সম্ভব টিকিট দেওয়া হয়েছে। কিন্তু দুই বড় ক্লাব এবং আইএফএ কর্তাদের বিনা মূল্যের বাড়তি টিকিটের অনুরোধ ফিরিয়ে দিয়েছে তারা।
ইমামি ইস্টবেঙ্গল এফসির তরফে জানানো হয়েছে, ‘‘গত কয়েক দিন ধরে আমরা টিকিট বণ্টন সংক্রান্ত প্রচুর অনুরোধ পেয়েছি। সংবাদমাধ্যম থেকেও নানা প্রশ্ন এসেছে। সংশ্লিষ্ট অংশীদার সংস্থাগুলির মধ্যে দীর্ঘ দিনের প্রথা মতো সৌজন্য টিকিট বিতরণ করেছি আমরা।’’
অনেকেই বিনামূল্যে টিকিট বিতরণের প্রথা ভাঙতে চাইছেন। অনেকেই মনে করেন, দিনের পর দিন এই ব্যবস্থা চলতে পারে না। চলে আসা এই ব্যবস্থা পেশাদার ফুটবলের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। সতীদাহ প্রথাও তো দিনের পর দিন চলে আসার পরে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। প্রশ্ন, ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান বা আইএফএ কর্তারা কোন অধিকারে বিনা পয়সার টিকিট চাইছেন? ক্লাবকর্তাদের পাল্টা যুক্তি, অনেকের কাছেই তাঁদের দায়বদ্ধতা থাকে। সুষ্ঠু ভাবে ক্লাব চালানোর জন্য এটা প্রয়োজন। প্রাক্তন ফুটবলার থেকে শুরু করে ভিআইপি, ভিভিআইপি, অনেককেই টিকিট দিতে হয়।
সব মিলিয়ে ডার্বি ম্যাচ নিয়ে যতটা না উৎসাহ, তার টিকিট বন্টনকে কেন্দ্র করে উত্তেজনায় ফুটছে কলকাতার ফুটবল ময়দান।