ইসেই সাগাওয়া ওরফে ‘কোবে ক্যানিবাল’। ৭৩ বছর বয়সে নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন জাপানের এই নরখাদক।
ফাইল চিত্র ।
২৪ নভেম্বর নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান সাগাওয়া। তাঁর শেষকৃত্যে শুধু মাত্র গুটি কয়েক আত্মীয়ই উপস্থিত ছিলেন। সাগওয়ার মৃত্যুতে বিশাল কোনও অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়নি বলেও সাগাওয়ার ভাই জানিয়েছেন।
ফাইল চিত্র ।
নেদারল্যান্ডসের এক যুবতীকে খুন করে তাঁর মাংস খাওয়ার অপরাধে প্রথম নজরে আসেন সাগাওয়া। তবে আশ্চর্যজনক ভাবে এর জন্য তাঁকে কখনও জেল খাটতে হয়নি।
ফাইল চিত্র ।
১৯৪৯ সালের ২৬ এপ্রিল জাপানের কোবে শহরে এক বিত্তশালী পরিবারে সাগওয়ার জন্ম। সাগওয়ার বাবা ধনী ব্যবসায়ী ছিলেন।
ফাইল চিত্র ।
ছোট থেকেই ‘এন্টারাইটিস’ নামক অন্ত্রের রোগে আক্রান্ত ছিলেন সাগওয়া। ভঙ্গুর স্বাস্থ্য এবং অন্তর্মুখী ব্যক্তিত্বের অধিকারী সাগওয়ার ছেলেবেলা থেকেই সাহিত্যের প্রতি বিশেষ ঝোঁক ছিল।
ফাইল চিত্র ।
ছোট থেকে সাগওয়ার ঝোঁক ছিল মানুষের মাংস খাওয়ার প্রতি। ছোটবেলায় এক জনের ঊরু দেখে তাঁর প্রথম মানুষের মাংস খাওয়ার ইচ্ছা হয় বলে তিনি পরে জানিয়েছিলেন।
ফাইল চিত্র ।
ওয়াকো ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করেন সাগাওয়া এবং পরে কোয়ানসেই গাকুইন বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি পান।
ফাইল চিত্র ।
মাত্র ২৪ বছর বয়সে, টোকিয়োর ওয়াকো ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সময় সাগাওয়া এক জন লম্বা জার্মান মহিলার পিছু নেন। উদ্দেশ্য ছিল ওই মহিলার নিতম্বের কিছুটা মাংস কেটে খাওয়া।
ফাইল চিত্র ।
মহিলা ঘুমোনোর সুযোগ নিয়ে সাগওয়া তাঁর বাড়িতে ঢুকে পড়েন। মহিলার ঘুম ভেঙে গেলে তাঁকে ধর্ষণের চেষ্টাও করেন সাগওয়া। মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে সাগওয়াকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ।
ফাইল চিত্র ।
সাগওয়ার বাবা সেই মামলা আদালতের বাইরে মিটিয়ে নেন বলে শোনা যায়। ১৯৭৭ সালে ২৭ বছর বয়সে ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে গবেষণা করতে প্যারিসে চলে যান সাগওয়া।
ফাইল চিত্র ।
প্যারিসে থাকাকালীন ১৯৮১ সালে সাগওয়ার পরিচয় হয় নেদারল্যান্ডসের বাসিন্দা রেনি হার্টভেল্টের সঙ্গে। রেনিও পড়াশোনা সূত্রে প্যারিসে থাকতেন। সেখানেই রেনিকে নিজের বাড়িতে আমন্ত্রণ জানান সাগওয়া।
ফাইল চিত্র ।
বাড়িতে নিমন্ত্রণ করে ডেকে নিয়ে গিয়ে রেনির ঘাড়ে গুলি করে তাঁকে খুন করেন সাগাওয়া।
ফাইল চিত্র ।
এর পর রেনির মৃতদেহে যৌনাচার চালানোর অভিযোগও ছিল সাগাওয়ার বিরুদ্ধে। এখানেই থেমে থাকেননি সাগওয়া। অভিযোগ ছিল, রেনির দেহ ধর্ষণের পর সেই দেহ কুচি কুচি করে কেটে ফেলা হয়।
ফাইল চিত্র ।
অভিযোগ, প্রথমে দাঁতে কামড়ে রেনির দেহ থেকে কাঁচা মাংস খাওয়ার চেষ্টা করেন সাগাওয়া। কিন্তু তাঁর দাঁত যথেষ্ট ধারালো না হওয়ায় তিনি একটি মাংস কাটার ছুরি কিনে আনেন।
ফাইল চিত্র ।
রেনির শরীরের বিভিন্ন অংশ কেটে ফেলেন সাগাওয়া। রেনির স্তন, মুখ, নিতম্ব, পা, উরু এবং ঘাড়ের কিছু অংশ কাঁচা এবং কিছু অংশ রান্না করে খান তিনি।
ফাইল চিত্র ।
এমনকি রেনির যৌনাঙ্গ কেটে কাঁচা অবস্থাতেই গিলে খেয়ে নেন সাগওয়া। সে কথা তিনি পরে স্বীকারও করেছিলেন তদন্তকারীদের কাছে। বেশ কিছু দেহের অংশ ফ্রিজে সংরক্ষণ করেও রাখা হয়। রেনির দেহের কাটা অংশগুলির ছবিও তুলে রাখেন সাগাওয়া।
ফাইল চিত্র ।
পরে প্যারিসের বোইস ডি বোলোন পার্কে একটি স্যুটকেসে ভরে রেনির দেহাবশেষ ফেলতে গিয়ে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন সাগওয়া।
ফাইল চিত্র ।
বিচার চলাকালীন মনস্তাত্ত্বিক বিশেষজ্ঞরা জানান, সাগওয়া মানসিক বিকারগ্রস্ত। সাগাওয়া মানসিক ভারসাম্যহীন বলে তাঁকে জেলে পাঠানো থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
ফাইল চিত্র ।
আদালতের নির্দেশ ছিল, সাগওয়াকে জাপানে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু তার আগে কিছু দিন কাটাতে হবে ফ্রান্সের একটি মানসিক চিকিৎসাকেন্দ্রে।
ফাইল চিত্র ।
ফ্রান্সের মানসিক চিকিৎসাকেন্দ্রে কিছু দিন রেখে সাগওয়াকে জাপানে ফেরত পাঠাতেই অন্য কথা বলেন সেখানকার চিকিৎসকরা। জানানো হয়, সাগওয়া মানসিক ভাবে সম্পূর্ণ রূপে সুস্থ।
ফাইল চিত্র ।
জাপান সরকার সাগওয়ার বিরুদ্ধে কোনও আইনি পদক্ষেপ করেনি। তাঁর বিরুদ্ধে রুজু হওয়া মামলা ফ্রান্সে হওয়ায় জাপানে তাঁকে স্বাধীন ভাবে চলাফেরা করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।
ফাইল চিত্র ।
সাগাওয়া কোনও দিন নিজের অপরাধের কথা অস্বীকার করেননি। বরং অপরাধের ঘটনার বিবরণ দিয়ে ‘ইন দ্য ফগ’ নামে একটি উপন্যাস লেখেন।
ফাইল চিত্র ।
কী ভাবে তিনি খুন করে রেনির মাংস খেয়েছিলেন, তা-ও ওই উপন্যাসে বিশদে লিখে গিয়েছেন সাগওয়া।
ফাইল চিত্র ।
বেঁচে থাকতে থাকতেই সাগওয়াকে নিয়ে একাধিক তথ্যচিত্র, সিনেমা এবং টিভি শো তৈরি হয়েছে। তার বেশ কয়েকটিতে সাগওয়া নিজেই অভিনয় করেছেন।
ফাইল চিত্র ।