পাকিস্তান-আফগানিস্তান ম্যাচে হাতাহাতিতে জড়ান দু’দলের ক্রিকেটাররা। —ফাইল চিত্র
পাকিস্তান হারতেই উল্লাস শুরু হল আফগানিস্তানে। কাবুলের রাস্তায় বেরিয়ে পড়লেন কাতারে কাতারে মানুষ। বাবর আজমদের হারে নেচে-গেয়ে, বাজি পুড়িয়ে আনন্দ করলেন তাঁরা।
কাবুলের রাস্তায় আফগানদের উল্লাসের ভিডিয়ো প্রকাশ হয়েছে নেটমাধ্যমে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, রাস্তার মধ্যে এক জোট হয়ে দাঁড়িয়ে নাচছেন আফগানরা। আট থেকে আশি, সব বয়সের মানুষই যোগ দিয়েছেন উৎসবে। আলোর রোশনাই দেখা যাচ্ছে। অনেকের আবার চোখে জল। তবে সেটা দুঃখের নয়। পাকিস্তান হেরে যাওয়ায় আনন্দে কাঁদছেন তাঁরা।
#Afghans Celebrations in Capital #Kabul , #Afghanistan to celebrate Sri Lanka's victory over Pakistan in the #AsiaCup2022Final . pic.twitter.com/8ZnFkN5aKv
— Abdulhaq Omeri (@AbdulhaqOmeri) September 11, 2022
কিন্তু পাকিস্তানের হারে আফগানদের এত উল্লাসের কারণ কী?
এর পিছনে রয়েছে দু’দেশের ক্রিকেটীয় রেষারেষির ইতিহাস। শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালের এক দিনের বিশ্বকাপের সময়। পাকিস্তান-আফগানিস্তান ম্যাচে মাঠের বাইরে হাতাহাতিতে জড়ান দু’দেশের সমর্থকরা। ২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ চলাকালীনও দেখা যায় একই ছবি। এ বারের এশিয়া কাপে সেই রেষারেষি আরও বেড়েছে।
এশিয়া কাপের সুপার ফোর-এর খেলায় আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে পাকিস্তান রান তাড়া করার সময় ১৯তম ওভারের পঞ্চম বলে দুই দলের ক্রিকেটারদের মধ্যে মারপিট শুরু হয়। ফরিদ আহমেদের বলে হুক করে ছয় মারতে যান আসিফ আলি। কিন্তু ব্যর্থ হন। সেই বলে ক্যাচ ধরেন করিম জনত। আসিফ আউট হতেই তাঁর সামনে গিয়ে ঘুসি মারার ইঙ্গিত করেন ফরিদ। তাতেই রেগে যান আসিফ। তিনিও ব্যাট উঁচিয়ে তাঁকে মারার ইঙ্গিত করেন। পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাওয়ার আগেই আফগানিস্তানের অন্য ক্রিকেটাররা চলে আসেন। তাঁরা ফরিদকে সরিয়ে নিয়ে যান। আসিফ বেরিয়ে যেতে যেতেও কিছু বলতে থাকেন। সেই অবস্থায় তাঁকে ঠান্ডা করেন হাসান আলি। তিনি মাঠে এসে শান্ত হতে বলেন ফরিদকেও। পরিস্থিতি সামলে নেন তাঁরা। নইলে মাঠের মধ্যেই একে অপরের গায়ে হাত তুলে দেওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়ে গিয়েছিল। পরিস্থিতি সামলাতে ছুটে আসেন আম্পায়াররাও।
ম্যাচের ঝামেলা গড়ায় গ্যালারিতে। পাকিস্তানের সমর্থকদের অভিযোগ, খেলা শেষে আফগান সমর্থকরা তাঁদের মারধর করেন। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ শোয়ের আখতার একহাত নেন আফগান সমর্থকদের। প্রাক্তন পাক ক্রিকেটার নেটমাধ্যমে লেখেন, ‘এই তো আফগান সমর্থকদের অবস্থা। দেখুন, এরা কী করছে। আগেও ওরা বহু বার এ রকম করেছে। খেলাটাকে খেলার মতো করে দেখা উচিত। শফিক স্টানিকজাই (আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের প্রাক্তন কর্তা), আপনি দেখুন, আপনার ক্রিকেটার আর সমর্থকরা কী কাণ্ড করছে। খেলায় উন্নতি করতে চাইলে সবার আগে এদের সহবত শেখান।’ আখতারকে পাল্টা দেন শফিক। হুঁশিয়ারি দেন, এর পরে যেন ক্রিকেটের মধ্যে দেশকে নিয়ে না আসেন আখতার। আফগান সমর্থকদের আচরণের নিন্দা করেন রামিজ রাজাও। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘ক্রিকেটের মধ্যে গুন্ডামি বরদাস্ত করা হবে না।’’ সেই বিতর্কের রেশ যে এখনও কাটেনি তা বুঝিয়ে দিলেন আফগান সমর্থকরা।