Supreme Court

৩৬ বছরের লড়াই! শেষ হতে চলেছে সাংবিধানিক বেঞ্চে দেশের সবচেয়ে পুরনো বিচারাধীন মামলার

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর রায় বেরোতে পারে দেশের সবচেয়ে পুরনো বিচারাধীন মামলার। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট ৩৬ বছরের পুরনো এই মামলার রায় ঘোষণার জন্য দিন নির্ধারণ করেছে।

Advertisement
সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৬:১২
০১ ১৬
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর রায় বেরোতে পারে দেশের সবচেয়ে পুরনো বিচারাধীন মামলার। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট ৩৬ বছরের পুরনো এই মামলার রায় ঘোষণার জন্য একটি দিন নির্ধারণ করেছে।

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর রায় বেরোতে পারে দেশের সবচেয়ে পুরনো বিচারাধীন মামলার। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট ৩৬ বছরের পুরনো এই মামলার রায় ঘোষণার জন্য একটি দিন নির্ধারণ করেছে।

০২ ১৬
দাউদি বোহরা সম্প্রদায়ের ধর্মত্যাগের অনুশীলনের সঙ্গে জড়িত এই মামলাটি ১৯৮৬ সাল থেকে বিচারাধীন।

দাউদি বোহরা সম্প্রদায়ের ধর্মত্যাগের অনুশীলনের সঙ্গে জড়িত এই মামলাটি ১৯৮৬ সাল থেকে বিচারাধীন।

০৩ ১৬
বিচারপতি সঞ্জয় কিষাণ কউলের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির একটি ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, ১১ অক্টোবর এই মামলার রায় ঘোষণা করা হবে। মামলার সঙ্গে জড়িত সব পক্ষকে নিজেদের শেষ আইনি অবস্থান এবং প্রস্তাব লিখিত ভাবে জমা দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

বিচারপতি সঞ্জয় কিষাণ কউলের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির একটি ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, ১১ অক্টোবর এই মামলার রায় ঘোষণা করা হবে। মামলার সঙ্গে জড়িত সব পক্ষকে নিজেদের শেষ আইনি অবস্থান এবং প্রস্তাব লিখিত ভাবে জমা দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

Advertisement
০৪ ১৬
দাউদি বোহরা সম্প্রদায় থেকে বহিষ্কারের অনুশীলন একটি ‘সুরক্ষিত অনুশীলন’ হিসাবে চলতে পারে কি না, তা-ও জানাতে বলা হয়েছিল আদালতের তরফ থেকে।

দাউদি বোহরা সম্প্রদায় থেকে বহিষ্কারের অনুশীলন একটি ‘সুরক্ষিত অনুশীলন’ হিসাবে চলতে পারে কি না, তা-ও জানাতে বলা হয়েছিল আদালতের তরফ থেকে।

০৫ ১৬
দাউদি বোহরা সম্প্রদায়ের ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী, কাউকে সেই সম্প্রদায় থেকে বহিষ্কার করার পরে সামাজিক ভাবে বয়কট করার পাশাপাশি ধর্মীয় উপাসনালয়েও তাঁদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়।

দাউদি বোহরা সম্প্রদায়ের ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী, কাউকে সেই সম্প্রদায় থেকে বহিষ্কার করার পরে সামাজিক ভাবে বয়কট করার পাশাপাশি ধর্মীয় উপাসনালয়েও তাঁদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়।

Advertisement
০৬ ১৬
দাউদি বোহরাদের বহিষ্কারের বিষয়ে আইনি লড়াইয়ের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। ১৯৪৯ সালের নভেম্বরে, ‘বম্বে প্রিভেনশন অফ এক্সকমিউনিকেশন অ্যাক্ট’ পাস করে বম্বে প্রসিডেন্সি।

দাউদি বোহরাদের বহিষ্কারের বিষয়ে আইনি লড়াইয়ের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। ১৯৪৯ সালের নভেম্বরে, ‘বম্বে প্রিভেনশন অফ এক্সকমিউনিকেশন অ্যাক্ট’ পাস করে বম্বে প্রসিডেন্সি।

০৭ ১৬
এই আইন অনুযায়ী যে কোনও ধর্মীয় সম্প্রদায় চাইলেই তাদের সদস্যদের বহিষ্কার করতে পারবে না। দাউদি বোহরাদের পক্ষে সম্প্রদায়ের তৎকালীন আধ্যাত্মিক প্রধান ৫১তম সৈয়দনা এই আইনের বিরুদ্ধে একটি পিটিশন দায়ের করেছিলেন।

এই আইন অনুযায়ী যে কোনও ধর্মীয় সম্প্রদায় চাইলেই তাদের সদস্যদের বহিষ্কার করতে পারবে না। দাউদি বোহরাদের পক্ষে সম্প্রদায়ের তৎকালীন আধ্যাত্মিক প্রধান ৫১তম সৈয়দনা এই আইনের বিরুদ্ধে একটি পিটিশন দায়ের করেছিলেন।

Advertisement
০৮ ১৬
সেই পিটিশনে বলা হয়, সম্প্রদায় থেকে বহিষ্কারের ক্ষমতা সৈয়দনার কাছে থাকে। আর এর মাধ্যমেই সম্প্রদায়ের বিভিন্ন বিষয়গুলো পরিচালনা করেন। ১৯৬২ সালে, সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ ১৯৪৯ সালের আইনটি বাতিল করে।

সেই পিটিশনে বলা হয়, সম্প্রদায় থেকে বহিষ্কারের ক্ষমতা সৈয়দনার কাছে থাকে। আর এর মাধ্যমেই সম্প্রদায়ের বিভিন্ন বিষয়গুলো পরিচালনা করেন। ১৯৬২ সালে, সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ ১৯৪৯ সালের আইনটি বাতিল করে।

০৯ ১৬
এই রায়ের ২৫ বছর পরে, ১৯৮৬ সালে সংস্কারবাদী দাউদি বোহরাদের প্রতিনিধিত্বকারী একটি দল আদালতে সম্প্রদায় থেকে বহিষ্কার না করার বিষয়ে একটি রিট পিটিশন দায়ের করে। এই সম্প্রদায়ের কিছু পরিবারের তরফ থেকে সামাজিক বয়কটের অভিযোগ আনা হয় এই পিটিশনে।

এই রায়ের ২৫ বছর পরে, ১৯৮৬ সালে সংস্কারবাদী দাউদি বোহরাদের প্রতিনিধিত্বকারী একটি দল আদালতে সম্প্রদায় থেকে বহিষ্কার না করার বিষয়ে একটি রিট পিটিশন দায়ের করে। এই সম্প্রদায়ের কিছু পরিবারের তরফ থেকে সামাজিক বয়কটের অভিযোগ আনা হয় এই পিটিশনে।

১০ ১৬
অভিযোগগুলি সত্যি কি না জানতে ১৯৭৭ সালে বিচারপতি নরেন্দ্র নাথওয়ানির নেতৃত্বে একটি কমিশন গঠন করা হয়েছিল। এর দু’বছর পর ওই কমিশন রিপোর্ট পেশ করে জানায় সামাজিক বয়কটের অভিযোগগুলি ভিত্তিহীন নয় এবং সুপারিশ করে যে সামাজিক বয়কটকে বেআইনি করা উচিত।

অভিযোগগুলি সত্যি কি না জানতে ১৯৭৭ সালে বিচারপতি নরেন্দ্র নাথওয়ানির নেতৃত্বে একটি কমিশন গঠন করা হয়েছিল। এর দু’বছর পর ওই কমিশন রিপোর্ট পেশ করে জানায় সামাজিক বয়কটের অভিযোগগুলি ভিত্তিহীন নয় এবং সুপারিশ করে যে সামাজিক বয়কটকে বেআইনি করা উচিত।

১১ ১৬
১৯৯৪ সালে এই মামলা দুই বিচারপতির বেঞ্চ থেকে সাত বিচারপতির বেঞ্চে সরানো হয়। ২০০৪ সালে এই মামলাটি পাঁচ বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে পাঠানো হয়।

১৯৯৪ সালে এই মামলা দুই বিচারপতির বেঞ্চ থেকে সাত বিচারপতির বেঞ্চে সরানো হয়। ২০০৪ সালে এই মামলাটি পাঁচ বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে পাঠানো হয়।

১২ ১৬
২০১৭ সালের মহারাষ্ট্র সরকারের পক্ষ থেকে আইন এনে সমস্ত ধরনের সামাজিক বয়কট নিষিদ্ধ করা হয়।

২০১৭ সালের মহারাষ্ট্র সরকারের পক্ষ থেকে আইন এনে সমস্ত ধরনের সামাজিক বয়কট নিষিদ্ধ করা হয়।

১৩ ১৬
দাউদি বোহরা সম্প্রদায়ের বর্তমান আধ্যাত্মিক প্রধান ৫৩তম সৈয়দনার মতে, এই মামলা নিয়ে বিতর্কের কোনও জায়গা নেই। ২০১৭ সালে  মহারাষ্ট্র সরকারের তরফে আইন করে সামাজিক বয়কট নিষিদ্ধ করার পরে এই মামলার কোনও মানে হ না।

দাউদি বোহরা সম্প্রদায়ের বর্তমান আধ্যাত্মিক প্রধান ৫৩তম সৈয়দনার মতে, এই মামলা নিয়ে বিতর্কের কোনও জায়গা নেই। ২০১৭ সালে মহারাষ্ট্র সরকারের তরফে আইন করে সামাজিক বয়কট নিষিদ্ধ করার পরে এই মামলার কোনও মানে হ না।

১৪ ১৬
মঙ্গলবার সৈয়দনার পক্ষের আইনজীবী ফালি এস নরিম্যান উল্লেখ করেন যে, ২০১৭ সালের মহারাষ্ট্র সামাজিক বয়কট আইনের মাধ্যমে ১৯৪৯ সালের আইন বাতিল করার পাশাপাশি সমস্ত সামাজিক বয়কটকেও বেআইনি বলে ঘোষণা করেছে। তাই এই মামলার কোনও ভিত্তি নেই।

মঙ্গলবার সৈয়দনার পক্ষের আইনজীবী ফালি এস নরিম্যান উল্লেখ করেন যে, ২০১৭ সালের মহারাষ্ট্র সামাজিক বয়কট আইনের মাধ্যমে ১৯৪৯ সালের আইন বাতিল করার পাশাপাশি সমস্ত সামাজিক বয়কটকেও বেআইনি বলে ঘোষণা করেছে। তাই এই মামলার কোনও ভিত্তি নেই।

১৫ ১৬
আবেদনকারীদের পক্ষে আইনজীবী সিদ্ধার্থ ভাটনগর জানান, মহারাষ্ট্র সরকারের এই সামাজিক বয়কটের সাধারণ আইন দাউদি বোহরা সম্প্রদায়ের তরফে এখন মেনে নেওয়া হলেও পরে তারা তা না-ও মানতে পারে। তাই এই সম্প্রদায়ের ধর্মীয় প্রধানদের সম্প্রদায় থেকে বহিষ্কার না করার বিষয় মেনে নিয়ে তা লিখিত ভাবে জমা দিতে হবে।

আবেদনকারীদের পক্ষে আইনজীবী সিদ্ধার্থ ভাটনগর জানান, মহারাষ্ট্র সরকারের এই সামাজিক বয়কটের সাধারণ আইন দাউদি বোহরা সম্প্রদায়ের তরফে এখন মেনে নেওয়া হলেও পরে তারা তা না-ও মানতে পারে। তাই এই সম্প্রদায়ের ধর্মীয় প্রধানদের সম্প্রদায় থেকে বহিষ্কার না করার বিষয় মেনে নিয়ে তা লিখিত ভাবে জমা দিতে হবে।

১৬ ১৬
কিন্তু নরিম্যান এই বিষয়ে লিখিত বিবৃতি দেওয়ার ব্যাপারে অসম্মতি প্রকাশ করেন। এর পরই আদালতের তরফে ১১ অক্টোবর এই মামলার চূড়ান্ত রায় ঘোষণার দিন হিসাবে ধার্য করা হয়।

কিন্তু নরিম্যান এই বিষয়ে লিখিত বিবৃতি দেওয়ার ব্যাপারে অসম্মতি প্রকাশ করেন। এর পরই আদালতের তরফে ১১ অক্টোবর এই মামলার চূড়ান্ত রায় ঘোষণার দিন হিসাবে ধার্য করা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও গ্যালারি