Glenn Maxwell

আইপিএলে পঞ্জাব কিংসে তুঙ্গে উঠেছিল সহবাগ-ম্যাক্সওয়েল ঝগড়া, একাই রাজত্ব করতেন বীরু, আত্মজীবনীতে অভিযোগ অসি ক্রিকেটারের

আইপিএলে পঞ্জাব কিংসের হয়ে খেলার মরসুমে নিজের অন্ধকার সময়ের কথা তুলে আনলেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। জানালেন, কী ভাবে পঞ্জাবে একাই রাজত্ব চালাতেন বীরেন্দ্র সহবাগ। কারও কথাই শুনতেন না। নিজেই দল নির্বাচন করতেন।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০২৪ ২১:০৮
cricket

(বাঁ দিকে) গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। বীরেন্দ্র সহবাগ (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।

আইপিএলে পঞ্জাব কিংসের হয়ে খেলার সময় তুমুল ঝামেলা হয়েছিল গ্লেন ম্যাক্সওয়েল এবং বীরেন্দ্র সহবাগের। আইপিএলে অন্ধকার সময়ের কথা তুলে আনলেন ম্যাক্সওয়েল। আত্মজীবনী ‘দ্য শোম্যান’-এ অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটার লিখেছেন, কী ভাবে পঞ্জাবে একাই রাজত্ব চালাতেন বীরেন্দ্র সহবাগ। কারও কথাই শুনতেন না। নিজেই দল নির্বাচন করতেন। এমনকি, কোনও কারণ ছাড়াই তাঁকে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে বার করে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন ম্যাক্সওয়েল। যদিও সহবাগ এখনও তার উত্তর দেননি।

Advertisement

এখন বিরাট কোহলির সঙ্গে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুতে (আরসিবি) খেলেন ম্যাক্সওয়েল। পরের মরসুমেও তাঁকে ধরে রাখা হতে পারে। তার আগেই বইয়ে ২০১৭-র ঘটনা উল্লেখ করে ম্যাক্সওয়েলের অভিযোগ, “আমার মনে হয়েছিল দল নির্বাচনের সময় কোচেদের নিয়ে একটা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খোলা উচিত, যাতে ক্রিকেটারেরাও নিজেদের মতামত জানাতে পারে। সবাই রাজি হয়েছিল। একমাত্র সহবাগ সেটা মানেনি। ও পরিষ্কার করে বলে দিয়েছিল, ও-ই প্রথম একাদশ নির্বাচন করবে। আমরা মাঠে এবং মাঠের বাইরে বার বার হারছিলাম। সহবাগ এমন কিছু সিদ্ধান্ত নিচ্ছিল যার কোনও অর্থ ছিল না।”

সেই বছর পুণেতে শেষ ম্যাচের পর দু’জনের সম্পর্ক একেবারে তলানিতে এসে ঠেকেছিল। ম্যাক্সওয়েল লিখেছেন, ‘‘পুণের বিরুদ্ধে আমাদের অ্যাওয়ে ম্যাচ ছিল। ভিজে উইকেটে আমরা মাত্র ৭৩ রানে শেষ হয়ে গিয়েছিলাম। তবে দলকে নিয়ে আমি গর্বিত ছিলাম। নিজেকে নিয়েও আমি সন্তুষ্ট ছিলাম। মনে হয়েছিল নেতা হিসাবে সঠিক সময়ে নিজেকে সুযোগ দিয়েছিলাম। সঠিক সময়ে ব্যাট এবং বল নিজের হাতে তুলে নিয়েছিলাম। অবশ্যই আমরা ভাল খেলতে পারিনি। কিন্তু আরও খারাপ হতে পারত।’’

পুণের ওই ম্যাচের পর ম্যাক্সওয়েল নিজেই সাংবাদিক বৈঠকে যেতে চাইলেও সহবাগ তাঁকে যেতে দেননি। নিজেই যান। সেখানে গিয়ে ম্যাক্সওয়েলের নামেই বিষোদ্গার করেন। অসি ক্রিকেটার লিখেছেন, “সে দিন আমি সংবাদমাধ্যমের সামনে যাব বললেও সহবাগ নিজে যায়। এর পর বাসে ওঠার সময় দেখি মূল হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে আমাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। বুঝতেই পারছিলাম না কী হচ্ছে। হোটেলে ফেরার পর জানতে পারি কী ভাবে সহবাগ আমার নামে বিভিন্ন কথা বলেছে। শুনেছিলাম সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছে, আমাকে নিয়ে ও হতাশ। অধিনায়ক হিসাবে দায়িত্ব না নেওয়ার জন্য আমাকে দোষ দিয়েছে। এটা ঠিক নয়। বিশেষ করে যখন আমার মনে হয়েছিল, আমাদের বিচ্ছেদ হলেও সেখানে কোনও তিক্ততা ছিল না।”

ওই ঘটনার পর ম্যাক্সওয়েল সহবাগকে মেসেজ পাঠিয়েছিলেন। সে কথা জানিয়ে ম্যাক্সওয়েল লিখেছেন, ‘‘ওর কথায় আমার কতটা খারাপ লেগেছিল, সেটা ওকে জানিয়েছিলম। এটাও লিখেছিলাম, ও একজন ভক্তকে হারাল। তার জন্য ও-ই দায়ী। সহবাগ উত্তরও দিয়েছিল। শুধু লিখেছিল, ‘তোমার মতো ভক্তের দরকার নেই আমার।’ তার পর থেকে আমরা আর কখনও কথা বলিনি। বুঝে গিয়েছিলাম, দলে আমার সময় হয়ে গিয়েছে। মালিকদের বলেছিলাম, সহবাগকে যদি ওরা রেখে দেয়, তাহলে ভুল করবে। ও আর এক বছর খেলেছিল।’’

এর পর ম্যাক্সওয়েল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুতে খেলেছিলেন। তার জন্য বিরাট কোহলির প্রশংসা করেছেন তিনি। কোহলির জন্যই তাঁর বেঙ্গালুরুতে খেলা সম্ভব হয়েছিল জানিয়ে ম্যাক্সওয়েল বইয়ে লিখেছেন, পঞ্জাব ছেড়ে দেওয়ার পর যখন তিনি নিজের আইপিএল ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চিত ছিলেন, তখন কোহলিই আশা দেখিয়েছিলেন। অস্ট্রেলিয়া সিরিজ়ে কোহলিই ম্যাক্সওয়েলকে বলেছিলেন, পরের মরসুমের নিলামে বেঙ্গালুরু তার জন্য ঝাঁপাতে পারে। কোহলি বলেছিলেন, যে দলের মিডল অর্ডারে কোহলি, এবি ডিভিলিয়ার্সের সঙ্গে খেলার সুযোগ থাকছে, সেই দলে তিনি যোগ দিতেই পারেন।

সেই বছর নিলামে বেঙ্গালুরু ১৪.২৫ কোটি টাকায় ম্যাক্সওয়েলকে নিয়েছিল। তিনি লিখেছেন, ‘‘সে দিন আমিই পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী ক্রিকেটার ছিলাম। ক্রিকেটার হিসেবে আমার দ্বিতীয় জন্ম হয়েছিল। সব কিছুর জন্য ধন্যবাদ এক জনকেই— বিরাট কোহলি।’’

আরও পড়ুন
Advertisement