— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
কিছু দিন আগে পর্যন্ত মোটরবাইকে চেপে বাড়ি বাড়ি খাবার পৌঁছে দেওয়ার কাজ করতেন তিনি। আগামী বেশ কয়েক দিন অবশ্য সেই কাজ করবেন না লোকেশ কুমার। চেন্নাইয়ের বাসিন্দা লোকেশ এখন ব্যস্ত নেদারল্যান্ডসের বিশ্বকাপ দলের সঙ্গে। কী ভাবে কুলদীপ যাদবের মতো বোলারকে ভারতের মাটিতে খেলতে হবে, তারই শিক্ষা ডাচদের দিচ্ছেন তিনি।
খুব বেশি পিছিয়ে থাকবেন না হেমন্ত কুমারও। রাজস্থানের হাই কোর্টে সহকারী প্রশাসনিক আধিকারিকের পদে কাজ করেন তিনি। ক্রিকেট খেলেন শখে। কিন্তু সেই ক্রিকেট খেলাই তাঁকে পৌঁছে দিয়েছে নেদারল্যান্ডস শিবিরে। শখের ক্রিকেটার হলেও তিনি খুব একটা পিছিয়ে থাকবেন না। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর এবং রাজস্থান রয়্যালসের মতো দলে নেট বোলার হিসাবে কাজ করেছেন। রাজস্থান ক্রিকেট লিগে নিয়মিত খেলেন।
বেঙ্গালুরুর আলুরে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি শিবির শুরু করে দিয়েছে নেদারল্যান্ডস। তবে এ দেশে আসার আগে সমাজমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়ে নেট বোলার চেয়েছিল তারা। প্রায় ১০ হাজার আবেদন জমা পড়ে। তার মধ্যে ‘চায়নাম্যান’ স্পিনার (যাঁরা বাঁ হাতের কবজির মোচড়ে বল ঘোরান) লোকেশ মন কেড়ে নিয়েছেন ডাচদের। চার বোলারকে বেছে নেওয়া হয়েছে, যাঁদের মধ্যে রয়েছেন লোকেশ এবং হেমন্ত।
ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেট খেলছেন লোকেশ। কলেজে পড়ার সময় থেকে নীচের স্তরের বিভিন্ন ক্লাবের হয়ে ক্রিকেট খেলতে শুরু করেন। কিন্তু বেশ কিছু দিন যাওয়ার পর কোথাও সুযোগ না পেয়ে উপার্জনের জন্যে একটি বেসরকারি সংস্থার ফুড ডেলিভারি বয়ের চাকরি বেছে নেন। চার বছর সেখানেই চাকরি করছেন। সপ্তাহান্তে চতুর্থ ডিভিশনের লিগের ম্যাচ খেলেন। তবে সেখান থেকে খুবই কম আয়।
এক ওয়েবসাইটে লোকেশ বলেছেন, “আমার জীবনের অন্যতম সেরা মুহূর্ত। এখনও পর্যন্ত তৃতীয় ডিভিশনেও খেলার সুযোগ পাইনি। চতুর্থ ডিভিশনে ইন্ডিয়ান অয়েলের হয়ে খেলি। নেদারল্যান্ডসের হয়ে নেট বোলার হিসাবে ডাক পাওয়ার পর মনে হচ্ছে এত দিনে আমার প্রতিভা কেউ চিনল। ওরা দু’হাত বাড়িয়ে আমাকে টেনে নিয়েছে। আমাকে বলে দিয়েছে, খোলা মনে, নিজের দল ভেবে খেলতে।”
দেশে খুব বেশি চায়নাম্যান বোলার নেই। কিন্তু লোকেশ সুযোগ পাওয়ার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন। বলেছেন, “বাকিদের থেকে কিছুটা এগিয়ে আছি এটা জানতাম। রহস্য স্পিনার আমাদের দেশে বেশি নেই। সমাজমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেখে ভেবেছিলাম এক বার দেখাই যাক। এখন ভাল লাগছে সুযোগ পেয়ে।”