চিন্তার মেঘ অজিঙ্ক রাহানের কপালে। ছবি: রয়টার্স।
দুই দলই তিনটি ম্যাচ খেলে দু’টি হেরেছে। কলকাতা নাইট রাইডার্সের শুরুটা হয়েছিল হার দিয়ে। দ্বিতীয় ম্যাচ জিতলেও তৃতীয় ম্যাচে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের কাছে লজ্জার হার হেরেছে তারা। অন্য দিকে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ দুর্দান্ত শুরু করেছিল। প্রথম ম্যাচেই ২৮৬ রান করে জিতেছিল তারা। কিন্তু পরের দু’ম্যাচে তাদের হারতে হয়েছে। বৃহস্পতিবার ইডেন গার্ডেন্সে কেকেআরের মুখোমুখি হায়দরাবাদ। খোঁচা খাওয়া হায়দরাবাদ ভয়ঙ্কর। জয়ে ফিরতে মরিয়া তারা। তাই ঘরের মাঠে কঠিন চ্যালেঞ্জ অজিঙ্ক রাহানেদের সামনে। হারের ধাক্কা কাটানোর পাশাপাশি পিচ বিতর্কও সরিয়ে রাখতে হবে কলকাতাকে। ঘরের মাঠে ঘূর্ণি পিচ চেয়েছেন অধিনায়ক রাহানে। পিচ প্রস্তুতকারক সুজন মুখোপাধ্যায় স্পষ্ট করে দিয়েছেন, পিচ তিনি বদলাবেন না। হায়দরাবাদ ম্যাচে সকলের নজর থাকবে ইডেনের পিচের দিকেও।
এ বারের আইপিএলে ধারাবাহিকতা দেখাতে পারেনি কেকেআর। প্রথম ম্যাচে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর কাছে সহজেই হার মেনেছে তারা। রাহানে ও সুনীল নারাইন ছাড়া কারও ব্যাটে রান ছিল না। বোলারেরাও কিছু করতে পারেননি। গুয়াহাটিতে রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে অবশ্য দাপট দেখিয়েছেন বোলারেরা। সেখানকার ঘূর্ণি উইকেটে বরুণ চক্রবর্তী ও মইন আলিকে সামলাতে পারেনি রাজস্থান। পরে রান তাড়া করতে নেমে ৯৭ রানের ইনিংস খেলেছেন কুইন্টন ডি’কক। তৃতীয় ম্যাচে ওয়াংখেড়েতে অবশ্য কেকেআরকে ছেলেখেলা করে হারিয়েছে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। ব্যাটিং, বোলিং কিছু ভাল হয়নি।
গত বার কেকেআরের ব্যাটিং নজর কেড়েছিল। কিন্তু ফিল সল্ট, শ্রেয়স আয়ারদের ছেড়ে দেওয়ায় এ বার সেই ব্যাটিং সমস্যায় পড়ছে। ২৩ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকায় কেনা বেঙ্কটেশ আয়ারের ব্যাটে রান নেই। ব্যর্থ রিঙ্কু সিংহ, আন্দ্রে রাসেল, রমনদীপ সিংহেরা। রাহানে, নারাইন, ডি’কক রান করলেও ধারাবাহিকতা দেখাতে পারেননি। সেই কারণে বোলারদের কিছু করার থাকছে না। ব্যাটিংয়ের এই সমস্যা কাটাতে হবে কেকেআরকে।
রাহানেদের প্রতিপক্ষের আবার ব্যাটিংই শক্তি। অভিষেক শর্মা, ট্রেভিস হেড, ঈশান কিশন কী করতে পারেন তা হায়দরাবাদের প্রথম ম্যাচেই দেখা গিয়েছে। তা ছাড়া হাইনরিখ ক্লাসেন, নীতীশ রেড্ডিও দলে রয়েছেন। তরুণ অনিকেত বর্মা আগের ম্যাচে নজর কেড়েছেন। এই ব্যাটারদের মধ্যে দু’-তিন জন দাঁড়িয়ে গেলে কিন্তু সমস্যা হবে কেকেআরের। হায়দরাবাদ আগের দু’ম্যাচে বড় রান করতে পারেননি। তাই অভিষেক, হেড, ঈশানেরা মরিয়া থাকবেন। গত বার এই কেকেআরের কাছেই ফাইনালে হারতে হয়েছিল হায়দরাবাদকে। সেই কথাও মাথায় রয়েছে প্যাট কামিন্সদের। বদলা নিতে নামবেন তাঁরা। যদি হায়দরাবাদের ব্যাটিং দাঁড়িয়ে যায় তা হলে সমস্যা হবে রাহানেদের।
গত বার চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় এ বার বাড়তি চাপ রয়েছে কলকাতার। মাঠে তাদের খেলা দেখে সে কথা মনে হচ্ছে। কিন্তু কলকাতাকে মাথায় রাখতে হবে, যে দল চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল সেই দলে অনেক বদল হয়েছে। এমনকি, কোচিং দলও বদলে গিয়েছে। তাই গত বারের কথা ভেবে নামলে হবে না। এ বার নতুন করে শুরু করতে হবে তাদের। আগের ম্যাচে মুম্বইয়ের কাছে হারের ধাক্কা কাটিয়েও নামতে হবে রাহানেদের। সেই চাপ মাথায় রাখলে কিন্তু সমস্যায় পড়বে তারা। দায়িত্ব নিতে হবে দলের সিনিয়র ক্রিকেটারদের। বেঙ্কটেশ, নারাইন, রিঙ্কু, রাসেলরা অনেক দিন ধরে এই দলে খেলছেন। ফলে তাঁদের পথ দেখাতে হবে বাকিদের। যত দিন না তাঁরা দায়িত্ব নিচ্ছেন, তত দিন সমস্যায় পড়বে দল।
গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
ইডেনের পিচ ব্যাটিং সহায়ক। গত বার অনেক ম্যাচে ২০০-র বেশি রান হয়েছে। কলকাতার বিরুদ্ধে ২৬২ রান তাড়া করে জিতেছে পঞ্জাব। এ বারও প্রথম ম্যাচে পিচ দেখে মনে হয়েছে, তাতে ব্যাটারদের জন্য কোনও জুজু নেই। সেই কারণেই ম্যাচ শেষে রাহানে আর্জি জানিয়েছিলেন, স্পিন সহায়ক পিচ করার। সেই আবেদনে সাড়া দেননি ইডেনের পিচ প্রস্তুতকারক সুজন মুখোপাধ্যায়। সেই ঘটনা নিয়ে বিতর্কও হয়েছে। তবে বৃহস্পতিবারও ব্যাটিং সহায়ক উইকেটই পাওয়া যাবে। সেই উইকেটে হায়দরাবাদকে আটকানো কঠিন। জিততে গেলে সেই কাজটাই করতে হবে কলকাতার বোলারদের।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে শুরু খেলা। সরাসরি দেখা যাবে স্টার স্পোর্টস চ্যানেল ও জিয়োহটস্টার অ্যাপে।