ইস্টবেঙ্গলের কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত। ছবি: সংগৃহীত।
৩ ফেব্রুয়ারির পর ১০ মার্চ। মাঝে মাত্র ৩৬ দিনের ব্যবধান। কিন্তু এর মধ্যে অনেক বদল হয়েছে ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগানে। আগের কলকাতা ডার্বিতে সদ্য সুপার কাপ জয়ী ইস্টবেঙ্গল প্রায় হারিয়েই দিয়েছিল মোহনবাগানকে। টানা তিন ম্যাচে হারা মোহনবাগানের আত্মবিশ্বাসও তখন তলানিতে ছিল। এখন পরিস্থিতি আমূল বদলে গিয়েছে। ইস্টবেঙ্গল প্রথম ছয়ে শেষ করার মরিয়া চেষ্টা করছে। ও দিকে, আন্তোনিয়ো লোপেস হাবাসের মোহনবাগান একটানা জিতে লিগ-শিল্ড জয়ের স্বপ্ন দেখছে। অনেক দিন পরে আবার কলকাতা ডার্বিতে পিছিয়ে থেকে নামছে ইস্টবেঙ্গল। ম্যাচের আগের দিন সে কথা মেনে নিলেন ইস্টবেঙ্গলের কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাতও।
তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, রবিবারের ম্যাচে ইস্টবেঙ্গল ‘আন্ডারডগ’ কি না। কুয়াদ্রাত বলেন, “আমার মনে হয় ঠিক। বিশেষত দুটো দলের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স দেখলে সেটাই মনে হবে। সত্যি কথাটা সত্যি করেই স্বীকার করে নেওয়া উচিত। তবে আমি দলের খেলোয়াড়দের বিশ্বাস করি। জানি ওরা প্রতিটা ম্যাচেই নিজেদের সেরাটা দিচ্ছে। নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে এগোতে হবে আমাদের। এই মরসুমে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে যা যা পরিকল্পনা করেছি সবই কাজে লেগেছে। ডুরান্ড কাপের ফাইনালে হারলেও আমরা অনেক ভাল খেলেছি। এখনও পর্যন্ত এই মরসুমে বড় ম্যাচে আমরা এগিয়ে। তবু রবিবারের ম্যাচে আমরা লড়াই চালিয়ে যাব।”
দরাজ গলায় মোহনবাগানের প্রশংসাও শোনা গিয়েছে কুয়াদ্রাতের মুখে। বলেছেন, “মোহনবাগান ভাল দল। ফলাফলেই তা স্পষ্ট। নর্থইস্টকে চার গোল, জামশেদপুরকে তিন গোল দিয়েছে। ওদের সমীহ করতেই হবে। যদি আপনি ওদের খেলতে দেন এবং ছোট করে দেখেন, তা হলে শাস্তি পেতেই হবে। এখন ওদের ছন্দটা অনেক ভাল। মরসুমের মধ্যে অনেক উত্থান-পতনের সাক্ষী থেকেছে। সেখান থেকে দলটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আমরাও সুপার কাপ জিতেছি, আগে ভাল খেলেছি। পরে আবার কিছু ব্যর্থতা দেখতে হয়েছে।”
সুপার কাপের পর জেভিয়ার সিভেরিয়ো এবং বোরহা হেরেরাকে ছেড়ে দিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। অন্য দলে গিয়ে ভালই খেলছেন তাঁরা। সেই সিদ্ধান্ত কি ভুল ছিল? কুয়াদ্রাতের জবাব, “সিভেরিয়ো এবং বোরহাকে ছেড়ে দিয়ে আক্রমণাত্মক ফুটবলার দরকার ছিল আমাদের। সেটাই করেছি। এখন ওদের নিয়ে আক্ষেপ করে লাভ নেই। আইএসএলের প্রথম পর্বে যেমন ফুটবলার দরকার ছিল তেমন পাইনি। সমাধান খুঁজছিলাম। চেষ্টা করেছি ভাল ফুটবলার নিয়ে আসার। পরের মরসুমে শুরু থেকে ভাল ফুটবলারের জন্য ঝাঁপাতে হবে আমাদের।”
তবে ইস্টবেঙ্গলের কোচ মেনেই নিয়েছেন, লড়াই করার মতো ভাল মানের ফুটবলার সত্যিই তাঁর দলে নেই। বলেছেন, “বিদেশি খেলোয়াড়েরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ম্যাচে তফাত গড়ে দেয়। দুর্ভাগ্যবশত আমাদের হাতে তেমন বিদেশি নেই। হঠাৎ করেই সাউল এবং পারদো চোট পেয়ে গেল। ভাল ভারতীয় ফুটবলারও নেই যাদের দিয়ে আরও ভাল লড়াই করতে পারব। তার মধ্যেও আমরা ভাল খেলেছি, একটা ট্রফি জিতেছি। আশা করি পরের মরসুমে আরও ভাল খেলতে পারব।”
এত কিছুর পরেও ইস্টবেঙ্গলের কোচ আত্মবিশ্বাসী যে তাঁর দল প্রথম ছয়ে শেষ করবে। বলেছেন, “মানছি শেষ কয়েকটা ম্যাচের ফলাফল ভাল যায়নি। কিন্তু শেষ কয়েকটা জায়গা নিয়ে প্রবল লড়াই হচ্ছে। এটা ফুটবলের জন্য ভাল। আমার খেলোয়াড়েরা অনুপ্রাণিত। এখনও পর্যন্ত ডার্বিতে ভাল খেলেছি। ওরা লিগ-শিল্ডের জন্য লড়াই করছে। আমরা প্রথম ছয়ের জন্য। তাই একটা তফাত তো থাকবেই। অঙ্কের হিসাবে এখনও প্রথম ছয়ে শেষ করার সম্ভাবনা রয়েছে আমাদের।”