নবমীতে কী কী খাবেন অপরাজিতা? গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
খাদ্যরসিক মানুষ অভিনেত্রী অপরাজিতা আঢ্য। প্রিয় খাবারের প্রসঙ্গ উঠলেই অভিনেত্রীর চোখের সামনে ভেসে ওঠে ফুলকো লুচি আর সাদা আলুর তরকারি। এ খাবার তাঁর কাছে অমৃতের সমান। সারা বছর পছন্দের খাবারের তালিকায় লুচি-তরকারি থাকে সবার উপরে। পুজোর সময় তাই মেনুতে এই খাবারটি না রাখলেই নয়। খাবার নিয়ে সমস্ত পরীক্ষানিরীক্ষা বাড়িতেই করতে ভালবাসেন তিনি। রেস্তরাঁর খাবার খুব একটা মুখে রোচে না তাঁর। খাবারের নুন, চিনি, ঝালের মাত্রা একেবারে ‘পারফেক্ট’ হওয়া চাই, এমনই মত অভিনেত্রীর। তাই বাড়িতে ভালমন্দ রান্না করতে হলে সেই দায়িত্ব নিজের কাঁধেই তুলে নেন তিনি। অপরাজিতা বলেন, ‘‘পুজোর ক’দিন নবরাত্রি পালন করি। তাই সারা বছর রান্না করলেও, পুজোর সময় হেঁশেলে ঢোকার সময় হয় না। মহালয়া থেকে নবমী পর্যন্ত রোজ চণ্ডীপাঠ করি। নবমীতে চণ্ডীপাঠ শেষ করে হোম হয় বাড়িতে। ওই সময় হেঁশেলের দায়িত্ব সামলান শাশুড়িমা। তিনি আমার কাছে দশভুজা।”
পুজোর সময় যত স্পেশ্যাল খাওয়াদাওয়া, সব হয় অপরাজিতার বাড়িতেই। তাঁকেই যদি দেওয়া হয় আনন্দবাজার অনলাইনের পাঠকদের জন্য মেনুকার্ড বানানোর দায়িত্ব? ধরুন যদি নবমীর সকাল থেকে রাতের জমকালো খাওয়াদাওয়ার পরিকল্পনা করতে হল, তা হলে কী কী থাকবে অপরাজিতার মেনুতে? প্রশ্ন শুনে উত্তর দিতে খুব বেশি সময় নিলেন না অভিনেত্রী।
লুচিপ্রেমী অপরাজিতা নবমীর প্রাতরাশে ‘ফুলকো লুচি’ ছাড়া ভাবতেই পারেন না। সঙ্গে সাদা আলুর তরকারি। অপরাজিতা বলছেন, ‘‘আলুর তরকারি না হলে সঙ্গে চলতে পারে মুগ ভেজানো। আগের দিন রাতে ভিজিয়ে রাখা মুগডালের সঙ্গে নারকেল কোরা, কাঁচালঙ্কা কুচি, নুন, চিনি দিয়ে মেখে নিয়ে লুচির সঙ্গে খেতে দারুণ লাগে। এই খাবারটি ঠাকুরের ভোগেও পরিবেশন করা হয়। তার সঙ্গে রসগোল্লা আর জিলিপি পেলে তো কথাই নেই।”
পুজোর ক’টা দিন একেবারে ঘরবন্দি হয়ে কাটাতেই ভালবাসেন অপরাজিতা। একান্নবর্তী পরিবারে সকলের সঙ্গে সময় কাটানোর আদর্শ সময়টি তিনি মিস্ করতে চান না। সঙ্গে পুজোপাঠ আর খাওয়াদাওয়া। নবমীর দিন নিরামিষ নয়, দুপুরের ভোজে অনেকেই মাছ খান। অপরাজিতা বলেন, ‘‘নবমীর দুপুরে গরম ভাতের সঙ্গে সোনামুগের ডাল, নারকেল ভাজা, ঝুরি আলুভাজা, কাতলার কালিয়া আর মিষ্টি দই-চিংড়ি রাখা যায় মেনুতে। বাগদা চিংড়ির সঙ্গে মিষ্টি দইয়ের মেলবন্ধনে তৈরি হয় জিভে জল আনা এই পদ। সর্ষের তেল আর ঘি গরম করে তাতে পেঁয়াজ, রসুন আর আদা বাটা কষিয়ে নিয়ে খুব ভাল করে ফেটানো মিষ্টি দই দিয়ে দিতে হবে। তার পর অল্প গুঁড়ো মশলা দিয়ে খানিক ক্ষণ কষিয়ে সামান্য জল দিয়ে ভেজে রাখা বাগদা চিংড়িগুলি দিয়ে ফুটিয়ে নিন। শেষে ঘি আর গরমমশলা গুঁড়ো ছড়িয়ে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে মিষ্টি দই-চিংড়ি। শেষপাতে চাটনি, পাঁপড়, সন্দেশ, ব্যস আর কী চাই!’’
নবমীর সন্ধ্যাবেলায় বাড়িতে অতিথি এলে তাঁকে মিষ্টির সঙ্গে নোনতামুখও করাতে হবে। অপরাজিতা বললেন, ‘‘বিকেলে বাড়িতে অতিথি এলে রেস্তরাঁর রোল-চাউমিন-মোমো না দিয়ে বাড়িতে তৈরি নারকেল কুচি ছড়ানো নিরামিষ ঘুগনি, কুচো নিমকি, মিষ্টি জিভেগজা পরিবেশন করাই যায়।”
নবমীর রাতে আর মাছ নয়! নবমীতে পাতে একটু কচি পাঁঠা না পড়লে কি চলে? অপরাজিতার পরামর্শ, ‘‘কষা মাংস আর লাচ্চা পরোটা দিয়েই সারতে পারেন নৈশভোজ। সারা দিনের ভূরিভোজের পর রাতের মিষ্টিটা না হয় বাদই রাখলেন।” তবে যাঁরা নিরামষ খেতে চান, তাঁরা লাচ্চা পরোটার সঙ্গে চেখে দেখতে পারেন ঝাল ঝাল নিরামিষ আলুর দম।