Aam Aadmi Party

আপ ছাড়লেন দিল্লির মন্ত্রী! কেজরীর দরবারে ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে ছত্রে ছত্রে সরকারের বিপথগামী হওয়ার অভিযোগ

দিল্লি সরকারের স্বরাষ্ট্র, পরিবহণ, তথ্যপ্রযুক্তি এবং নারী ও শিশু কল্যাণ দফতরের মন্ত্রী ছিলেন কৈলাস। দিল্লির মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী অতিশী মারলেনাকে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন তিনি।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২৪ ১৫:০২
(বাঁ দিকে) কৈলাস গহলৌত। অরবিন্দ কেজরীওয়াল (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) কৈলাস গহলৌত। অরবিন্দ কেজরীওয়াল (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

আম আদমি পার্টি (আপ) ছাড়লেন দিল্লির মন্ত্রী কৈলাস গহলৌত। আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরীওয়ালের কাছে রবিবার নিজের ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে দল এবং সরকারের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি। আগামী বছরেই দিল্লিতে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। তার আগে গহলৌতের দলত্যাগ আপকে বেশ ধাক্কা দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। বছর পঞ্চাশের কৈলাস দীর্ঘ দিন আপের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং সরকারে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দফতরের দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন। দিল্লি সরকারের স্বরাষ্ট্র, পরিবহণ, তথ্যপ্রযুক্তি এবং নারী ও শিশু কল্যাণ দফতরের মন্ত্রী ছিলেন তিনি। দিল্লির মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী অতিশী মারলেনাকে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন তিনি। পরবর্তী রাজনৈতিক পদক্ষেপ কী হবে, সে বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করেননি কৈলাস। সূত্রের খবর, তিনি বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন।

Advertisement

কেজরীওয়ালকে পাঠানো ইস্তফাপত্রের ছত্রে ছত্রে দলের বর্তমান অবস্থান এবং কাজকর্ম নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন কৈলাস। তাঁর মতে, দলের অন্দরেই একাধিক ‘কঠিন চ্যালেঞ্জ’-এর মুখে পড়তে হচ্ছে আপকে। তিনি লিখেছেন, “সাধারণ মানুষকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি ভুলে গিয়ে রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা পূরণের কথা ভাবা হচ্ছে। ফলে অনেক প্রতিশ্রুতিই অপূর্ণ থেকে যাচ্ছে।” উদাহরণ হিসাবে যমুনা নদীর দূষণ পরিস্থিতির কথাও ইস্তফাপত্রে তুলে ধরেছেন কৈলাস। তাঁর অভিযোগ, যমুনাকে পরিষ্কার করার প্রতিশ্রুতি দিলেও আপ সরকার তা পূরণ করতে বিন্দুবিসর্গও পদক্ষেপ করেনি। যে কারণে যমুনার জল এখন আগের থেকেও বেশি দূষিত হয়ে গিয়েছে। তাঁর অভিযোগ, আপ নিজস্ব রাজনৈতিক স্বার্থের জন্য লড়াই করছে। সেই কারণে দিল্লির সাধারণ মানুষ ন্যূনতম নাগরিক পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। কৈলাস লিখেছেন, কেন্দ্রের সঙ্গে লড়াই করতেই যদি দিল্লির সরকার অর্ধেকের বেশি সময় কাটিয়ে দেয়, তা হলে দিল্লিতে প্রকৃত উন্নয়ন কখনওই হবে না।

কেজরীওয়াল দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন সংস্কার করিয়েছিলেন। তা নিয়ে বিজেপি মাঝেমধ্যেই খোঁচা দেয় আপকে। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনকে ‘শিসমহল’ বলে কটাক্ষ করে বিজেপি। তাদের অভিযোগ, সাধারণ মানুষের করের টাকা খরচ করে ওই সরকারি বাসভবন সংস্কার করিয়েছেন কেজরী। এই বাংলো সংস্কার বিতর্কের কথাও ইস্তফাপত্রে উল্লেখ করেছেন কৈলাস। তাঁর মতে, এই ধরনের বিতর্কগুলি সাধারণ মানুষের মনে আম আদমি পার্টির বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি করেছে।

দল এবং সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভের কথা জানিয়ে ইস্তফা দিয়েছেন কৈলাস। তবে, আপ নেতাদের একাংশের মতে, বিজেপির চাপের মু‌খেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কৈলাস। এর আগে ইডি এবং আয়কর দফতর তাঁর বাড়িতে হানা দিয়েছিল। আপ সূত্রে দাবি, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার নজর রয়েছে তাঁর উপর। সম্ভবত সেই কারণেই দল ছাড়ছেন কৈলাস। আপ নেতা সঞ্জয় সিংহও সেই অভিযোগই তুলেছেন। তাঁর দাবি, নির্বাচনের আগে বিজেপি আবার ‘মোদী ওয়াশিং মেশিন’ চালু করে দিয়েছে। আপ নেতার এই বক্তব্য কৈলাসের বিজেপিতে যোগদান ঘিরে গুঞ্জনকে আরও বৃদ্ধি করেছে।

কৈলাসের ইস্তফার পর দিল্লি বিজেপি সমাজমাধ্যমে লিখেছে, “কেজরীওয়ালের ডুবন্ত নৌকা থেকে সবাই পালিয়ে যাচ্ছেন। এ বার বিজেপিই দিল্লিতে ক্ষমতায় আসছে।” ইস্তফাপত্রে কৈলাসের অভিযোগগুলির প্রসঙ্গ টেনে বিজেপির মুখপাত্র শাহজাদ পুনাওয়ালার দাবি, আম আদমি পার্টি এখন ‘খাস আদমি পার্টি’ হয়ে গিয়েছে।

আরও পড়ুন
Advertisement