Ben Stokes

চার বছর আগের হেডিংলে ফেরাতে পারলেন না স্টোকস, কিন্তু ‘বিগ বেন’ মন জিতলেন প্রতিপক্ষেরও

চার বছর আগের হেডিংলে টেস্টের স্মৃতি ফেরাতে পারলেন না বেন স্টোকস। দলকে জেতাতে পারলেন না তিনি। কিন্তু প্রতিপক্ষেরও মন জিতে নিলেন ইংরেজ অধিনায়ক।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৩ ২০:৪০
Ben Stokes with Steve Smith

লর্ডসে দ্বিতীয় ইনিংসে আউট হয়ে ফিরছেন বেন স্টোকস (বাঁ দিকে)। তাঁর পিঠ চাপড়ে দিচ্ছেন স্টিভ স্মিথ। ছবি: রয়টার্স

জনি বেয়ারস্টো যখন আউট হয়ে ফিরছেন তখনও জেতার জন্য ১৭৮ রান দরকার ইংল্যান্ডের। ক্রিজে বেন স্টোকস ছাড়া কোনও প্রথম সারির ব্যাটার নেই। বাকিরা সবাই নীচের সারির ব্যাটার। তাঁদের নিয়েই লড়াই শুরু করলেন স্টোকস। প্রথম গিয়ার থেকে সরাসরি পৌঁছে গেলেন পঞ্চম গিয়ারে। অস্ট্রেলিয়ার পেসারদের বিরুদ্ধে রুদ্রমূর্তি ধারণ করলেন তিনি। দর্শকদের মনে পড়ে যাচ্ছিল চার বছর আগের হেডিংলে। সেখানে একাই ইংল্যান্ডকে জিতিয়েছিলেন স্টোকস। কিন্তু এ বার আর তা পারলেন না ‘বিগ বেন’। ২১৪ বলে ১৫৫ রানের ইনিংস খেলেও দলকে জেতাতে পারলেন না তিনি। কিন্তু প্রতিপক্ষের মন জয় করে নিলেন স্টোকস। তিনি যখন আউট হয়ে ফিরছেন তখন প্যাট কামিংস, স্টিভ স্মিথরা ছুটে এসে পিঠ চাপড়ে দিলেন স্টোকসের। দর্শকেরা উঠে দাঁড়িয়ে হাততালি দিয়ে ধন্যবাদ জানালেন। লড়াইয়ের জন্য ইংরেজ অধিনায়ককে কুর্নিশ জানালেন তাঁরা।

বেয়ারস্টো আউট হওয়ার সময় স্টোকসের রান ছিল ১২৬ বলে ৬২। পরের ৮৮ বলে ৯৩ রান করলেন স্টোকস। শুধু রান করা নয়, যে ভাবে স্টোকস রান করলেন সেটাই আসল। শুরু করেছিলেন ক্যামেরন গ্রিনকে দিয়ে। গ্রিনের এক ওভারে ২৪ রান করেন তিনি। পর পর তিন বলে তিনটি ছক্কা মারেন স্টোকস। তার মধ্যে তাঁর একটি ক্যাচ ছাড়েন মিচেল স্টার্ক। সেই ওভারেই ছক্কা মেরে নিজের শতরান করেন স্টোকস।

Advertisement

তার মধ্যেই অবশ্য স্টোকসের তিনটি ক্যাচও ছাড়েন অস্ট্রেলিয়ার ফিল্ডাররা। স্টার্ক ও অ্যালেক্স ক্যারের ক্যাচ কঠিন হলেও স্মিথের ক্যাচ সহজ ছিল। তিনি যে সেই ক্যাচ ছাড়বেন তা ভাবতে পারেননি কেউ। স্টোকসের ব্যাট থেকে একের পর এক শট বাউন্ডারিতে গিয়ে পড়ছিল আর গোটা লর্ডস জুড়ে চিৎকার হচ্ছিল। মধ্যাহ্নভোজের বিরতির পরেও ধ্বংসলীলা চালাচ্ছিলেন স্টোকস। অন্য দিকে নিজের উইকেট ধরে রেখেছিলেন স্টুয়ার্ট ব্রড। মাত্র ১০০ বলে তাঁদের মধ্যে শতরানের জুটি হয়। তার মধ্যে মাত্র ৯ রান ব্রডের। এই পরিসংখ্যানই বুঝিয়ে দিচ্ছে স্টোকস কেমন খেলেছেন।

শুধু বড় শট খেলা নয়, তার সঙ্গে ব্রডকে বাঁচিয়ে রাখছিলেন তিনি। ওভারের চার থেকে পাঁচটি বল খেলছিলেন তিনি। তার পর সিঙ্গল নিচ্ছিলেন, যাতে ব্রডকে বেশি বল খেলতে না হয়। জেতার লক্ষ্য ১০০-র নীচে নামার পরে বড় শট মারা কিছুটা কমান স্টোকস। তিনি বুঝতে পারছিলেন, জয়ের কাছে পৌঁছচ্ছেন। তাই তাড়াহুড়ো করতে চাইছিলেন না। কিন্তু জশ হেজলউডের একটি বলে লোভ সামলাতে পারলেন না। অফ স্টাম্পের বাইরের বল লেগে বড় শট খেলতে গেলেন। বল ব্যাটের কানায় লেগে উপরে উঠে গেল। ক্যাচ ধরলেন ক্যারে।

স্টোকস আউট হওয়ার পরে কিছু ক্ষণ ক্রিজেই দাঁড়িয়ে থাকেন। যেন বিশ্বাস করতে পারছেন না তিনি। তার পর যখন ধীরে ধীরে তিনি সাজঘরের দিকে ফিরছেন তখন স্মিথ, কামিংসরা এসে পিঠ চাপড়ে দেন স্টোকসের। প্রশংসা করেন তাঁর ব্যাটিংয়ের। দলকে জেতাতে না পারলেও সবার মন জিতে নিলেন ইংল্যান্ডের অধিনায়ক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement