জলের ধোঁয়া বেরিয়ে আসছে বৃহস্পতির চাঁদ ইউরোপা থেকে। ছবি- নাসার সৌজন্যে।
কেটলি বা হাঁড়িতে জল ফুটলে যেমন হয়, ঠিক তেমনটাই দেখা গেল বৃহস্পতির একটি চাঁদ- ‘ইউরোপা’-তে।
দেখা গেল অত্যন্ত উষ্ণ জলের ধোঁয়া উঠে আসছে বৃহস্পতির ওই চাঁদের একটি দিক থেকে। সেই ধোঁয়া এতটাই ঘন যে, মনে হচ্ছে যেন ধোঁয়ার মেঘ। আদতে যা জলীয় বাস্পের মেঘ।
নাসা বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, এই ঘটনা নজরে এসেছে মহাকাশে থাকা হাব্ল টেলিস্কোপের।
গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘জিওফিজিক্যাল রিসার্চ লেটার্স’-এ।
দেখা গিয়েছে, একনাগাড়ে অত্যন্ত উষ্ণ জলের ধোঁয়া বেরিয়ে আসছে ইউরোপা থেকে। তবে যেটা খুব বিস্ময়কর, সেই জলের ধোঁয়া বৃহস্পতির চাঁদটির বিশেষ একটি দিক থেকেই বেরিয়ে আসতে দেখা গিয়েছে। কেন শুধু সেই দিকটি থেকেই জলের ধোঁয়া বেরিয়ে আসতে দেখা যাচ্ছে, তা নিয়ে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের কৌতূহল মেটেনি। জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের বক্তব্য, এই ঘটনা ইউরোপায় প্রাণের অস্তিত্বের সম্ভাবনাকে আরও জোরদার করে তুলল।
ইউরোপার পুরু বরফে মোড়া পিঠের নীচে যে সুবিশাল জলের অসংখ্য সাগর ও মহাসাগর এখনও রয়েছে বহাল তবিয়তে, কয়েক বছর ধরে তা বিভিন্ন গবেষণায় জানানো হয়েছে। সেই সব সাগর ও মহাসাগরে প্রাণের অস্তিত্ব নিয়ে জোরালো বিশ্বাস রয়েছে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের। তাঁরা মনে করেন সূর্য থেকে ৫০ কোটি মাইল দূরে ইউরোপায় এখনও প্রাণ টিকে রয়েছে ওই সব সাগর ও মহাসাগরগুলিতে।
১৯৯৯ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ চালিয়ে বৃহস্পতির দু’টি চাঁদ ইউরোপা আর গ্যানিমিদ-এর পুরু বরফে মোড়া পিঠের নীচে জলের সাগর ও মহাসাগর থাকার প্রমাণ মিলেছে ইতিমধ্যেই। এর আগে ২০১৩ সালেও হাব্ল টেলিস্কোপ দেখেছিল ইউরোপার একটি অংশ থেকে বেরিয়ে আসছে অত্যন্ত উষ্ণ জলের ধোঁয়া। কিন্তু এ বার সেই জলের ধোঁয়া আরও অনেক বড় এলাকা থেকে বেরিয়ে আসতে দেখা গিয়েছে।
গ্যানিমিদের পিঠের তাপমাত্রার চেয়ে ইউরোপার পিঠের তাপমাত্রা বেশ কম। তার পরেও কী ভাবে অত্যন্ত উষ্ণ জলের ধোঁয়া বেরিয়ে আসছে ইউরোপা থেকে, আর সেই ঘটনা কী ভাবে লাগাতার ঘটে চলেছে, তা নিয়ে বিজ্ঞানীদের কৌতূহল মেটেনি।
বরং এই আবিষ্কার ইউরোপায় প্রাণের অস্তিত্বের সম্ভাবনাকে আরও জোরদার করে তুলল বলেই মনে করছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।