‘জালিয়াতি’ করে নিজেদের সংস্থার শেয়ার দর বাড়িয়েছে দেশের অন্যতম ধনী ব্যক্তি গৌতম আদানির গোষ্ঠী! আমেরিকার লগ্নি সংক্রান্ত গবেষণাকারী সংস্থা ‘হিন্ডেনবার্গ রিসার্চে’র রিপোর্টে এমন দাবির পর শোরগোল পড়ে গিয়েছে। রাতারাতি মুখ থুবড়ে পড়ছে আদানি গোষ্ঠীর সংস্থাগুলির শেয়ার। হুড়মুড় করে নেমেছে সেনসেক্সও।
ছবি সংগৃহীত।
বিদেশি সংস্থার রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পর বিত্তবানদের তালিকায় ধাক্কা খেয়েছেন দেশের অন্যতম নামী শিল্পপতি গৌতম আদানি। বিশ্বের ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় ৪ ধাপ নেমে সপ্তম স্থানে চলে এসেছেন আদানি। কিন্তু, হঠাৎ কেন এই পতন? আমেরিকার ওই সংস্থার রিপোর্টে ঠিক কী অভিযোগ করা হয়েছে?
ছবি সংগৃহীত।
আমেরিকার ওই সংস্থার তরফে দাবি করা হয়েছে, কারচুপি করে নিজেদের সংস্থাগুলির শেয়ার দর বাড়িয়েছে আদানি গোষ্ঠী। এ নিয়ে দু’বছর ধরে তদন্ত চালিয়ে তারা এই তথ্য জানতে পেরেছে বলে দাবি করা হয়েছে ওই রিপোর্টে।
ছবি সংগৃহীত।
‘হিন্ডেনবার্গ রিসার্চে’র রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, গত এক দশক ধরে নিজেদের সংস্থাগুলির শেয়ারের দাম কৃত্রিম ভাবে বাড়িয়েছে আদানি গোষ্ঠী। গত ৩ বছরে কারচুপির মাধ্যমে গৌতম আদানির ১২ হাজার কোটি ডলারের নিট সম্পদের ১০ হাজার কোটি এসেছে।
ছবি সংগৃহীত।
আমেরিকার সংস্থার রিপোর্টে আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগও করা হয়েছে। মরিশাস, আরব আমিরশাহির মতো কিছু দেশে আদানি পরিবারের মালিকানাধীন কিছু ভুয়ো সংস্থার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
ছবি সংগৃহীত।
ওই দেশগুলিতে আয়কর ছাড়ের সুবিধা পাওয়া যায়। অভিযোগ, ওই ভুয়ো সংস্থার মাধ্যমে বেআইনি লেনদেন, কর ফাঁকি দেওয়া হয়েছে।
ছবি সংগৃহীত।
কৃত্রিম ভাবে শেয়ারের দর কয়েক গুণ বাড়িয়ে আদানিরা বিশাল সম্পদ তৈরি করেছেন। গত ৩ বছরে আদানির শেয়ার সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে ৮০০ শতাংশের বেশি।
ছবি সংগৃহীত।
হিন্ডেনবার্গ সংস্থার দাবি, এ নিয়ে গবেষণা চালাতে তাঁরা আদানি গোষ্ঠীরই কয়েক জন প্রাক্তন উচ্চপদস্থ কর্তার সঙ্গে কথা বলেছেন। সেই সঙ্গে কয়েক হাজার নথি পর্যালোচনা করেছেন তাঁরা। সব দিক খতিয়ে দেখেই এই রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে।
ছবি সংগৃহীত।
যদিও আমেরিকার সংস্থার রিপোর্ট ‘মিথ্যা ও ভিত্তিহীন’ বলে দাবি করেছে আদানি গোষ্ঠী। এই শিল্পগোষ্ঠীর তরফে পাল্টা অভিযোগ করা হয়েছে, তাদের ভাবমূর্তি নষ্ট করে লগ্নিকারীদের বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের বিরুদ্ধে ‘শাস্তিমূলক পদক্ষেপ’ করতে উঠেপড়ে লেগেছেন আদানিরা।
ছবি সংগৃহীত।
আমেরিকার সংস্থার রিপোর্ট ভিত্তিহীন বলে আদানিরা সরব হলেও, তাদের শেয়ারের দাম মুখ থুবড়ে পড়ছে। গত বুধ এবং শুক্রবার আদানি গোষ্ঠীর সংস্থাগুলির শেয়ারমূল্য কমেছে ৪.১৭ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি।
ছবি সংগৃহীত।
শুক্রবার আদানি টোটাল গ্যাস খুইয়েছে ৭৯ হাজার ৭৮৮ কোটি টাকা। আদানি গ্রিন এনার্জি খুইয়েছে ৫৭ হাজার ৮৭৬ কোটি টাকা। আদানি ট্রান্সমিশনও ধাক্কা খেয়েছে। তারা খুইয়েছে ৫২ হাজার ৫৩১ কোটি টাকা।
ছবি সংগৃহীত।
শুক্রবার আদানি টোটাল গ্যাস, আদানি গ্রিন এনার্জি, আদানি ট্রান্সমিশনের শেয়ার দর পড়েছে ২০ শতাংশ। আদানি এন্টারপ্রাইজের শেয়ার দর পড়েছে ১৮.৫২ শতাংশ।
ছবি সংগৃহীত।
শুক্রবার আদানি পাওয়ার এবং আদানি উইলমারের শেয়ার দর পড়েছে ৫ শতাংশ। আদানি পোর্টস অ্যান্ড স্পেশাল ইকোনমিক জোনের শেয়ার দর পড়েছে ২৩ শতাংশ।
ছবি সংগৃহীত।
আমেরিকার সংস্থার রিপোর্টের জেরে শুক্রবার আদানি এন্টারপ্রাইজের শেয়ার বিক্রির প্রক্রিয়া মুখ থুবড়ে পড়েছে। ৪.৫৫ কোটি শেয়ার বেচতে নেমেছিল তারা। কিন্তু বিক্রি করেছে মাত্র ৪.৭ লক্ষ।
ছবি সংগৃহীত।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্স সূত্রে খবর, হিন্ডেনবার্গ রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার আগেই গৌতম আদানির মোট সম্পত্তির পরিমাণ ১২ হাজার ১০০ কোটি ডলার থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ৯৬৬০ কোটি ডলার। এই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পর আরও ধাক্কা খেলেন আদানি।
ছবি সংগৃহীত।
আদানিদের সংস্থায় এলআইসি (লাইফ ইনসিওরেন্স কর্পোরেশন)-এর বিপুল লগ্নি রয়েছে। এ ছাড়াও স্টেট ব্যাঙ্ক-সহ বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে ওই গোষ্ঠীর ঋণ রয়েছে। ফলে এই রিপোর্টের জেরে আদানিদের শেয়ার দরের পতন যে ভাবে ঘটছে তাতে বিপদে পড়তে পারেন সাধারণ মানুষ।
ছবি সংগৃহীত।
আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে এই প্রতারণার অভিযোগ নিয়ে সরব হয়েছে কংগ্রেস। এই অভিযোগ খতিয়ে দেখতে শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেবি এবং রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তদন্ত করা উচিত বলে দাবি করেছে কংগ্রেস। এই ‘প্রতারণা’য় আদানিদের কেউ ইন্ধন জুগিয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা জরুরি বলে সরব হয়েছেন কংগ্রেস সাংসদ জয়রাম রমেশ।
ছবি সংগৃহীত।
বিরোধীরা এই নিয়ে সরব হলেও এখনও পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে কিছু জানানো হয়নি।
ছবি সংগৃহীত।