আইপিএল নিয়ে বিসিসিআইয়ের পাশে গাওস্কর। ফাইল ছবি।
ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটারদের অন্য দেশের টি-টোয়েন্টি লিগে খেলার অনুমতি দেয় না। বিসিসিআইয়ের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কয়েক দিন আগে সরব হন অ্যাডাম গিলক্রিস্ট। বিসিসিআইয়ের পাশে দাঁড়িয়ে জবাব দিলেন সুনীল গাওস্কর। ভারতের প্রাক্তন অধিনায়কের মতে, ক্রিকেটের পুরনো শক্তিদের ইচ্ছা মতো এখন আর সব কিছু হবে না।
স্পনসরশিপ বা আকর্ষণের নিরিখে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ অনেক এগিয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিগ ব্যাশ লিগ বা ইংল্যান্ডের দ্য হান্ড্রেড লিগের থেকে। আইপিএলে বিভিন্ন দেশের ক্রিকেটাররা খেললেও বিরাট কোহলী, রোহিত শর্মারা খেলেন না অন্য দেশগুলির টি-টোয়েন্টি লিগে। ভারতের ক্রিকেটপ্রেমীদের আগ্রহ না থাকায় বাণিজ্যিক সংস্থাগুলিও তেমন উৎসাহী নয়। সে কারণেই বিসিসিআইয়ের সমালোচনা করেন গিলক্রিস্ট।
গাওস্কর নিজের কলামে লিখেছেন, ‘‘বিদেশের কিছু প্রাক্তন ক্রিকেটার বলেছে, বিসিসিআইয়ের উচিত ভারতীয় ক্রিকেটারদের বিগ ব্যাশ বা হান্ড্রেডের মতো প্রতিযোগিতায় খেলতে দেওয়া। আসলে ওরা চায়, ওদের দেশের টি-টোয়েন্টি লিগে আরও স্পনসর আসুক। বুঝতে পারছি, ওরা নিজেদের দেশের ক্রিকেট নিয়ে চিন্তিত। কিন্তু ভারতও নিজের খেলোয়াড়দের আগলে রাখতে চায়। বিভিন্ন প্রতিযোগিতার জন্য ক্রিকেটারদের যতটা সম্ভব তরতাজা রাখতেই বিদেশের লিগগুলোয় খেলতে দেয় না। এটাই ক্রিকেটের পুরনো শক্তিদের পছন্দ হচ্ছে না।’’
আইপিএল খেলতে বিদেশি ক্রিকেটাররা মুখিয়ে থাকেন। বিদেশের প্রাক্তন ক্রিকেটাররাও ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলির সঙ্গে কোচিং-সহ নানা ভূমিকায় যুক্ত। তা নিয়ে গাওস্কর লিখেছেন, ‘‘নিজেদের দেশের টি-টোয়েন্টি লিগকে আকর্ষণীয় করতে ওরা শুধু ভারতীয় ক্রিকেটারদের কথা বলে। কিন্তু কোচিং বা অন্য কোনও ভূমিকার জন্য ভারতীয়দের কথা বলে না। অথচ এই ভূমিকাগুলিতেও ভারতীয়রা দুর্দান্ত কাজ করতে পারে। গত ছ’সাত বছর বা আরও বেশি সময় ধরে সেটা ক্রিকেটবিশ্ব দেখতেও পাচ্ছে।’’
অজিদের কিছুটা খোঁচাও দিয়েছেন গাওস্কর। তিনি লিখেছেন, ‘‘একটা সময় অস্ট্রেলিয়ার লিগের জন্য আইপিএল বিপজ্জনক হয়ে উঠেছিল। কারণ, আইপিএলের অধিকাংশ ফ্র্যাঞ্চাইজিতেই অজি ক্রিকেটাররা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিল। কোচ বা সহযোগীদেরও অনেকে অস্ট্রেলিয়ার ছিল।’’
গাওস্কর বলতে চেয়েছেন, আইপিএল থেকে অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন এবং বর্তমান ক্রিকেটাররা যথেষ্ট লাভবান হচ্ছেন। সমালোচনার সুরে লিখেছেন, ‘‘ক্রিকেটের পুরনো শক্তিধরদের জন্য এটা কখনই দ্বিমুখী রাস্তা নয়।’’
আইপিএলের একাধিক ফ্র্যাঞ্চাইজি সংযুক্ত আরব আমিরশাহির টি-টোয়েন্টি লিগের দল কিনেছে। দক্ষিণ আফ্রিকার নতুন টি-টোয়েন্টি লিগের ছ’টি দলই কিনেছে আইপিএলের ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলি। ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে একাধিক দল রয়েছে তাদের হাতে। বিদেশের প্রাক্তন ক্রিকেটারদের একাংশ মনে করছেন, ক্রিকেটবিশ্বের টি-টোয়েন্টি লিগগুলিকে এ ভাবেই কুক্ষিগত করে ফেলছে ভারত।
এই প্রতিযোগিতাগুলি এখন বিভিন্ন দেশের ক্রিকেট বোর্ডের আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস হয়ে উঠেছে। বিরাট, রোহিতরা খেললে অন্য দেশের ক্রিকেট বোর্ডগুলির লাভের পরিমাণ বাড়তে পারে কয়েক গুণ। সেই সুযোগ না থাকায় আইপিএলের কাছাকাছিও পৌঁছতে পারছে না বিগ ব্যাশ বা দ্য হান্ড্রেড। লাভের অঙ্ক নিয়ে আশঙ্কায় রয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট কর্তারাও।