ব্রিজভূষণ শরণ সিংহ। —ফাইল চিত্র
ভারতীয় কুস্তি সংস্থার নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন প্রক্রিয়া শেষ। ১৫টি পদের জন্য ৩০ জন প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ১৮ জন কুস্তি সংস্থার বিদায়ী সভাপতি ব্রিজভূষণ শরণ সিংহের শিবিরের। বাকি ১২ জন বিরোধী শিবিরের। তালিকায় রয়েছেন ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে হেনস্থার মামলার অন্যতম মহিলা সাক্ষী।
সোমবার দিল্লির অলিম্পিক্স ভবনে গিয়ে মনোনয়ন জমা দেন সবাই। প্রথমেই যান ব্রিজভূষণ শিবিরের প্রার্থীরা। কনভয় নিয়ে শোরগোল করতে করতে সেখানে যান তাঁরা। এ বারের নির্বাচনে লড়তে পারবেন না ব্রিজভূষণ ও তাঁর ছেলে। তাঁর পরিবারের কেউ যে নির্বাচনে দাঁড়াচ্ছেন না তা আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন কুস্তি কর্তা তথা বিজেপি সাংসদ ব্রিজভূষণ। তাঁর শিবিরের হয়ে সভাপতি পদে মনোনয়ন দিয়েছেন দিল্লি কুস্তি সংস্থার সভাপতি জয় প্রকাশ ও উত্তর প্রদেশ কুস্তি সংস্থার সঞ্জয় সিংহ। সাধারণ সচিব পদে চণ্ডীগড় কুস্তি সংস্থার দর্শন লাল ও কোষাধ্যক্ষ পদে উত্তরাখণ্ড কুস্তি সংস্থার এসপি দেশওয়াল মনোনয়ন জমা দিয়েছেন।
সভাপতি পদের জন্য ব্রিজভূষণের শিবির থেকে কেন দু’জন মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন জয়। তিনি বলেন, ‘‘আমরা জেতার বিষয়ে নিশ্চিত। তাড়াহুড়ো থাকায় দু’জন নাম দিয়েছি। আমাদের মধ্যে কে শেষ পর্যন্ত লড়বে তা আগামী কয়েক দিনের মধ্যে ঠিক করে নেব। সবার সম্মতি নিয়েই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বাকি যে সব পদে আমাদের দু’জন করে প্রার্থী রয়েছে তাদের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম মেনে চলা হবে। আলোচনা করে এক জনকেই নির্বাচনে দাঁড় করানো হবে।’’
নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসার নিযুক্ত হয়েছেন জম্মু ও কাশ্মীর হাই কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি মহেশ মিত্তল কুমার। তিনি বলেন, ‘‘সভাপতি পদের জন্য চার জন, সিনিয়র সহ-সভাপতি পদের জন্য তিন জন, সহ-সভাপতি পদের জন্য ছ’জন, সাধারণ সচিব পদের জন্য তিন জন, কোষাধ্যক্ষের জন্য দু’জন, যুগ্মসচিব পদের জন্য তিন জন ও কর্মসমিতির সদস্য পদে ন’জন মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। ১৫টি পদের জন্য ৩০ জন মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। ভারতীয় কুস্তি সংস্থার ওয়েবসাইটে সবার নাম দিয়ে দেওয়া হবে। নির্বাচনে এক জন মহিলা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। তিনি সভাপতি পদে লড়বেন। ৭ অগস্ট মনোনয়ন প্রত্যাহার করার শেষ দিন।’’
একমাত্র মহিলা প্রার্থীর নাম অনিতা শেওরান। তিনি ওড়িশা কুস্তি সংস্থার প্রতিনিধি। ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে এক নাবালিকা-সহ ছয় মহিলা কুস্তিগির যে হেনস্থার অভিযোগ তুলেছেন সেই মামলায় সাক্ষী অনিতা। মনোনয়ন জমা দিতে গিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি তিনি। সোমবার ব্রিজভূষণের শিবিরের প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দিয়ে ফিরে যাওয়ার ৪৫ মিনিট পরে তিনি গিয়ে মনোনয়ন জমা দেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন রেলওয়ে স্পোর্টস প্রোমোশন বোর্ডের সচিব প্রেমচন্দ লোছাব। তিনি গুজরাত কুস্তি সংস্থার প্রতিনিধি। ছিলেন জম্মু ও কাশ্মীর কুস্তি সংস্থার প্রতিনিধি দুষ্মন্ত শর্মাও। তাঁরাও মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। প্রেমচন্দ সাধারণ সচিব এবং দুষ্মন্ত সহ-সভাপতি ও কোষাধ্যক্ষ পদে লড়বেন। ব্রিজভূষণের বিরোধী শিবির থেকে সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন হরিয়ানার এক হোটেল ব্যবসায়ী দেবেন্দ্র কাদিয়ান।
মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় ব্রিজভূষণ না থাকলেও প্রার্থীদের সঙ্গে ছিলেন তাঁর জামাই বিশাল সিংহ। তিনি বিহার কুস্তি সংস্থার প্রতিনিধি ও বিজেপি নেতা। বিশাল নিজে ভোটে দাঁড়াননি। মনোনয়ন জমা দেওয়ার পরে বিশাল বলেন, ‘‘আমাদের তরফে ১৮ জন মনোনয়ন জমা দিয়েছে। ব্রিজভূষণ তো লড়ছেন না। তাই ওঁর আসার দরকার ছিল না। ২২টি রাজ্য সংস্থা আমাদের সঙ্গে রয়েছে। তাই আমাদের কোনও ভয় নেই। যা সমর্থন আমরা পাচ্ছি তাতে আমাদের সবাই জিতবে। আমরা চাই স্বচ্ছ নির্বাচন হোক।’’ ১২ অগস্ট হবে কুস্তি সংস্থার নির্বাচন।