(বাঁ দিক থেকে) ঋষভ পন্থ, বেঙ্কটেশ আয়ার এবং রোহিত শর্মা। ছবি: সমাজমাধ্যম।
প্রতি বছর আইপিএলের নিলাম হয়। প্রতি বছরই দলগুলি কোটি কোটি টাকা খরচ করে ক্রিকেটার কেনে। কেউ সফল হন, কেউ হন না। পরিচিত নামেদেরও ব্যর্থ হওয়ার উদাহরণ রয়েছে। এ বছরের আইপিএলে সেটা আরও বেশি করে দেখা যাচ্ছে। কারণ যে সব নামী ক্রিকেটার নিলামে প্রচুর দাম পেয়েছেন, তাঁরা বেশির ভাগই হতাশ করছেন। আইপিএলে প্রায় সব দলেরই তিনটি করে ম্যাচ খেলা হয়ে গিয়েছে। সেই বিচারে ছ’জন ক্রিকেটার বেছে নিল আনন্দবাজার ডট কম, যাঁরা অনেক অর্থ পেয়েও নামের প্রতি সুবিচার করতে পারছেন না।
ঋষভ পন্থ (৩ ম্যাচে ১৭ রান)
আইপিএলের ইতিহাসে সবচেয়ে দামি ক্রিকেটার। ২৭ কোটি টাকায় তাঁকে কেনে লখনউ। নেতৃত্বও তুলে দেয়। কিন্তু তিনটি ম্যাচ খেলে ফেললেও তিনি নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। তিন ম্যাচে মাত্র ১৭ রান করেছেন। প্রথম ম্যাচেই শূন্য রানে আউট হন। নেতৃত্বেও আলাদা কিছু খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না যা শিরোনামে আসতে পারে। লখনউ ইতিমধ্যেই দু’টি ম্যাচ হেরে গিয়েছে।
বেঙ্কটেশ আয়ার (৩ ম্যাচে ৯ রান)
ধরে না রাখলেও মহানিলামে বেঙ্কটেশকে ২৩.৭৫ কোটি টাকায় কেনে কেকেআর। তখনই অনেকে প্রশ্ন তুলেছিলেন, এত দাম দিয়ে বেঙ্কটেশকে কেনা যুক্তিসঙ্গত হল কি না। সেটাই দেখা যাচ্ছে তিন ম্যাচের পর। দ্বিতীয় ম্যাচে তাঁকে ব্যাট করতে হয়নি। বাকি দু’টি ম্যাচে তাঁর অবদান মোটে ৯ রান। আগের ম্যাচে যে ভাবে দায়িত্বজ্ঞানহীন শট খেলে আউট হয়েছেন, তাতে প্রশ্ন উঠতে বাধ্য যে এত টাকা পেয়ে তাঁর মাথা ঘুরে গিয়েছে কি না।
যশস্বী জয়সওয়াল (৩ ম্যাচে ৩৪ রান)
২৩ বছরের কোনও ক্রিকেটারকে ধরে রাখা হচ্ছে ১৮ কোটি টাকা দিয়ে, এমন ঘটনা আইপিএলে সচরাচর দেখা যায় না। কিন্তু যশস্বী এই সম্মান নিজেই আদায় করে নিয়েছিলেন। ওপেন করতে নেমে তাঁর উপর ভরসা করা যায়। কারণ তিনি আগ্রাসী ভঙ্গিতে ইনিংস শুরু করতে পারেন। তবে এই আইপিএলে এখনও পর্যন্ত যশস্বীর ব্যাটে-বলে ঠিকঠাক সংযোগ হয়নি। তিন ম্যাচে মাত্র ২৯ রান করেছেন। দু’টি ম্যাচে দু’অঙ্কের রানেও পৌঁছোতে পারেননি। তার খেসারতও দিতে হয়েছে রাজস্থানকে।
রোহিত শর্মা (৩ ম্যাচে ২১ রান)
তাঁকে নিলামের টেবিলে উঠতে হয়নি। মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ১৬.৩০ কোটি টাকায় ধরে রেখেছিল। তবে এ বছর রোহিত মোটেই ফর্মে নেই। দেশের জার্সি থেকে ক্লাবের জার্সি, কোনও কিছুতেই ফর্মে ফেরানো যাচ্ছে না রোহিতকে। তিন ম্যাচে ২১ রান করেছেন। দেশের জার্সিতে এমনিতেই তাঁর জায়গা টলমল। খারাপ ফর্ম চলতে থাকলে মুম্বইয়ের দল থেকেও না বাদ পড়েন!
অভিষেক শর্মা (৩ ম্যাচে ৩১ রান)
গত মরসুমে অভিষেককে রাতারাতি শিরোনামে এনেছিল হায়দরাবাদের হয়ে তাঁর অতি আগ্রাসী ব্যাটিং। শুরু থেকেই যে ভাবে খেলেন, তার প্রশংসা করেছিলেন অনেকেই। একার হাতে অনেক ম্যাচ জিতিয়েছেন অভিষেক। ভারতীয় দলেও ডাক পেয়েছেন। তরুণ ব্যাটারকে ১৪ কোটি টাকা দিয়ে ধরে রাখে হায়দরাবাদ। তবে এ মরসুমে তাঁর ব্যাট থেকে রান উধাও। তিন ম্যাচে ৩১ রান তারই প্রমাণ। ট্রেভিস হেড রান পেলেও সঙ্গী অভিষেক বার বার ব্যর্থ হচ্ছেন। দলে আর এক ওপেনার ঈশান কিশন থাকায় চাপও বাড়ছে পঞ্জাবের ব্যাটারের।
রিঙ্কু সিংহ (৩ ম্যাচে ২৯ রান)
২০২৩ সালে পাঁচ ছক্কা রিঙ্কুকে বিখ্যাত করেছিল। তার পরে ভারতীয় দলের হয়ে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ধারাবাহিক ভাবে খেলছেন। মহানিলামে তাঁকে ১৩ কোটি টাকায় ধরে রাখে কেকেআর। তবে এ বার রিঙ্কুর ব্যাট চলছে না। আগের ম্যাচে পাওয়ার প্লে-তে ব্যাট করতে নেমেছিলেন। সুযোগ ছিল বড় রান করার। রিঙ্কু সে কাজে ব্যর্থ হয়েছেন।