Bengaluru Water Crisis

জলযন্ত্রণায় ভুগছে ‘হ্রদের শহর’, জল নেই মাটির নীচেও! ‘ডে জ়িরো’র দিকে এগোচ্ছে বেঙ্গালুরু?

শুধুমাত্র বেঙ্গালুরুতেই প্রায় ৩০০০ নলকূপের জল শুকিয়ে গিয়েছে। রাজস্ব বিভাগের একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, জল নিয়ে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মুখে কর্নাটকের তুমাকুরু জেলা। এ ছাড়াও রয়েছে উত্তর কন্নড়ের জেলাগুলি।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২৪ ০৭:৫৯
০১ ১৭
২০১৮ সাল। ভয়ানক আকার নিয়েছিল কেপ টাউনের খরা পরিস্থিতি। মারাত্মক সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিলেন শহরের প্রায় ৪০ লক্ষ বাসিন্দা। ২০১৮-র জানুয়ারি মাসে কেপ টাউন পুরসভা সে বছরেরই ১২ মে তারিখটিকে ‘ডে-জ়িরো’ হিসেবে চিহ্নিত করে। অর্থাৎ, সে দিন থেকে শহরের কোনও কলে আর জল পড়বে না।

২০১৮ সাল। ভয়ানক আকার নিয়েছিল কেপ টাউনের খরা পরিস্থিতি। মারাত্মক সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিলেন শহরের প্রায় ৪০ লক্ষ বাসিন্দা। ২০১৮-র জানুয়ারি মাসে কেপ টাউন পুরসভা সে বছরেরই ১২ মে তারিখটিকে ‘ডে-জ়িরো’ হিসেবে চিহ্নিত করে। অর্থাৎ, সে দিন থেকে শহরের কোনও কলে আর জল পড়বে না।

০২ ১৭
বিশেষজ্ঞদের মতে, একই অবস্থা হতে চলেছে ভারতের অন্যতম তথ্যপ্রযুক্তি নগরী বেঙ্গালুরুর। পানীয় জল তো বটেই, দৈনন্দিন কাজে প্রয়োজনীয় জলের জন্য ইতিমধ্যেই হাহাকার পড়ে গিয়েছে ভারতের সিলিকন ভ্যালিতে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, একই অবস্থা হতে চলেছে ভারতের অন্যতম তথ্যপ্রযুক্তি নগরী বেঙ্গালুরুর। পানীয় জল তো বটেই, দৈনন্দিন কাজে প্রয়োজনীয় জলের জন্য ইতিমধ্যেই হাহাকার পড়ে গিয়েছে ভারতের সিলিকন ভ্যালিতে।

০৩ ১৭
পরিস্থিতি এতটাই ভয়ানক পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, এক বালতি জল কিনে আনতে হচ্ছে হাজার-দু’হাজার টাকার বিনিময়ে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে সেই দামও ছাপিয়ে যাচ্ছে। গত কয়েক দিন ধরে বেঙ্গালুরুতে এমনই জলযন্ত্রণার ছবি উঠে আসছে।

পরিস্থিতি এতটাই ভয়ানক পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, এক বালতি জল কিনে আনতে হচ্ছে হাজার-দু’হাজার টাকার বিনিময়ে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে সেই দামও ছাপিয়ে যাচ্ছে। গত কয়েক দিন ধরে বেঙ্গালুরুতে এমনই জলযন্ত্রণার ছবি উঠে আসছে।

Advertisement
০৪ ১৭
তবে মজার বিষয় হল, যে বেঙ্গালুরু বর্তমানে জলসঙ্কটে ভুগছে, সেই বেঙ্গালুরুই এক সময় পরিচিত ছিল ‘সিটি অফ লেকস’ নামে (যদিও বেঙ্গালুরু বর্তমানে সেই তকমা হারিয়েছে। বর্তমানে রাজস্থানের উদয়পুর ‘সিটি অফ লেকস’ নামে পরিচিত)।

তবে মজার বিষয় হল, যে বেঙ্গালুরু বর্তমানে জলসঙ্কটে ভুগছে, সেই বেঙ্গালুরুই এক সময় পরিচিত ছিল ‘সিটি অফ লেকস’ নামে (যদিও বেঙ্গালুরু বর্তমানে সেই তকমা হারিয়েছে। বর্তমানে রাজস্থানের উদয়পুর ‘সিটি অফ লেকস’ নামে পরিচিত)।

০৫ ১৭
শহরের আনাচকানাচে বহু হ্রদ থাকায় এমন তকমা পেয়েছিল বেঙ্গালুরু। মনে করা হয়, এক সময় শহরে প্রায় ২৮৫টি হ্রদ ছিল। এর মধ্যে প্রাকৃতিক হ্রদের পাশাপাশি বেঙ্গালুরুর প্রতিষ্ঠাতা কেম্পে গৌড়ার নির্দেশে নির্মিত অনেকগুলি জলাধারও ছিল।

শহরের আনাচকানাচে বহু হ্রদ থাকায় এমন তকমা পেয়েছিল বেঙ্গালুরু। মনে করা হয়, এক সময় শহরে প্রায় ২৮৫টি হ্রদ ছিল। এর মধ্যে প্রাকৃতিক হ্রদের পাশাপাশি বেঙ্গালুরুর প্রতিষ্ঠাতা কেম্পে গৌড়ার নির্দেশে নির্মিত অনেকগুলি জলাধারও ছিল।

Advertisement
০৬ ১৭
তা হলে কেন এমন অবস্থা হল বেঙ্গালুরুর? বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, যে বেঙ্গালুরুতে এক সময় প্রায় ৩০০ হ্রদ ছিল, তার অনেকগুলি বর্তমানে ‘উন্নয়নের জোয়ারে’ বুজে গিয়েছে।

তা হলে কেন এমন অবস্থা হল বেঙ্গালুরুর? বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, যে বেঙ্গালুরুতে এক সময় প্রায় ৩০০ হ্রদ ছিল, তার অনেকগুলি বর্তমানে ‘উন্নয়নের জোয়ারে’ বুজে গিয়েছে।

০৭ ১৭
জলস্তরও দিনে দিনে নেমেছে বেঙ্গালুরুর। বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, কংক্রিটের স্তূপের নীচে চাপা পড়েছে বেঙ্গালুরুর মাটি। ফলে বৃষ্টির জলও মাটির নীচ পর্যন্ত পৌঁছতে পারছে না।

জলস্তরও দিনে দিনে নেমেছে বেঙ্গালুরুর। বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, কংক্রিটের স্তূপের নীচে চাপা পড়েছে বেঙ্গালুরুর মাটি। ফলে বৃষ্টির জলও মাটির নীচ পর্যন্ত পৌঁছতে পারছে না।

Advertisement
০৮ ১৭
 বিশেষজ্ঞেরা উল্লেখ করেছেন, ভূগর্ভস্থ জলস্তর কমে যাওয়ার পাশাপাশি, বেঙ্গালুরুর জল সরবরাহের অব্যবস্থাও এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী।

বিশেষজ্ঞেরা উল্লেখ করেছেন, ভূগর্ভস্থ জলস্তর কমে যাওয়ার পাশাপাশি, বেঙ্গালুরুর জল সরবরাহের অব্যবস্থাও এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী।

০৯ ১৭
এ ছাড়াও রয়েছে বৃষ্টিপাতের অভাব, শহরের মাত্রাতিরিক্ত জনসংখ্যা, নির্মাণকাজে জলের অতিরিক্ত ব্যবহার এবং জলের চাহিদা বৃদ্ধির মতো কারণ।

এ ছাড়াও রয়েছে বৃষ্টিপাতের অভাব, শহরের মাত্রাতিরিক্ত জনসংখ্যা, নির্মাণকাজে জলের অতিরিক্ত ব্যবহার এবং জলের চাহিদা বৃদ্ধির মতো কারণ।

১০ ১৭
জলস্তর কমে যাওয়ায় বেঙ্গালুরু-সহ কর্নাটকের হাজার হাজার নলকূপের জলও শুকিয়ে গিয়েছে। আর সেই সব কারণ মিলিয়েই এই বিপত্তি হয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা।

জলস্তর কমে যাওয়ায় বেঙ্গালুরু-সহ কর্নাটকের হাজার হাজার নলকূপের জলও শুকিয়ে গিয়েছে। আর সেই সব কারণ মিলিয়েই এই বিপত্তি হয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা।

১১ ১৭
বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, গ্রীষ্মের মরসুমে বেঙ্গালুরুর জল সমস্যা আরও বৃদ্ধি পাবে। হাহাকার আরও বাড়বে।

বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, গ্রীষ্মের মরসুমে বেঙ্গালুরুর জল সমস্যা আরও বৃদ্ধি পাবে। হাহাকার আরও বাড়বে।

১২ ১৭
হিসাব বলছে, শুধুমাত্র বেঙ্গালুরুতেই প্রায় ৩০০০ নলকূপের জল শুকিয়ে গিয়েছে। রাজস্ব বিভাগের একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, জল নিয়ে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মুখে কর্নাটকের তুমাকুরু জেলা। এ ছাড়াও রয়েছে উত্তর কন্নড়ের জেলাগুলি।

হিসাব বলছে, শুধুমাত্র বেঙ্গালুরুতেই প্রায় ৩০০০ নলকূপের জল শুকিয়ে গিয়েছে। রাজস্ব বিভাগের একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, জল নিয়ে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মুখে কর্নাটকের তুমাকুরু জেলা। এ ছাড়াও রয়েছে উত্তর কন্নড়ের জেলাগুলি।

১৩ ১৭
প্রতিবেদন অনুযায়ী, বেঙ্গালুরু আরবান জেলায় ১৭৪টি গ্রাম এবং ১২০টি ওয়ার্ডে জলের ঘাটতি দেখা গিয়েছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, বেঙ্গালুরু আরবান জেলায় ১৭৪টি গ্রাম এবং ১২০টি ওয়ার্ডে জলের ঘাটতি দেখা গিয়েছে।

১৪ ১৭
রাজ্য সরকার বেঙ্গালুরু-সহ কর্নাটকের এমন ৭০০টিরও বেশি গ্রাম চিহ্নিত করেছে যেগুলি গরম বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি তীব্র জলের সঙ্কটের সম্মুখীন হতে পারে।

রাজ্য সরকার বেঙ্গালুরু-সহ কর্নাটকের এমন ৭০০টিরও বেশি গ্রাম চিহ্নিত করেছে যেগুলি গরম বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি তীব্র জলের সঙ্কটের সম্মুখীন হতে পারে।

১৫ ১৭
যদিও সমস্যার সমাধানের জন্য, মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া, উপমুখ্যমন্ত্রী ডি কে শিবকুমার, মন্ত্রী এবং সরকারি আধিকারিকেরা বেঙ্গালুরুর জলসঙ্কট নিয়ে বৈঠকে বসেছেন।

যদিও সমস্যার সমাধানের জন্য, মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া, উপমুখ্যমন্ত্রী ডি কে শিবকুমার, মন্ত্রী এবং সরকারি আধিকারিকেরা বেঙ্গালুরুর জলসঙ্কট নিয়ে বৈঠকে বসেছেন।

১৬ ১৭
সঙ্কটের সঙ্গে মোকাবিলার জন্য কর্নাটক সরকার মোট ২১০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। যার মধ্যে ৭০ কোটি টাকা নতুন কূপ খননের জন্য খরচ করা হবে। জলসঙ্কটের মুখে থাকা গ্রামগুলিতেই খোঁড়া হবে নলকূপগুলি। জলসঙ্কটের মুখে জনসাধারণের জন্য জল ব্যবহারে কিছু নিষেধাজ্ঞাও জারি করেছে সরকার।

সঙ্কটের সঙ্গে মোকাবিলার জন্য কর্নাটক সরকার মোট ২১০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। যার মধ্যে ৭০ কোটি টাকা নতুন কূপ খননের জন্য খরচ করা হবে। জলসঙ্কটের মুখে থাকা গ্রামগুলিতেই খোঁড়া হবে নলকূপগুলি। জলসঙ্কটের মুখে জনসাধারণের জন্য জল ব্যবহারে কিছু নিষেধাজ্ঞাও জারি করেছে সরকার।

১৭ ১৭
‘ডে-জ়িরো’র ঘোষণা হতেই জল বাঁচানোর লড়াইয়ে নেমেছিল কেপটাউন। যুদ্ধে শামিল হয়েছিলেন সাধারণ মানুষ থেকে বড় বড় সংস্থাও। তাই সে শহরের জল পরিস্থিতি এখন অনেকটাই ভাল। কেপটাউনের মতো বেঙ্গালুরুও যুদ্ধে জিততে পারবে তো?

‘ডে-জ়িরো’র ঘোষণা হতেই জল বাঁচানোর লড়াইয়ে নেমেছিল কেপটাউন। যুদ্ধে শামিল হয়েছিলেন সাধারণ মানুষ থেকে বড় বড় সংস্থাও। তাই সে শহরের জল পরিস্থিতি এখন অনেকটাই ভাল। কেপটাউনের মতো বেঙ্গালুরুও যুদ্ধে জিততে পারবে তো?

সব ছবি: পিটিআই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও গ্যালারি