সূর্যের আরও কাছাকাছি আদিত্য-এল১। ছবি: ইসরো।
পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির টান কাটিয়ে কক্ষপথ থেকে বেরিয়ে নতুন ঠিকানার আরও কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে আদিত্য-এল১। পৃথিবী এবং সূর্যের মধ্যবর্তী ল্যাগরেঞ্জ পয়েন্ট ১-এর থেকে দূরত্ব কমে এসেছে সৌরযানের। ইসরো জানিয়েছে, ল্যাগরেঞ্জ পয়েন্ট১ বা এল১ পয়েন্টের চারদিকে হ্যালো কক্ষপথ থেকে সৌরযানটি কাজ করবে যা পৃথিবী থেকে ১৫ লক্ষ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
এল১ থেকে এল৫ পর্যন্ত মোট পাঁচটি পয়েন্ট রয়েছে ল্যাগরেঞ্জ পয়েন্টে। এই পয়েন্টগুলি ত্রিমাত্রিক। কিন্তু পাঁচটি পয়েন্টের মধ্যে এল১ পয়েন্টকেই কেন বেছে নেওয়া হয়েছে? বিজ্ঞানীদের দাবি, পৃথিবী এবং সূর্যের মধ্যবর্তী এল১ পয়েন্ট থেকে মহাজাগতীয় বস্তু নিপুণ ভাবে পর্যবেক্ষণ করা যাবে। ল্যাগরেঞ্জ পয়েন্টও মহাকাশে এমন জায়গায় বিরাজ করে যেখানে দু’টি বড় আকারের বস্তুর মাধ্যাকর্ষণ শক্তি আকারে ছোট অপর একটি বস্তুর সাহায্যে কেন্দ্রাভিমুখী বলের ভারসাম্য বজায় রাখে।
পৃথিবী থেকে দূরের কোনও মহাজাগতীয় বস্তুর দিকে আগেও মহাকাশযান পাঠিয়েছে ইসরো। এই নিয়ে পঞ্চম বার তারা মহাকাশযানকে পৃথিবীর কক্ষপথের বাইরে পাঠাতে সফল হল। এর আগে চন্দ্রযান-৩-এর ক্ষেত্রেও একই সাফল্য পেয়েছিলেন ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার বিজ্ঞানীরা।
গত ২ সেপ্টেম্বর অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান স্পেস রিসার্চ সেন্টার থেকে সূর্যের উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছিল আদিত্য-এল১। তার পর পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ বলের অধীনে তার চারপাশেই পাক খাচ্ছিল সৌরযানটি। পৃথিবীর কাছে মোট পাঁচটি কক্ষপথ বদলের পর অবশেষে টান কাটিয়ে বেরিয়ে যায় সেটি। সোমবার ভারতীয় সময় রাত ২টো নাগাদ আদিত্য-এল১ পঞ্চম কক্ষপথ পরিবর্তন করে পৃথিবীর টানের বাইরে বেরিয়ে যায় বলে নিজেদের এক্স হ্যান্ডলে (পূর্বতন টুইটার) লিখে জানায় ইসরো।
আদিত্য-এল১ সূর্য এবং পৃথিবীর মাঝের এল১ পয়েন্টে পৌঁছে সূর্যকে কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করবে। পৃথিবী থেকে তার দূরত্ব হবে ১৫ লক্ষ কিলোমিটার। সূর্য সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্য এর ফলে বিজ্ঞানীরা জানতে পারবেন বলে মনে করা হচ্ছে। সূর্যের করোনা, ফোটোস্ফিয়ার এবং ক্রোমোস্ফিয়ার সম্পর্কেও অনেক অজানা তথ্য পেতে পারে ইসরো।