কেকেআর দল। ছবি: পিটিআই।
শহরের ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য সুখবর। কলকাতা নাইট রাইডার্স বনাম লখনউ সুপার জায়ান্টসের খেলা হচ্ছে ইডেন গার্ডেন্সেই। তবে ম্যাচের তারিখ বদলে গিয়েছে। শুক্রবার আইপিএলের তরফে সরকারি ভাবে এই ঘোষণা করা হয়েছে।
এ দিন জানানো হয়েছে, ৬ এপ্রিলের বদলে কলকাতা বনাম লখনউ ম্যাচ হবে ৮ এপ্রিল। সময় একই রাখা হয়েছে। অর্থাৎ খেলা হবে দুপুর ৩.৩০টা থেকে। ফলে রবিবারের বদলে মঙ্গলবার ‘ডাবল হেডার’, অর্থাৎ একই দিনে দু’টি ম্যাচ হবে। সে দিন সন্ধ্যা থেকে পঞ্জাব কিংস বনাম চেন্নাই সুপার কিংসের খেলা রয়েছে। ৬ এপ্রিল দু’টির বদলে একটি ম্যাচ হবে। সেটি হল হায়দরাবাদ বনাম গুজরাতের।
গত কয়েক দিন ধরেই এই ম্যাচ নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছিল। ৬ এপ্রিল রামনবমী থাকায় কলকাতা পুলিশের তরফে সিএবি-কে চিঠি পাঠিয়ে জানানো হয়েছিল, ওই দিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পুলিশ দিতে অপারগ তারা। সিএবি-র তরফে সেই চিঠি পাঠিয়ে দেওয়া হয় বোর্ডের কাছে।
অনেকেই আশঙ্কা করেছিলেন, ম্যাচটি সরিয়ে দেওয়া হবে গুয়াহাটিতে। তবে হাল ছাড়েননি সিএবি সভাপতি স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়। পুলিশ এবং বোর্ডের সঙ্গে নিয়মিত কথা বলে আপ্রাণ চেষ্টা করছিলেন ম্যাচটি যাতে কলকাতাতেই থাকে। সেই চেষ্টা সফল। দিন বদলালেও মাঠ একই থাকছে।
উল্লেখ্য, কেকেআরের হোম ম্যাচ কলকাতার হাতছাড়া হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেওয়ায় সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল লালবাজারের কর্তাদের। প্রশ্ন উঠেছিল, রামনবমীর দিন অন্য রাজ্যের পুলিশ আইপিএলের ম্যাচ আয়োজনে সক্ষম হলেও কলকাতা পুলিশের কেন প্রতি বছর সমস্যা হয়? সমাজমাধ্যমে পুলিশের সমালোচনায় সরব হয়েছিলেন বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির নেতা-কর্মীদের একাংশও। প্রশ্ন উঠেছিল কলকাতা পুলিশের কর্মদক্ষতা নিয়ে।
সমালোচনার মুখে নড়েচড়ে বসতে বাধ্য হয়েছিলেন লালবাজারের কর্তারা। গত শুক্রবার প্রথম সমাজমাধ্যমে কলকাতা পুলিশ জানিয়েছিল, তাদের বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। তবে ম্যাচ ইডেনে হওয়া নিয়ে আশাবাদী ছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। গত শনিবার আইপিএলের উদ্বোধনের দিন ইডেনে দাঁড়িয়ে সৌরভ বলেছিলেন, ‘‘অপেক্ষা করুন। দেখুন না কী হয় শেষ পর্যন্ত। সমাজমাধ্যমে কলকাতা পুলিশের পোস্ট দেখেননি? আমার মনে হয় না, ম্যাচ কলকাতা থেকে সরে যাবে।’’
পরে লালবাজারের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক বলেছিলেন, ‘‘কলকাতা পুলিশ সকলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পরিকল্পনা করছে। আইপিএলের ম্যাচের নিরাপত্তায় পুলিশকর্মীদের মোতায়েনে নতুন কৌশল নেওয়া হতে পারে।’’ ফলে ৬ এপ্রিল রামনবমীর নানা রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক কর্মসূচির পাশাপাশি ইডেনে নির্বিঘ্নে আইপিএলের ম্যাচ আয়োজনের চেষ্টা করছিলেন কলকাতা পুলিশের আধিকারিকেরা। গত বছরও রামনবমীর দিন ইডেনে আইপিএলের ম্যাচ নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিল কলকাতা পুলিশ। কলকাতা থেকে সরে গিয়েছিল সেই ম্যাচ। এ বার সেটা হল না। দিন বদলে দেওয়া হল।
কেকেআর-এলএসজি ম্যাচের আলাদা তাৎপর্য রয়েছে কলকাতার ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে। এক দিকে, শাহরুখ খানের দল আইপিএলের প্রথম থেকে কলকাতার প্রতিনিধিত্ব করে। তারা গত বারের চ্যাম্পিয়নও। অন্য দিকে, এলএসজির মালিক কলকাতার শিল্পপতি সঞ্জীব গোয়েন্কা। কলকাতায় প্রতি বছর লখনউ মোহনবাগানের মতো সবুজ-মেরুন জার্সি পরে খেলে। কারণ গোয়েন্কা মোহনবাগানের ফুটবল দলেরও বিনিয়োগকারী। তাই এই ম্যাচকে ঘিরে আলাদা আবেগ থাকে। সম্মানের লড়াই হিসাবে দেখেন কলকাতার ক্রিকেটপ্রেমীদের একাংশ।