—ফাইল চিত্র।
গত সাত বছরে এক বারও পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ হয়নি আমেরিকায়। সোমবারের গ্রহণ নিয়ে আমেরিকার বিভিন্ন প্রদেশে তাই আলাদা উন্মাদনা তৈরি হয়েছে। চারদিকে সাজ সাজ রব। নাসার তরফেও একাধিক বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে গ্রহণ দেখার। আগ্রহীরা এই বিরল মুহূর্তের সাক্ষী থাকতে তোড়জোড় করছেন।
নাসার তরফে গ্রহণ উপলক্ষে চারটি নতুন প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়েছে। নির্দিষ্ট উচ্চতা থেকে গ্রহণ দেখার জন্য বিশেষ গবেষণামূলক বিমান পাঠানো হয়েছে আকাশে। নাসার ডব্লিউবি-৫৭ উচ্চ উচ্চতাসম্পন্ন গবেষণা বিমানটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৫০ হাজার ফুট উপরে থাকবে। ওই বিমান থেকে গ্রহণ চলাকালীন সূর্যের করোনা স্তর পর্যবেক্ষণ করবেন বিজ্ঞানীরা। এ ছাড়া আমেরিকার বিভিন্ন প্রান্তে গ্রহণ দেখার জন্য বিবিধ বন্দোবস্ত করা হয়েছে। রয়েছে স্কাইডাইভিংয়ের ব্যবস্থাও।
সূর্য এবং পৃথিবী ঘুরতে ঘুরতে যখন এক সরলরেখায় চলে আসে এবং তাদের মাঝখানে ওই একই সরলরেখায় যখন ঢুকে পড়ে চাঁদ, তখন সূর্যগ্রহণ হয়। চাঁদের ছায়ায় সূর্য পুরোপুরি ঢেকে গেলে সেই অবস্থাকে বলে পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ। সোমবারের গ্রহণের বিশেষত্ব হল এর স্থায়িত্ব। গ্রহণের সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি বেশ কয়েক ঘণ্টা ধরে চলবে। তবে চাঁদ সূর্যকে সম্পূর্ণ ঢেকে রাখবে চার মিনিট। এই সময়ে পৃথিবীর বুকে নেমে আসবে অন্ধকার। চাঁদের ছায়ায় সূর্যের ঢেকে থাকার এই সময়সীমা আগের অনেক গ্রহণের তুলনায় অনেক বেশি। বিজ্ঞানীরা বলছেন, গত ৫০ বছরে এত দীর্ঘ সময় ধরে পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ হয়নি। তাই সোমবারের গ্রহণকে কেন্দ্র করে আমেরিকায় আলাদা উন্মাদনা রয়েছে।
সোমবার ভারতীয় সময় রাত ১১.৩৭ মিনিটে গ্রহণ শুরু হবে। আমেরিকায় তখন সকাল ১১.৭ মিনিট। গ্রহণ চলবে ভারতীয় সময় রাত ১.১৬ পর্যন্ত। আমেরিকান সময় অনুযায়ী গ্রহণ শেষ হবে বিকেল ৫.১৬ মিনিটে। আমেরিকায় শেষ বার সূর্যের পূর্ণগ্রাস গ্রহণ দেখা গিয়েছিল ২০১৭ সালের ২১ অগস্ট।
উত্তর আমেরিকা থেকে গ্রহণ স্পষ্ট দেখা যাবে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। আমেরিকার বিভিন্ন প্রদেশ, মেক্সিকো এবং কানাডা থেকে গ্রহণ দেখা যাবে। কানাডার নায়াগ্রা জলপ্রপাতের সামনে গ্রহণ দেখার জন্য গত কয়েক দিন ধরে কাতারে কাতারে মানুষ ভিড় করেছেন। নায়াগ্রাকে সুস্পষ্ট ভাবে গ্রহণ দেখার অন্যতম ভাল স্থান বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। অনেকেই তাই দূরদূরান্ত থেকে সেখানে পৌঁছেছেন। ভিড় সামাল দিতে নায়াগ্রা প্রশাসন জরুরি অবস্থা জারি করতে বাধ্য হয়েছে।
ভারত থেকে গ্রহণ দেখা যাবে না। কারণ যে সময়ে এই গ্রহণ হবে, তখন ভারতে রাত চলবে। আকাশে থাকবে না সূর্য। তবে শুধু ভারত নয়, পৃথিবীর যে কোনও প্রান্ত থেকেই যাতে গ্রহণ দেখা যায়, তার ব্যবস্থা করেছে নাসা। গ্রহণের সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছে তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে।