ভাইফোঁটা ‘স্পেশ্যাল’ খাজা তৈরি করে ফেলতে পারেন বাড়িতেই। ছবি: তিতু'স কিচেন।
উৎসব আর মিষ্টি যেন একে অপরের পরিপূরক।
তা বলে সব অনুষ্ঠানে তো আর পাত সাজিয়ে রসগোল্লা কিংবা সন্দেশ ভরে দেওয়া যায় না। অনুষ্ঠানের গুরুত্ব বুঝে তৈরি করা হয় ‘বিশেষ’ মিষ্টি। দিন-মাহাত্ম্য আর ক্রেতাদের চাহিদা বুঝে সেই মিষ্টির দামও চড়তে থাকে। তবে আগে বিশেষ কোনও উৎসব-অনুষ্ঠানে বাড়িতে সেই সব বিশেষ মিষ্টি তৈরি করার রেওয়াজ ছিল। বিজয়া কিংবা লক্ষ্মীপুজো উপলক্ষে প্রায় সব বাড়িতেই নারকেল নাড়ু, চন্দ্রকলার মতো মিষ্টি তৈরি হত। আর ভাইফোঁটার আগের দিন বাড়িতে বানানো হত গোলাপি টিপ দেওয়া ‘স্পেশ্যাল’ খাজা।
এখন সময় বাড়ন্ত। তাই ‘ফোঁটা’র নিয়মেও কাটছাঁট করা হয়েছে। আন্তরিকতার অভাব না থাকলেও খাবারদাবারের পাঠ বেশির ভাগটাই ‘রেডিমেড’ হয়ে গিয়েছে। পুরনো মিষ্টির বদলে ভাইদের প্লেটে জায়গা করে নিয়েছে দোকান থেকে কেনা নানা ধরনের ‘ফিউশন’ খাবার। কিন্তু এখনও অনেকেই ভাইফোঁটার আগের দিন মিষ্টির দোকানে গিয়ে হারাতে বসা এই খাজার খোঁজ করেন। ভাইফোঁটা ‘স্পেশ্যাল’ হলেও এখন আর খুব সহজে এই মিষ্টি চোখে পড়ে না। তবে একটু কষ্ট করলে এই খাজা বাড়িতেই বানিয়ে ফেলা যায়। রইল প্রণালী।
কী ভাবে তৈরি করবেন ভাইফোঁটার বিশেষ খাজা?
উপকরণ:
৫০০ গ্রাম: ময়দা
এক চিমটে: নুন
৬ টেবিল চামচ: ঘি
৪ টেবিল চামচ: কর্নফ্লাওয়ার
২৫০ গ্রাম: চিনি
এক চিমটে: লাল রং (ফুড কালার)
৪ কাপ: সাদা তেল
প্রণালী:
১) প্রথমে বড় একটি পাত্রে ময়দা এবং নুন ভাল করে মিশিয়ে নিন।
২) ময়দার সঙ্গে গলানো ঘি দিয়ে ভাল করে মিশিয়ে নিন। খেয়াল রাখতে হবে ঘি মাখানো ময়দা যেন ঝুরঝুরে হয়।
৩) এ বার পরিমাণ মতো জল দিয়ে ময়দা মেখে নিতে হবে। ময়দা মাখার সময়ে খেয়াল রাখতে হবে, তা যেন খুব বেশি পাতলা না হয়। ময়দা মেখে রেখে দিন মিনিট পনেরো।
৪) অন্য একটি পাত্রে কর্নফ্লাওয়ার এবং ঘি ভাল করে মিশিয়ে রাখতে হবে। মিশ্রণ খুব ঘন কিংবা খুব পাতলা হবে না।
৫) এ বার কড়াইয়ে চিনি এবং পরিমাণ মতো জল দিয়ে বানিয়ে নিন সিরা।
৬) মেখে রাখা ময়দা আরও এক বার আরও এক বার ভাল করে মেখে, একটু বড় করে লেচি কেটে নিতে হবে। ময়দা ছড়িয়ে একেবারে পাতলা করে বেলে নিন।
৭) ময়দার পাতলা আস্তরণের উপর কর্নফ্লাওয়ার এবং ঘিয়ের মিশ্রণ ভাল করে মাখিয়ে নিন।
৮) এ বার ওই পাতলা ময়দার স্তরের এক প্রান্ত থেকে সরু করে পাকিয়ে নিন। বেশ লম্বা একটা রোল তৈরি হবে।
৯) ছুরি দিয়ে সেই রোল থেকে খাজা তৈরির লেচি কেটে নিন। লেচি একটু বড় করে কাটতে হবে।
১০) এ বার দু’হাতের তালুর মধ্যে লেচি রেখে চাপ দিয়ে বেলার মতো আকার দিন। খেয়াল রাখবেন লেচির ভিতর ময়দার স্তরগুলি যেন স্পষ্ট থাকে।
১১) অল্প ময়দা ছড়িয়ে এক এক করে লেচি বেলে নিন। দেখতে অনেকটা লুচির মতোই হবে। কিন্তু ততটা পাতলা হবে না। বেলে নেওয়ার পরেও ভিতরের স্তরগুলি দেখা যাবে।
১২) বেলা হয়ে গেলে ময়দার পরতের ঠিক মাঝখানে লাল বা গোলাপি রঙের একটি বিন্দু এঁকে দিন।
১৩) কড়াইয়ে সাদা তেল গরম করতে দিন। এ বার একে একে খাজা ভেজে তুলুন। গ্যাসের আঁচ একেবারে ঢিমে থাকবে।
১৪) এ বার ভেজে নেওয়া খাজা চিনির সিরায় ডুবিয়েই তুলে নিতে হবে। তা বেশি ক্ষণ রেখে দেওয়ার প্রয়োজন নেই। শুধু খেয়াল রাখতে হবে যেন খাজার প্রতিটি পরতে চিনির সিরা প্রবেশ করতে পারে।
১৫) সিরায় ডোবানো খাজাগুলি অন্য একটি প্লেটে সাজিয়ে বেশ কিছু ক্ষণ রেখে দিতে হবে। অন্তত ঘণ্টা তিনেক রাখতে পারলেও ভাল হয়। রস শুকিয়ে গেলেই কাজ শেষ।