Omicron

Omicron: ডেল্টার মতো ফুসফুস ফুঁড়তে পারছে না, কোষ থেকে কোষে যেতেও ততটা দড় নয় ওমিক্রন: গবেষণা

গবেষণাটি করেছেন ‘কেমব্রিজ ইনস্টিটিউট ফর থেরাপিউটিক ইমিউনোলজি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস’-এর বিজ্ঞানীরা। গবেষণাপত্রটি প্রকাশের অপেক্ষায়।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০২১ ১২:১৮
সবক’টি পর্বের টিকা নেওয়ার পর মানবদেহে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডিগুলিকে কিন্তু দক্ষতার সঙ্গেই ধোঁকা দিতে পারছে ওমিক্রন। -ফাইল ছবি।

সবক’টি পর্বের টিকা নেওয়ার পর মানবদেহে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডিগুলিকে কিন্তু দক্ষতার সঙ্গেই ধোঁকা দিতে পারছে ওমিক্রন। -ফাইল ছবি।

ডেল্টা বা করোনাভাইরাসের অন্য রূপগুলির মতো ফুসফুসের কোষগুলির ভিতরে চট করে ঢুকে পড়তে পারছে না ওমিক্রন। মানবদেহে একটি কোষ থেকে অন্য কোষে যাওয়ার ক্ষেত্রেও করোনাভাইরাসের অন্য রূপগুলির মতো দড় নয় ওমিক্রন। ওমিক্রনে সংক্রমিত হলে কোভিড কেন ভাইরাসের অন্য রূপগুলির সংক্রমণের চেয়ে কম ভয়াবহ হয়ে উঠছে, কেন মৃত্যুর সংখ্যা তুলনায় কম হচ্ছে, এটাই হতে পারে তার সম্ভাব্য কারণ।

সাম্প্রতিক একটি গবেষণা এই খবর দিয়েছে। গবেষণাটি করেছেন ‘কেমব্রিজ ইনস্টিটিউট ফর থেরাপিউটিক ইমিউনোলজি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস’-এর বিজ্ঞানীরা। পিয়ার রিভিউ পর্যায় পেরিয়ে গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হতে চলেছে একটি আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকায়।

Advertisement

কেন দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইংল্যান্ডে ওমিক্রনে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে কোভিড ডেল্টা সংক্রমণের মতো ততটা ভয়াবহ হয়ে উঠছে না তা বোঝার ক্ষেত্রে এই গবেষণা পথ দেখাতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।

যদিও এই গবেষণার ফলাফলই জানিয়েছে, সবক’টি পর্বের টিকা নেওয়ার পর মানবদেহে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডিগুলিকে কিন্তু দক্ষতার সঙ্গেই ধোঁকা দিতে পারছে ওমিক্রন। কিন্তু ফুসফুসে চট করে ঢুকে পড়তে পারছে না। তাই কোভিড ততটা ভয়াবহ হয়ে উঠছে না। ডেল্টা বা করোনাভাইরাসের অন্যান্য রূপের সংক্রমণের তুলনায় তাই মৃত্যুর সংখ্যা কম হচ্ছে।

পরীক্ষাটি চালানো হয়েছে অবশ্য শুধুই গবেষণাগারে। কোনও কোভিড রোগীর উপর সেই পরীক্ষা এখনও করে দেখেননি গবেষকরা।

অন্যতম গবেষক কেমব্রিজ ইনস্টিটিউট ফর থেরাপিউটিক ইমিউনোলজি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস-এর ক্লিনিক্যাল মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক রবীন্দ্র গুপ্ত একটি বিবৃতিতে জানিয়েছেন, সবক’টি পর্বের টিকা নেওয়ার পরেও মানবদেহে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডিগুলির প্রতিরোধ ক্ষমতা ছয় থেকে ন’মাসের মধ্যে কমে যাচ্ছে ওমিক্রনকে রোখার ব্যাপারে। তবে ফাইজারের বুস্টার টিকা ওমিক্রনের সংক্রমণ রোখার ক্ষেত্রে যথেষ্ট সফল হচ্ছে।

রবীন্দ্রের কথায়, ‘‘গবেষণায় আমরা দেখেছি ওমিক্রনের তরবারির দু’টি দিক রয়েছে। একটি ভোঁতা। অন্য দিকটি খুব ধারালো। ভোঁতা দিকটির জন্য ওমিক্রন ফুসফুসের কোষগুলির ভিতরে ঢুকে পড়ে কোভিডকে ভয়াবহ করে তুলতে পারছে না। আর ধারালো দিকটির জন্য টিকা নেওয়ার পর তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডিগুলিকেও ধোঁকা দিতে পারছে ওমিক্রন। ফলে, সংক্রমণ রোখা মুশকিল হচ্ছে।’’

গবেষকরা কৃত্রিম ভাবে তৈরি করা ওমিক্রন রূপটি নিয়ে কাজ করেছেন গবেষণাগারে। কে এগিয়ে কে পিছিয়ে তা বুঝতে তাঁরা ডেল্টার স্পাইক প্রোটিন নিয়ে কৃত্রিম ভাবে ডেল্টা রূপটি তৈরি করে তার উপরেও পরীক্ষানিরীক্ষা চালান গবেষণাগারে।

গবেষকরা এ-ও দেখেছেন কোষে ঢুকে তার প্রাচীর ফাটিয়ে দিয়ে বেরিয়ে আসার ক্ষেত্রেও ডেল্টার দক্ষতার ধারেকাছে ঘেঁষতে পারছে না ওমিক্রন। তার ফলেও ওমিক্রনের সংক্রমণে ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারছে না কোভিড ডেল্টার মতো।

আরও পড়ুন
Advertisement