মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। — ফাইল চিত্র।
অনেক দিন পরে তৃণমূলের ‘ব্রিগেড চলো’ ডাক। লোকসভা নির্বাচনের আগে ১০ মার্চ ব্রিগেডে ‘জনগর্জন সভা’ হবে বলে রবিবার ঘোষণা করেছে তৃণমূল। কিন্তু সেই দিনেই ‘খেলা হবে’ বলে আগে থেকেই জানিয়ে দিয়েছেন আইএসএল কর্তৃপক্ষ। ফিরতি ম্যাচে মুখোমুখি হবে ইস্টবেঙ্গল আর মোহনবাগান। প্রথম ম্যাচে ফয়সালা হয়নি ম্যাচের। দুই দলই দু’টি করে গোল দেয়। এ বার ফিরতি ডার্বিতে লাল-হলুদের পাশাপাশি সবুজ-মেরুনও চায় জয়। ফলে দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যেই উৎসাহ ও উত্তেজনা রয়েছে।
লোকসভা ভোটের আগে আগে তৃণমূলের ব্রিগেড নিয়েও উত্তেজনা কম নয়। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে একটার পর একটা প্রকল্পের টাকা আটকে রাখার অভিযোগ তুলে চলেছে তৃণমূল। কলকাতা থেকে দিল্লিতে ধরনায় বসেছেন দলের নেতৃত্ব। এ বার দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে ব্রিগেডের সভায় সেই দাবিতেই সমাবেশ করতে চায় তৃণমূল। একই সঙ্গে ভোটের আগে দলকে চাঙ্গা করাও এই সমাবেশের লক্ষ্য। সব দলই এই ধরনের বড় কর্মসূচি নিয়ে থাকে ভোটের ঠিক আগে আগে। বিজেপিও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে এনে ১, ২ ও ৮ মার্চ সমাবেশ করছে রাজ্যে। আর তার পরে পরেই তৃণমূলের সমাবেশ।
অন্য দিকে যতই রাজনীতি থাকুক, ভোটের বছর হোক, বাঙালির সঙ্গে ফুটবলের যেন রক্তের সম্পর্ক। আর সেটা যদি আবার দুই বড় দলের মধ্যে খেলা হয়ে তবে তো কথাই নেই। সব খেলার সেরা বাঙালির ফুটবল তখন লড়াইয়ের রূপ নেয়। তবে কী হবে মার্চের দ্বিতীয় রবিবারে। দুই উত্তেজনার ‘খেলা হবে’-তে জিতবে কে? এমন প্রশ্ন উঠেছে তৃণমূলের ব্রিগড সমাবেশ ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই। এমন প্রশ্নও উঠছে যে, আগে থেকেই জানা ছিল ওই দিন শহরে বড় ম্যাচ রয়েছে। তা হলে তৃণমূল কেন বড় সভার ডাক দিল? দলের রাজ্যসভা সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, ‘‘আমাদের দল বা সরকার মানুষের অসুবিধা করে কিছু করে না কখনও। এ বারেও করবে না। যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে দল এবং প্রশাসনের পক্ষে।’’
তৃণমূলের সভায় ভিড় নিয়ে কৌতূহল থাকলেও ডার্বিতে যে ভিড় হবে সেটা এক রকম বলাই যায়। কারণ, এর আগের ম্যাচেই টিকিট নিয়ে হাহাকার পড়ে গিয়েছিল। আবার এই ম্যাচ মোহনবাগানের কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আইএসএলের প্রথম ডার্বিতে দু’দলের খেলা ড্র হয়েছে। দ্বিতীয় পর্বে নামার আগেই আইএসএলের শীর্ষে চলে যেতে পারে মোহনবাগান। অন্য দিকে, ইস্টবেঙ্গলের লক্ষ্য প্রথম ছয়ে শেষ করা। আইএসএলের প্রথম পর্বের ডার্বির পর থেকে মোহনবাগানের পারফরম্যান্স যত ভাল হয়েছে, ইস্টবেঙ্গলের খেলা ততই খারাপ হয়েছে। আন্তোনিয়ো হাবাসের কোচিংয়ে মোহনবাগান লিগ-শিল্ড জেতার স্বপ্ন দেখছে। ইস্টবেঙ্গল চাইছে প্রথম ছয়ে শেষ করে অন্তত প্লে-অফ নিশ্চিত করতে। তবে ডার্বির আগে মোহনবাগানকে যেখানে খেলতে হবে মাত্র একটা ম্যাচ, সেখানে ইস্টবেঙ্গলকে তিনটি ম্যাচ খেলতে হবে। যার মধ্যে প্রথম চারে থাকা ওড়িশা এবং গোয়ার বিরুদ্ধে অ্যাওয়ে ম্যাচে খেলতে হবে। এই মুহূর্তে মোহনবাগান পয়েন্ট টেবিলে তৃতীয় স্থানে। ইস্টবেঙ্গল নবম স্থানে।
দুই দলের মধ্যে পয়েন্ট তালিকায় দূরত্ব অনেক হলেও সমর্থকদের কাছে প্রতিটি ডার্বিই আলাদা করে মহত্বপূর্ণ হয়। সেই কারণে তৃণমূল সমর্থক ফুটবলপ্রেমীদের কাছেও চিন্তার। অনেককেই হয় তো প্রথমে ব্রিগেডে ও পরে স্টেডিয়ামে হাজিরা দিতে দেখা যেতে পারে। সেটা অবশ্য কঠিন হবে না। কারণ, তৃণমূলের সমাবেশে শুরু বেলা ১১টায়। আশা করা যায়, বিকেলের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে। আর যুবভারতীতে ডার্বি শুরু সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায়। এই সময়ের ফারাকটাই পুলিশের কাছেও স্বস্তির হবে।