শখে রাঁধলে অন্য কথা, নচেৎ ভোগের পোড়া শোলে পেঁয়াজ-রসুন ব্রাত্য। ছবি: কুকপ্যাড.কম।
দীপান্বিতা অমাবস্যায় পূজিতা হন কালী। রাতভর পুজোর পাশাপাশি দেবীকে অর্পণ করা হয় নানা রকমের ভোগ। ভাত, পোলাও, নানা রকম সব্জি, পায়েস, মিষ্টির সঙ্গে অনেক জায়গায় মা কালীকে নিবেদন করা হয় মাছের নানা রকম পদও। পেঁয়াজ-রসুন ছাড়া কাতলা বা রুই মাছের ‘নিরামিষ’ পদ যেমন থাকে, তেমনই থাকে পোড়া শোল এবং চুনোমাছের টক। সাধনপীঠ তারাপীঠের দেবীর ভোগে পোড়া শোল নিবেদন করার চল শুরু হলেও তা পরে নানা জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। তার নেপথ্যে দীর্ঘ ইতিহাসও রয়েছে।
যজ্ঞের আগুনে গোটা শোল মাছ পুড়িয়ে সাধারণত নুন, মশলা ছাড়াই তা দেবীকে নিবেদন করা হয়। তবে কোনও কোনও বনেদি বাড়ির পুজোয় নিয়ম মেনে শোল মাছ পোড়ানো হলেও তার মধ্যে দেওয়া হয় সামান্য কিছু মশলাও। সঙ্গে থাকে চুনোমাছের টক। এই দু’টি পদ খুব সহজেই বাড়িতে রেঁধে ফেলা যায়। প্রণালী রইল এখানে।
পোড়া শোল রাঁধবেন কী ভাবে?
উপকরণ:
১টি: শোল মাছ
৩ টেবিল চামচ: কাঁচালঙ্কা কুচি
২ টেবিল চামচ: লেবুর রস
২ টেবিল চামচ: ধনেপাতা কুচি
এক চিমটে: হলুদ গুঁড়ো
৪ টেবিল চামচ: সর্ষের তেল
প্রণালী:
১) প্রথমে শোল মাছটিকে ভাল করে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিন।
২) এ বার গোটা মাছে সামান্য হলুদ, সর্ষের তেল এবং লেবুর রস মাখিয়ে বেশ কিছু ক্ষণ রেখে দিন।
৩) মাটির উনুন থাকলে ভাল হয়। যদি তা না থাকে, সে ক্ষেত্রে তার পর গ্যাসের উপর গ্রিল করার জালতি বসিয়ে নিন।
৪) এ বার গোটা মাছটির এ পিঠ-ও পিঠ ভাল করে পুড়িয়ে নিন। চাইলে গোটা মাছটিকে কলাপাতা বা অ্যালুমিনিয়াম ফয়েলে মুড়িয়ে তার পর পোড়াতে পারেন।
৫) কাঁচালঙ্কা, ধনেপাতা মিহি করে কুচিয়ে নিতে হবে। চাইলে পেঁয়াজ কুচি দিতে পারেন। কিন্তু ভোগের জন্য রাঁধলে পেঁয়াজ একেবারেই ব্রাত্য।
৬) শোল মাছের গা থেকে পোড়া চামড়া তুলে ফেলে দিতে হবে। কাঁটা ছাড়িয়ে, হাত দিয়ে মাছটা ভাল করে মেখে নিতে পারেন।
৭) উপর থেকে সামান্য তেল, ধনেপাতা এবং কাঁচালঙ্কা কুচি ছড়িয়ে দিলেই কাজ শেষ।
চুনোমাছের টক রাঁধবেন কী ভাবে?
উপকরণ:
২০০ গ্রাম চুনো মাছ
২ টেবিল চামচ তেঁতুলের ক্বাথ
আধ চা চামচ কালোজিরে
আধ চা চামচ জিরে গুঁড়ো
আধ চা চামচ হলুদ গুঁড়ো
স্বাদ অনুযায়ী নুন
২-৩টি কাঁচালঙ্কা
প্রয়োজন অনুযায়ী সর্ষের তেল
প্রণালী:
১) প্রথমে মাছগুলো ধুয়ে নুন, হলুদ মাখিয়ে রাখুন।
২) তার পর কড়াইয়ে সর্ষের তেল গরম হলে মাছগুলো ভেজে তুলে নিন।
৩) ওই তেলের মধ্যে কালোজিরে, শুকনো লঙ্কা ফোড়ন দিন।
৪) এ বার তার মধ্যে তেঁতুলের ক্বাথ দিয়ে ঢেলে দিন। ভাল করে নাড়াচাড়া করে নুন, হলুদ, জিরে, কাঁচালঙ্কা দিয়ে দিন। প্রয়োজনে সামান্য একটু জলও দেওয়া যেতে পারে।
৫) ঝোল ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিয়ে দিন।
৬) মিনিট দুয়েক ফুটিয়ে উপর থেকে সর্ষের তেল ছড়িয়ে নামিয়ে নিন।