রোহিত শর্মা এবং বাবর আজ়ম। —ফাইল চিত্র।
পর পর দুই ম্যাচ জিতে আত্মবিশ্বাসী ভারত এবং পাকিস্তান দল। বিশ্বকাপে শনিবার মুখোমুখি হবে দুই দল। সেই ম্যাচে লড়াই হবে ক্রিকেটীয় দক্ষতার। আফগানিস্তান ম্যাচ জিতেই রোহিত শর্মা বলে দিয়েছেন, অন্য যে কোনও দলের বিরুদ্ধে খেলার মতোই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে খেলবেন। আলাদা কোনও গুরুত্ব দেওয়া হবে না। মাঠের লড়াইয়ে কোন কোন ক্রিকেটারের সঙ্গে টক্কর হবে প্রতিপক্ষের? দেখে নেওয়া যাক পাঁচ লড়াই।
রোহিত বনাম শাহিন
বাঁহাতি পেসারের বিরুদ্ধে রোহিত শর্মার কিছুটা দুর্বলতা রয়েছে। এশিয়া কাপে যদিও শাহিন আফ্রিদিকে সামলেই অর্ধশতরান করেছিলেন রোহিত। বাঁহাতি পেসারদের বল ডানহাতি ব্যাটার রোহিতের জন্য ভিতরে ঢুকে আসে। ঠিক সময় ব্যাট না নামাতে পারলে এলবিডব্লিউ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। আর যদি উইকেটের সামনে ব্যাট বা পা না আসে তাহলে বোল্ডও হতে পারেন। শাহিনের বলে গতি রয়েছে। তরুণ পেসার অনেক সময় অফ স্টাম্পের বাইরে বল করে রোহিতকে শট খেলার লোভ দেখাতে পারেন। সেই ফাঁদে পা দিলে রোহিত উইকেটের পিছনে ক্যাচ দিতে পারেন। তবে আইসিসি প্রতিযোগিতা মানেই রোহিতের ফর্ম তুঙ্গে। গত বারের বিশ্বকাপে পাঁচটি শতরান করেছিলেন। এ বারের বিশ্বকাপে ইতিমধ্যেই আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে শতরান করেছেন। রোহিতের ব্যাট চলতে শুরু করলে যে কোনও বোলারেরই লাইন, লেংথ ঘেঁটে যেতে পারে।
বিরাট বনাম হাসান
এ বারের বিশ্বকাপে ইতিমধ্যেই ৬ উইকেট নিয়েছেন হাসান আলি। পাকিস্তানের অভিজ্ঞ পেসার দলে সুযোগ পেয়েছেন নাসিম শাহ চোট পেয়ে ছিটকে যাওয়ায়। সেই সুযোগ কাজে লাগানোর চেষ্টা করছেন হাসান। তাঁর সঙ্গে লড়াই হতে পারে বিরাটের। পর পর দু’ম্যাচেই রান পেয়েছেন ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক। এশিয়া কাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে শতরান করেছিলেন বিরাট। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপেও বড় রান করার চেষ্টায় থাকবেন তিনি। বড় ম্যাচে ভারতীয় ব্যাটিংয়ের সব থেকে বড় ভরসা যে বিরাটই। নিজেকে প্রমাণ করতে নামা হাসান এই বিশ্বকাপে বিরাটের উইকেট নেওয়ার লক্ষ্যে থাকবেন।
রিজ়ওয়ান বনাম বুমরা
পাকিস্তানের মিডল অর্ডারে বড় ভরসা মহম্মদ রিজ়ওয়ান। তাঁকে রান করতে দিলে মুশকিল হবে ভারতের। স্পিন খেলতে যথেষ্ট স্বচ্ছন্দ রিজ়ওয়ানের বিরুদ্ধে তাই রোহিতদের পরিকল্পনা হতে পারে বুমরাকে খেলানো। মাঝের ওভারে বুমরাকে বল করান রোহিত। তাই রিজ়ওয়ান নামলে বুমরাকে খেলাতে পারে ভারত। নিখুঁত ইয়র্কার বা গতির হেরফেরে রিজ়ওয়ানকে বিপদে ফেলে দিতে পারেন বুমরা। চোট সারিয়ে ফিরে দুরন্ত ফর্মে রয়েছেন তিনি। এখনও পর্যন্ত বিশ্বকাপে ৬ উইকেট নিয়েছেন বুমরা। পাকিস্তান ম্যাচে ভারতের জেতার জন্য তাঁর উইকেট পাওয়া জরুরি।
বাবর বনাম শামি
এ বারের বিশ্বকাপে ফর্মে নেই বাবর আজ়ম। কিন্তু তিনি এক দিনের ক্রিকেটে আইসিসির ক্রমতালিকায় এক নম্বরে ব্যাটার। দ্রুত রানে ফিরতে চাইবেন বাবর। যদিও ভারত চাইবে না আমদাবাদের ম্যাচে পাক অধিনায়ক রান করুক। সেই কারণে এই ম্যাচে দেখা যেতে পারে মহম্মদ শামিকে। বাবরের আউটসুইং খেলতে সমস্যা হয়। শামির ক্ষমতা রয়েছে বল দু’দিকে সুইং করানোর। তাই বাবরকে সমস্যায় ফেলতে সেরা অস্ত্র হতে পারেন শামি। এই বিশ্বকাপে প্রথম দু’টি ম্যাচে মহম্মদ সিরাজ প্রচুর রান দিয়েছেন। তাঁর জায়গায় যদি আমদাবাদে শামি সুযোগ পান তা হলে নিজেকে প্রমাণ করার তাগিদ থাকবে বাংলার পেসারের মধ্যে। বাবরও চাইবেন এই ম্যাচে ফর্মে ফিরতে। কারণ ভারতের বিরুদ্ধে রান করলে আত্মবিশ্বাস বেড়ে যাবে বাবরের।
হার্দিক বনাম শাদাব
লড়াই হতে পারে ভারত এবং পাকিস্তানের দুই অলরাউন্ডারের মধ্যে। হার্দিক পেস বল করেন। শাদাব ব্যাট করতে নামলে তাঁকে সামলাতে হতে পারে হার্দিকের পেস। আবার শাদাব স্পিনার। হার্দিক ব্যাট করার সময় পাকিস্তানের হয়ে বল করতে পারেন তিনি। দুই দলের সহ-অধিনায়কদের লড়াই দেখার জন্য মুখিয়ে থাকবেন সমর্থকেরা। আমদাবাদ হার্দিকের ঘরের মাঠ। আইপিএলেও গুজরাত টাইটান্সের হয়ে এই মাঠেই খেলেন হার্দিক। তাঁর কাছে আমদাবাদের মাঠ যথেষ্ট পরিচিত। সেই মাঠে শুধু শাদাব নন, পাকিস্তান দলের অনেকের কাছেই কঠিন হতে পারে হার্দিককে সামলানো।