temple

Vishwanath Temple-Gyanvapi Mosque: শিবলিঙ্গ না কি ফোয়ারা, বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদের ওজুখানার কুয়োয় কোন রহস্য?

হিন্দুত্ববাদীদের দাবি, মুঘল সম্রাট অওরঙ্গজেব দু’হাজার বছরের পুরনো কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের একাংশ ধ্বংস করে সেখানে গড়েন জ্ঞানবাপী মসজিদ।

Advertisement
সংবাদ সংস্থা
বারাণসী শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০২২ ১৪:৪৪
০১ ১৭
দ্বাদশ শতকে ভারত আক্রমণকারী মহম্মদ ঘোরির সেনাপতি কুতুবউদ্দিন আইবকের (পরবর্তীকালে দিল্লির সুলতান) হাতেই না কি প্রথম আক্রান্ত হয়েছিল কাশীর আদি বিশ্বনাথ মন্দির। কয়েক বছর পর কাশীর বাসিন্দারা সংস্কার করেন মন্দিরটি।

দ্বাদশ শতকে ভারত আক্রমণকারী মহম্মদ ঘোরির সেনাপতি কুতুবউদ্দিন আইবকের (পরবর্তীকালে দিল্লির সুলতান) হাতেই না কি প্রথম আক্রান্ত হয়েছিল কাশীর আদি বিশ্বনাথ মন্দির। কয়েক বছর পর কাশীর বাসিন্দারা সংস্কার করেন মন্দিরটি।

০২ ১৭
হিন্দুত্ববাদীদের দাবি, সপ্তদশ শতকে (১৬৬৪ থেকে ’৬৯-এর মধ্যে) মুঘল সম্রাট অওরঙ্গজেব কাশীর বিশ্বনাথ মন্দির ধ্বংস করেছিলেন। আর সেই জমির একাংশে গড়ে তুলেছিলেন বর্তমান জ্ঞানবাপী মসজিদ।

হিন্দুত্ববাদীদের দাবি, সপ্তদশ শতকে (১৬৬৪ থেকে ’৬৯-এর মধ্যে) মুঘল সম্রাট অওরঙ্গজেব কাশীর বিশ্বনাথ মন্দির ধ্বংস করেছিলেন। আর সেই জমির একাংশে গড়ে তুলেছিলেন বর্তমান জ্ঞানবাপী মসজিদ।

০৩ ১৭
জ্ঞানবাপী মসজিদ লাগোয়া জমিতে এখন যে বিশ্বনাথ মন্দির রয়েছে তা অষ্টাদশ শতকের। মধ্যপ্রদেশের ইনদওরের হোলকার রাজবংশের রানি অহল্যাবাই ওই মন্দিরটি নির্মাণ করেছিলেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে।

জ্ঞানবাপী মসজিদ লাগোয়া জমিতে এখন যে বিশ্বনাথ মন্দির রয়েছে তা অষ্টাদশ শতকের। মধ্যপ্রদেশের ইনদওরের হোলকার রাজবংশের রানি অহল্যাবাই ওই মন্দিরটি নির্মাণ করেছিলেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে।

Advertisement
০৪ ১৭
ব্রিটিশ জমানায় জ্ঞানবাপীর জমিতে মন্দির গড়ার দাবি উঠেছিল। ১৯৩৬ সালে বারাণসীর আদালতে সেই আবেদন জানানো হলেও জ্ঞানবাপীতে নমাজের অধিকার বজায় থাকে রায়ে। ১৯৪২-এ ইলাহাবাদ হাই কোর্টও সেই রায় বহাল রেখেছিল।

ব্রিটিশ জমানায় জ্ঞানবাপীর জমিতে মন্দির গড়ার দাবি উঠেছিল। ১৯৩৬ সালে বারাণসীর আদালতে সেই আবেদন জানানো হলেও জ্ঞানবাপীতে নমাজের অধিকার বজায় থাকে রায়ে। ১৯৪২-এ ইলাহাবাদ হাই কোর্টও সেই রায় বহাল রেখেছিল।

০৫ ১৭
১৯৯১-এ সোমনাথ ব্যাস এবং রামরঙ্গ শর্মা নামে দুই আবেদনকারী জ্ঞানবাপী মসজিদে হিন্দুদের অধিকারের দাবিতে ফের বারাণসীর আদালতের দ্বারস্থ হন। দাবি জানান, ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের (এএসআই) তত্ত্বাবধানে সমীক্ষা ও ‘সত্য’ উদ্‌ঘাটনের।

১৯৯১-এ সোমনাথ ব্যাস এবং রামরঙ্গ শর্মা নামে দুই আবেদনকারী জ্ঞানবাপী মসজিদে হিন্দুদের অধিকারের দাবিতে ফের বারাণসীর আদালতের দ্বারস্থ হন। দাবি জানান, ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের (এএসআই) তত্ত্বাবধানে সমীক্ষা ও ‘সত্য’ উদ্‌ঘাটনের।

Advertisement
০৬ ১৭
জ্ঞানবাপী মসজিদের অন্দরের ‘পশ্চিমের দেওয়াল’ এবং ‘তহ্‌খানা’য় হিন্দু মন্দিরের নানা ‘চিহ্ন’ রয়েছে বলে দাবি করেছিল আবেদনকারী পক্ষ। পাশাপাশি, ওজুখানার জলাধারের নীচে প্রাচীন শিবলিঙ্গের উপস্থিতিরও দাবি জানানো হয়েছিল।

জ্ঞানবাপী মসজিদের অন্দরের ‘পশ্চিমের দেওয়াল’ এবং ‘তহ্‌খানা’য় হিন্দু মন্দিরের নানা ‘চিহ্ন’ রয়েছে বলে দাবি করেছিল আবেদনকারী পক্ষ। পাশাপাশি, ওজুখানার জলাধারের নীচে প্রাচীন শিবলিঙ্গের উপস্থিতিরও দাবি জানানো হয়েছিল।

০৭ ১৭
আদালতের নির্দেশে ৯৬-এর জুলাই মাসে মসজিদ চত্বরে সমীক্ষার কাজ চালানো হয়েছিল। সেই সমীক্ষার রিপোর্টও জমা পড়েছিল আদালতে। কিন্তু সেই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আনা হয়নি। হিন্দুত্ববাদীদের দাবি, তাতে মন্দিরের উপস্থিতির উল্লেখ রয়েছে।

আদালতের নির্দেশে ৯৬-এর জুলাই মাসে মসজিদ চত্বরে সমীক্ষার কাজ চালানো হয়েছিল। সেই সমীক্ষার রিপোর্টও জমা পড়েছিল আদালতে। কিন্তু সেই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আনা হয়নি। হিন্দুত্ববাদীদের দাবি, তাতে মন্দিরের উপস্থিতির উল্লেখ রয়েছে।

Advertisement
০৮ ১৭
বারাণসী আদালত ১৯৯৭ সালে ঘোষণা করে, ১৯৯১-এর ধর্মীয় উপাসনাস্থল (বিশেষ ব্যবস্থা) আইন অনুযায়ী জ্ঞানবাপী মসজিদ আবেদনকারী পক্ষকে (হিন্দু) দেওয়া সম্ভব নয়। সেখানে বর্তমান বন্দোবস্তই বহাল থাকবে।

বারাণসী আদালত ১৯৯৭ সালে ঘোষণা করে, ১৯৯১-এর ধর্মীয় উপাসনাস্থল (বিশেষ ব্যবস্থা) আইন অনুযায়ী জ্ঞানবাপী মসজিদ আবেদনকারী পক্ষকে (হিন্দু) দেওয়া সম্ভব নয়। সেখানে বর্তমান বন্দোবস্তই বহাল থাকবে।

০৯ ১৭
নরসিংহ রাওয়ের প্রধানমন্ত্রিত্বের সময় পাশ হওয়া ওই আইনের চার নম্বর ধারা বলছে, ১৯৪৭ সালের ১৫ অগস্টের আগে থেকে দেশে যে সব ধর্মীয় কাঠামো রয়েছে, তার চরিত্র কোনও ভাবেই পাল্টানো যাবে না।

নরসিংহ রাওয়ের প্রধানমন্ত্রিত্বের সময় পাশ হওয়া ওই আইনের চার নম্বর ধারা বলছে, ১৯৪৭ সালের ১৫ অগস্টের আগে থেকে দেশে যে সব ধর্মীয় কাঠামো রয়েছে, তার চরিত্র কোনও ভাবেই পাল্টানো যাবে না।

১০ ১৭
পরবর্তী সময়ে কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের দেবতা ‘স্বয়ম্ভূ জ্যোতির্লিঙ্গ ভগবান বিশ্বেশ্বর’-এর তরফে আইনজীবী বিজয়শঙ্কর র‌স্তোগী জ্ঞানবাপী মন্দিরের জমির দাবিতে ফের আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন।

পরবর্তী সময়ে কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের দেবতা ‘স্বয়ম্ভূ জ্যোতির্লিঙ্গ ভগবান বিশ্বেশ্বর’-এর তরফে আইনজীবী বিজয়শঙ্কর র‌স্তোগী জ্ঞানবাপী মন্দিরের জমির দাবিতে ফের আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন।

১১ ১৭
বিজয়শঙ্করের আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০২১-এর এপ্রিলে বারাণসী আদালত মসজিদ চত্বরে সমীক্ষার নির্দেশ দিয়েছিল। এএসআই-এর বিশেষজ্ঞ-সহ মোট পাঁচ জনের সমীক্ষক দলে অন্তত দু’জন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি থাকবেন বলে আদালত নির্দেশ দেয়।

বিজয়শঙ্করের আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০২১-এর এপ্রিলে বারাণসী আদালত মসজিদ চত্বরে সমীক্ষার নির্দেশ দিয়েছিল। এএসআই-এর বিশেষজ্ঞ-সহ মোট পাঁচ জনের সমীক্ষক দলে অন্তত দু’জন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি থাকবেন বলে আদালত নির্দেশ দেয়।

১২ ১৭
২০২১-এর অগস্টে পাঁচ হিন্দু মহিলা জ্ঞানবাপীর ‘মা শৃঙ্গার গৌরী’ (ওজুখানা ও তহখানা নামে পরিচিত) এবং  মসজিদের অন্দরের পশ্চিমের দেওয়ালে দেবদেবীর মূর্তির অস্তিত্বের দাবি করে তা পূজার্চনার অনুমতি চেয়েছিলেন বারাণসী আদালতে।

২০২১-এর অগস্টে পাঁচ হিন্দু মহিলা জ্ঞানবাপীর ‘মা শৃঙ্গার গৌরী’ (ওজুখানা ও তহখানা নামে পরিচিত) এবং মসজিদের অন্দরের পশ্চিমের দেওয়ালে দেবদেবীর মূর্তির অস্তিত্বের দাবি করে তা পূজার্চনার অনুমতি চেয়েছিলেন বারাণসী আদালতে।

১৩ ১৭
বারাণসী আদালতের বিচারক রবিকুমার দিবাকরের নির্দেশে তিন অ্যাডভোকেট কমিশনার, এএসআই-এর বিশেষজ্ঞ এবং যুযুধান দু’পক্ষের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে সমীক্ষা এবং ভিডিয়োগ্রাফির চূড়ান্ত রিপোর্ট ১৯ মে আদালতে জমা পড়ার কথা।

বারাণসী আদালতের বিচারক রবিকুমার দিবাকরের নির্দেশে তিন অ্যাডভোকেট কমিশনার, এএসআই-এর বিশেষজ্ঞ এবং যুযুধান দু’পক্ষের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে সমীক্ষা এবং ভিডিয়োগ্রাফির চূড়ান্ত রিপোর্ট ১৯ মে আদালতে জমা পড়ার কথা।

১৪ ১৭
ওজুখানার ওই জলাধারের একটি ছবি ইতিমধ্যেই সামনে এসেছে (আনন্দবাজার অনলাইন তার সত্যতা যাচাই করেনি)। তাতে জলাধারের মাঝে গম্বুজাকৃতি পাথরের অংশ দেখা যাচ্ছে। হিন্দুত্ববাদীদের দাবি সেটি প্রাচীন শিবলিঙ্গের অংশ।

ওজুখানার ওই জলাধারের একটি ছবি ইতিমধ্যেই সামনে এসেছে (আনন্দবাজার অনলাইন তার সত্যতা যাচাই করেনি)। তাতে জলাধারের মাঝে গম্বুজাকৃতি পাথরের অংশ দেখা যাচ্ছে। হিন্দুত্ববাদীদের দাবি সেটি প্রাচীন শিবলিঙ্গের অংশ।

১৫ ১৭
ঘটনাচক্রে, ওই জলাধারের ঠিক ৮৩ ফুট দূরে, পাঁচিলের ওপারে বিশ্বনাথ মন্দির চত্বরে রয়েছে নন্দীমূর্তি। যার মুখ ওজুখানার ওই গম্বুজাকৃতি পাথরের দিকেই। হিন্দুত্ববাদীদের দাবি, নন্দীমূর্তির মুখ সবসময় শিবলিঙ্গের দিকেই থাকে।

ঘটনাচক্রে, ওই জলাধারের ঠিক ৮৩ ফুট দূরে, পাঁচিলের ওপারে বিশ্বনাথ মন্দির চত্বরে রয়েছে নন্দীমূর্তি। যার মুখ ওজুখানার ওই গম্বুজাকৃতি পাথরের দিকেই। হিন্দুত্ববাদীদের দাবি, নন্দীমূর্তির মুখ সবসময় শিবলিঙ্গের দিকেই থাকে।

১৬ ১৭
মুসলিম পক্ষের দাবি, ওজুখানার পাথরের কাঠামো আদতে একটি ফোয়ারার নির্গমন মুখ। মুঘল যুগে তাজমহল-সহ অনেক স্থাপত্যেই ফোয়ারার উপস্থিতি রয়েছে। পুরনো বহু মসজিদেও নমাজের আগের ওজু করার (হাত-পা ধোওয়া) স্থানে ফোয়ারা রয়েছে।

মুসলিম পক্ষের দাবি, ওজুখানার পাথরের কাঠামো আদতে একটি ফোয়ারার নির্গমন মুখ। মুঘল যুগে তাজমহল-সহ অনেক স্থাপত্যেই ফোয়ারার উপস্থিতি রয়েছে। পুরনো বহু মসজিদেও নমাজের আগের ওজু করার (হাত-পা ধোওয়া) স্থানে ফোয়ারা রয়েছে।

১৭ ১৭
ওজুখানার ওই পাথরের কাঠামোর উপরে রয়েছে ফোয়ারার নির্গমন-মুখের মতোই কাটা-চিহ্ন। এ ক্ষেত্রে পাল্টা যুক্তি, শিবলিঙ্গের চরিত্র বদলে দেওয়ার উদ্দেশ্যে পরবর্তীকালে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে মুখটি কেটে দেওয়া হয়েছে।

ওজুখানার ওই পাথরের কাঠামোর উপরে রয়েছে ফোয়ারার নির্গমন-মুখের মতোই কাটা-চিহ্ন। এ ক্ষেত্রে পাল্টা যুক্তি, শিবলিঙ্গের চরিত্র বদলে দেওয়ার উদ্দেশ্যে পরবর্তীকালে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে মুখটি কেটে দেওয়া হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও গ্যালারি