— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
সব ঠিক থাকলে ভারতের ক্রিকেট ম্যাচের সম্প্রচার স্বত্বে তৈরি হতে চলেছে ইতিহাস। এই প্রথম বার টিভির সম্প্রচার স্বত্বের থেকেও বেশি দাম রাখা হয়েছে ডিজিটাল সম্প্রচার স্বত্বের। আইপিএলের আগে সম্প্রচার স্বত্বের নিলাম নিয়ে যে ভাবে কাড়াকাড়ি হয়েছে তা থেকেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বোর্ড। দ্বিপাক্ষিক সিরিজ়ের সম্প্রচার স্বত্বের ক্ষেত্রেও টিভি এবং ডিজিটালকে আলাদা রাখা হয়েছে।
সূত্রের খবর অনুযায়ী, বোর্ড সদ্যপ্রকাশিত টেন্ডারে দু’টি প্যাকেজ রাখা হয়েছে। প্রথম প্যাকেজে ভারতীয় উপমহাদেশে টিভিতে ম্যাচ দেখানোর জন্য ম্যাচ পিছু ন্যুনতম ২০ কোটি টাকা দর রাখা হয়েছে। দ্বিতীয় প্যাকেজে বিশ্বব্যাপী ডিজিটাল স্বত্ব এবং অবশিষ্ট বিশ্বের সম্প্রচার স্বত্বের জন্য ২৫ কোটি টাকা ন্যুনতম মূল্য রাখা হয়েছে। অর্থাৎ প্রতিটি ম্যাচ থেকে বোর্ড অন্তত ৪৫ কোটি টাকা করে পাবে।
তুলনামূলক ভাবে, আইপিএলের সময় টিভির ক্ষেত্রে ম্যাচ পিছু ৪৯ কোটি এবং ডিজিটালের ক্ষেত্রে ম্যাচ পিছু ৩৩ কোটি টাকা করে রাখা হয়েছিল। কিন্তু দ্বিপাক্ষিক সিরিজ়ে অত চাহিদা থাকে না। তাই বোর্ড ন্যুনতম মূল্য কমই রেখেছে। পাশাপাশি যাতে অনেক বেশি সংস্থা বিড তুলতে আগ্রহ দেখায় তার ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
কিন্তু চমক অন্য জায়গায়। লোকের হাতে হাতে স্মার্টফোন এবং ইন্টারনেট থাকায় অনেক বেশি লোক মোবাইলে খেলা দেখতে চান। ফলে ডিজিটাল স্বত্বের দামও লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে। তুলনায় টিভিতে খেলা দেখেন অনেক কম লোক। ফলে সেখানে সম্প্রচার স্বত্বের মূল্য বিশেষ বাড়েনি।
আগামী পাঁচ বছরে ৮৮টি ম্যাচ খেলবে ভারত। প্রতিটি ম্যাচের জন্য ৪৫ কোটি টাকা হিসাবে সর্বমোট ন্যুনতম মূল্য রাখা হয়েছে ৩,৯৬০ কোটি টাকা। কিন্তু সংস্থার সূত্রে খবর, ম্যাচ পিছু ৬০ কোটি টাকার কমে রাজি নয় বোর্ড। কোনও সংস্থা যদি একই সঙ্গে দুটি স্বত্ব নিতে চায়, সে ক্ষেত্রে ম্যাচ পিছু অন্তত ৬০ কোটি টাকা করে দিতেই হবে। না হলে বোর্ডের অধিকার রয়েছে কোনও সংস্থার বিড বাতিল করে দেওয়ার।
অনেকেরই প্রশ্ন, গত পাঁচ বছরে সম্প্রচার স্বত্বের মালিক ডিজ়নি বোর্ডকে ৬,১৩৮ কোটি টাকা দিয়েছিল। এ বার তা হলে মূল্য কম কেন? বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ভারতে টিভি সম্প্রচারের অবস্থা মোটেও ভাল নয়। মূলত তিনটি সংস্থা সম্প্রচার স্বত্ব পেতে ঝাঁপাবে। তারা হল ডিজ়নি স্টার, ভায়াকম ১৮ এবং সোনি পিকচার্স। কিন্তু প্রতিটি সংস্থাই লোকসানের মুখে। সোনি এবং জি সংস্থা দু’টি আগামী দিনে মিশে যেতে পারে। অন্য দিকে, ওয়াল্ট ডিজ়নি ভারতে তাদের ব্যবসা বিক্রি করে দিতে পারে। তাই দাম কম রাখা হয়েছে।
যদিও বিশেষজ্ঞরা এটাও জানাচ্ছেন, ন্যুনতম মূল্য কম রাখা হয়েছে মানেই দাম কম উঠবে এমনটা ভুল। কেউ কেউ বলছেন, সর্বমোট মূল্য ৯ হাজার থেকে ১০ হাজার কোটি টাকা ছুঁতে পারে। অর্থাৎ ম্যাচ পিছু ১০০ কোটি টাকাও আয় হতে পারে বোর্ডের।