UEFA Euro 2024

ফুটবলে ক্রিকেটের প্রযুক্তি, ইউরোয় ব্যবহার হওয়া ‘স্নিকো’ কি হ্যান্ডবল ধরতে পারবে

ইউরো কাপে প্রথম বার ব্যবহার করা হয়েছে ‘স্নিকো’ প্রযুক্তি। ক্রিকেটের এই প্রযুক্তি কি ফুটবলে হ্যান্ডবলের সমস্যা মেটাতে পারবে?

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০২৪ ১০:০৩
football

‘স্নিকো’-র এই প্রযুক্তিতেই বাতিল হয়েছে বেলজিয়ামের গোল। ছবি: এক্স।

কেউ বলছেন, এই প্রযুক্তি ফুটবলে হ্যান্ডবলের সমস্যা মিটিয়ে দেবে। আবার কারও মতে, বাজে খরচ হয়েছে। এই প্রযুক্তি আসলে কোনও কাজের নয়। চলতি ইউরো কাপে প্রথম বার ব্যবহার করা হয়েছে ‘স্নিকো’ প্রযুক্তি। ক্রিকেটের এই প্রযুক্তি কি ফুটবলে হ্যান্ডবলের সমস্যা মেটাতে পারবে, এই প্রশ্ন উঠছে।

Advertisement

কী ভাবে কাজ করে এই প্রযুক্তি?

ইউরো কাপে অ্যাডিডাসের যে বল ব্যবহার করা হচ্ছে, তাতে রয়েছে একটি বিশেষ ধরনের চিপ। সেই চিপের সাহায্যে এক সেকেন্ডের ৫০০ ভাগের কম সময়ে তথ্য এসে পৌঁছয় ভার-এর দায়িত্বে থাকা দলের কাছে। বলের কোথায় স্পর্শ হয়েছে, শরীরের কোন অংশ দিয়ে ফুটবলার স্পর্শ করেছেন সেই তথ্য পাওয়া যায়। যদি দেখা যায় যে হাতের কোনও অংশে বল লেগেছে তা হলে ভার-এর দায়িত্বে থাকা দল রেফারিকে সেই তথ্য দিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে।

ভার পরীক্ষা করলে দেখা যায় এই স্নিকো প্রযুক্তি। এই প্রযুক্তি সাধারণত ক্রিকেটে ডিআরএস-এর সময় ব্যবহার করেন আম্পায়ারেরা। এই প্রযুক্তিতে বোঝা যায় দু’টি বস্তুর মধ্যে স্পর্শ হয়েছে কি না। অর্থাৎ, এলবিডব্লিউ বা ক্যাচের ক্ষেত্রে বল ব্যাটে লেগেছে না প্যাডে, তা এই প্রযুক্তিতে বোঝা যায়। ফুটবলের ক্ষেত্রে হাতের কোনও অংশে বল লেগেছে কি না, লাগলে বলের গতিপথের পরিবর্তন হয়েছে কি না, হাত দিয়ে বলের দখল ফুটবলার নিতে চেয়েছেন কি না সব এই প্রযুক্তিতে বোঝা যায়।

প্রথম বার কখন ব্যবহার হয়েছে এই প্রযুক্তি?

চলতি ইউরো কাপে স্লোভাকিয়া-বেলজিয়াম ম্যাচে প্রথম এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা ম্যাচের ৮৬ মিনিটের মাথায় পরিবর্ত হিসাবে নামা বেলজিয়ামের লুইস ওপেনডা একক দক্ষতায় বল নিয়ে বক্সে ঢোকেন। তিনি বল বাড়ান রোমেলু লুকাকুর দিকে। বক্সে দাঁড়িয়ে থাকা লুকাকু বাঁ পায়ের শটে গোল করেন। কিন্তু সেই গোলও বাতিল হয়। ভার-এ দেখা যায় ওপেনডা হ্যান্ডবল করেছিলেন।

স্নিকো প্রযুক্তিতে দেখা যায়, বল নিয়ে যাওয়ার সময় হাতে লাগিয়েছিলেন ওপেনডা। তার ফলে বলের গতিপথ খানিকটা বদলে গিয়েছিল। ফলে বল নিয়ে বক্সে ঢুকতে সুবিধা হয়েছিল ওপেনডার। সেই কারণে এই গোল বাতিল করেন রেফারি উমুট মেলার।

কী বলছেন বিশেষজ্ঞেরা?

ইংল্যান্ডের প্রাক্তন ফুটবলার গ্যারি লিনেকার এই প্রযুক্তির সমালোচনা করেছেন। তাঁর মতে, ফুটবলার ইচ্ছাকৃত ভাবে হাত লাগিয়েছেন, না লাগাননি, তা এই প্রযুক্তিতে বোঝা সম্ভব নয়। অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন ফুটবলার স্কট ম্যাকডোনাল্ডের মতে, স্নিকো দেখে কিছু বোঝা সম্ভব নয়। বেকার পয়সা খরচ করা হচ্ছে। আবার প্রিমিয়ার লিগের প্রাক্তন ফুটবলার ক্রিস সুটন এই প্রযুক্তির প্রশংসা করেছেন। তাঁর মতে, এর ফলে রেফারির চাপ কমে যাবে।

হ্যান্ডবলের নিয়ম কী?

ইন্টারন্যাশনাল ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন বোর্ডের নিয়ম অনুযায়ী, কোনও ফুটবলার যদি শরীর থেকে দূরে নিয়ে গিয়ে ফুটবলে হাত লাগান তা হলে সেটি হ্যান্ডবল হিসাবে ধরা হয়। কারণ, সেখানে উদ্দেশ্য থাকে বল আটকানো। কিন্তু যদি অনিচ্ছাকৃত ভাবে হাতে বল লাগে বা হাত শরীরের কাছে থাকাকালীন বল লাগে তা হলে তা হ্যান্ডবল হিসাবে বিবেচিত হয় না। এটা সম্পূর্ণ রেফারির বিবেচনার উপর নির্ভর করে। ভার তাতে সাহায্য করতে পারে। কিন্তু শেষ সিদ্ধান্ত রেফারিকেই নিতে হয়।

আরও পড়ুন
Advertisement