সঞ্জু স্যামসন। —ফাইল চিত্র।
নিয়মিত অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসনকে বাদ দিয়েই বিজয় হজারে ট্রফির দল ঘোষণা করেছে কেরল। শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ উঠেছে ফর্মে থাকা সঞ্জুর বিরুদ্ধে। দল থেকে বাদ পড়ার পরও ‘অবাধ্য’ সঞ্জু ডুবে রয়েছেন অতীত নিয়ে। তাঁর সাম্প্রতিক সাফল্যের কৃতিত্ব দিয়েছেন ১৪ বছর বয়সে আলাপ হওয়া এক প্রাক্তন ক্রিকেটারকে।
নিজের খেলা শেষ পাঁচটি টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ম্যাচের তিনটিতে শতরান করেছিলেন সঞ্জু। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে একটি এবং দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে দু’টি। ২০১৫ সাল থেকে ভারতীয় দলের হয়ে খেললেও আগে ব্যাট হাতে তেমন সাফল্য নেই তাঁর। ২০ ওভারের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মাত্র দু’টি অর্ধশতরান ছিল সঞ্জুর। গত অক্টোবর-নভেম্বরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটজীবনের সেরা ফর্মে দেখা গিয়েছে কেরলের উইকেটরক্ষক-ব্যাটারকে। এর কৃতিত্ব সঞ্জু যাঁকে দিয়েছেন, তিনি হলেন ভারতীয় দলের কোচ গৌতম গম্ভীর।
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রাক্তন অধিনায়ক এবি ডিভিলিয়ার্সের ইউটিউব চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সঞ্জু বলেছেন, ‘‘ছোট থেকেই গম্ভীরের সঙ্গে আমার সম্পর্ক বেশ ভাল। আমার প্রথম আইপিএল দল ছিল কলকাতা নাইট রাইডার্স। দ্বিতীয় দলের জন্য আমাকে নিয়েছিল কেকেআর। তখন আমার বয়স ১৪। তিন বছর পর আমি কেকেআরের প্রথম দলে সুযোগ পাই। তখন আমার ১৭ বছর বয়স। সে বারই গম্ভীরের নেতৃত্বে কেকেআর আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘গম্ভীর ভারতীয় দলের কোচ হওয়ার পর তাই কোনও সমস্যা হয়নি। আমাকে উনি বলেছিলেন, ‘সঞ্জু, আমি জানি তোমার ক্ষমতা কী। তোমার মধ্যে একটা আলাদা ব্যাপার রয়েছে। নিজের মতো খেলার চেষ্টা কর। ফলাফল যাই হোক, আমি তোমার পাশে আছি।’ গম্ভীরের এই আশ্বাসই আমাকে আত্মবিশ্বাস দিয়েছে। আমাকে বলেছিলেন, মাঠে গিয়ে অন্য কিছু ভাবার দরকার নেই। শুধু নিজের মতো খেলতে।’’
সঞ্জু জানিয়েছেন, গম্ভীরের আশ্বাস তাঁকে সম্পূর্ণ চাপমুক্ত করে দিয়েছিল। তার ফলেই নিজের স্বাভাবিক ব্যাটিং করতে পরেছেন। ৩০ বছরের উইকেটরক্ষক-ব্যাটার বলেছেন, ‘‘কয়েকটা ম্যাচে দ্রুত আউট হয়ে গেলে একটা চাপ তৈরি হয়। তখন মনে হয়, দলের সবাই আস্থা রাখলেও তার মর্যাদা দিতে পারছি না। তখন নিজেকে বলেছিলাম, সঞ্জু চলো, কিছু করে দেখাও। কোচ তোমার উপর যে আস্থা দেখাচ্ছেন, তার প্রতিদান দেওয়া উচিত তোমার। ঈশ্বরকে ধন্যবাদ। এর পরেই কয়েকটা ভাল ইনিংস খেলতে পেরেছি। এ ভাবেই রান করে যেতে চাই এবং দেশকে জেতাতে চাই।’’
সঞ্জু এখন শুধু ভারতীয় দল নিয়ে ভাবছেন। টেস্ট দলে সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা কম জানেন। তাই সাদা বলের ক্রিকেটে নিজের জায়গা তৈরি করতে চাইছেন। কেরল দল থেকে বাদ পড়লেও উদ্বিগ্ন নন উইকেটরক্ষক-ব্যাটার। নিজের ফর্ম ধরে রাখাই লক্ষ্য তাঁর। মুখ খোলেননি তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ নিয়েও।