ট্রেন দুর্ঘটনা রুখতে ঘটা করে কবচের মতো সুরক্ষাব্যবস্থা চালু করা হলেও করমণ্ডল-বিপর্যয়ের সাক্ষী থেকেছে ওড়িশার বাহানগা। ২ জুনের সন্ধ্যায় বালেশ্বরের বাহানগা বাজার স্টেশনের কাছে দূরপাল্লার দু’টি ট্রেন এবং মালগাড়ির দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ২৮৮ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে রেল। আহত হয়েছেন ৯০০-র বেশি। করমণ্ডল দুর্ঘটনার আবহেই আবার প্রকাশ্যে এসেছে কবচ ব্যবস্থা।
—ফাইল চিত্র।
কবচের ঢাল রয়েছে দেশের বেশ কয়েকটি ট্রেনে। এই সুরক্ষাব্যবস্থার আওতায় আনা হয়েছে রেলস্টেশন থেকে বেশ কয়েকটি ট্রেন রুটকেও। কোন কোন ট্রেনকে দুর্ঘটনার কবল থেকে রক্ষা করতে পারে কবচ? এর সুরক্ষাকবচ থাকলে কি দুর্ঘটনার হাত থেকে বাঁচতে পারত করমণ্ডল এক্সপ্রেস?
—ফাইল চিত্র।
২০২০ সালে স্বয়ংক্রিয় ভাবে ট্রেনের সুরক্ষাব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল কবচকে। ২০২২ সালের মার্চে রেল মন্ত্রকের একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এই ব্যবস্থায় চলন্ত ট্রেনের দুর্ঘটনার হাত থেকে সুরক্ষা পাওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাবে।
—ফাইল চিত্র।
কবচের গঠনে উন্নতির কাজে নেমেছিল রেলের রিসার্চ ডিজ়াইনস অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ড অরগানাইজ়েশন (আরডিএসও)। সেই ২০১২ সাল থেকেই এটি তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। নানা পরীক্ষানিরীক্ষার পর ২০২০ সালে এটিকে আনুষ্ঠানিক চালু করা হয়।
—ফাইল চিত্র।
রেল সূত্রে খবর, কবচের সুরক্ষা থাকলে একই রেললাইনে দু’টি ট্রেন মুখোমুখি চলে এলেও সংঘর্ষ এড়ানো সম্ভব। এর ফলে দুর্ঘটনার হারও অনেকাংশ কমানো যাবে বলে দাবি করেছিল রেল।
—ফাইল চিত্র।
ঘন কুয়াশার জেরে বহু সময়ই ট্রেন পরিষেবা ব্যাহত হয়। রেলের দাবি ছিল, এ ধরনের প্রতিকূল পরিস্থিতিতে ট্রেন দুর্ঘটনার কবল থেকে মুক্তি দিতে পারে কবচ।
—ফাইল চিত্র।
এমনকি, বিপদের আশঙ্কা দেখলেও কবচের মতো অস্ত্র কাজে লাগাতে পারবেন ট্রেনচালক। ফলে ট্রেন পরিষেবায় সুরক্ষা বাড়বে বই কমবে না বলে দাবি ছিল রেলের।
—ফাইল চিত্র।
রেল মন্ত্রকের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল, কোনও কারণে চালক ব্রেক কষতে ভুল করলে স্বয়ংক্রিয় ভাবে ট্রেনের গতি কমিয়ে দেবে কবচ।
—ফাইল চিত্র।
কুয়াশার জেরে শীতকালে দৃশ্যমানতা কম হলে অথবা দ্রুতগতির ট্রেন চলাচলে কাজে আসবে কবচের সুরক্ষা। এমনও জানিয়েছিল রেল।
—ফাইল চিত্র।
রেলের আরও দাবি, লেভেল ক্রসিংয়ে স্বয়ংক্রিয় ভাবে ট্রেনের বাঁশি বাজানো থেকে শুরু করে কোনও রকমের বিপদের আশঙ্কায় ভরসা হতে পারে কবচ।
—ফাইল চিত্র।
২০২২ সালের মার্চের ওই প্রেস বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, সেই সময়ের মধ্যে শুধুমাত্র আনুষঙ্গিক খরচ হিসাবেই কবচের জন্য ব্যয় হয়েছে ১৬ কোটি ৮৮ লক্ষ টাকা।
—ফাইল চিত্র।
রেলের নানা দাবি সত্ত্বেও বাস্তবে কি কবচের সুরক্ষা পেয়েছে দেশের সব ক’টি ট্রেন? পরিসংখ্যান খতিয়ে দেখলে এর হতাশাজনক চিত্র ধরা পড়ে।
—ফাইল চিত্র।
বাহানগা বাজার স্টেশনের কাছে দুর্ঘটনাগ্রস্ত শালিমার-চেন্নাই করমণ্ডল এক্সপ্রেস অথবা বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস এবং আকরিকবোঝাই মালগাড়িটির কোনওটাতেই কবচের সুরক্ষা ছিল না।
—ফাইল চিত্র।
বিরোধী দল কংগ্রেসের দাবি, দেশে মোটে ২ শতাংশ ট্রেন কবচের সুরক্ষা পাচ্ছে। যদিও এ নিয়ে সরকারের তরফে কিছু জানানো হয়নি।
—ফাইল চিত্র।
রেল জানিয়েছে, দেশ জুড়ে দৈনিক ১৩,১৬০টি যাত্রিবাহী ট্রেন চলে। তার মধ্যে ৬৫টি ট্রেনের ইঞ্জিন কবচের সুরক্ষাব্যবস্থায় আওতায় রয়েছে।
—ফাইল চিত্র।
ট্রেন ছাড়াও ১,৪৪৫ কিলোমিটার রুটে কবচের ঢাল রয়েছে। এ ছাড়া, দেশের ১৩৪টি রেলস্টেশনে এই সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে।
—ফাইল চিত্র।
বহু বিশেষজ্ঞের মতে, কবচ লাগানো থাকলেই যে করমণ্ডল-বিপর্যয় এড়ানো যেত, এমন ভাবা ভুল হবে। তাঁদের দাবি, বৈদ্যুতিন ইন্টারলকিং সিস্টেম কাজ না করাও এই বিপর্যয়ের একটি কারণ। যদিও তা তদন্তসাপেক্ষ।
—ফাইল চিত্র।