নিষিদ্ধ যা কিছু— সে সব নিয়ে আলোচনা করতে এবং অবশ্যই নিজেকে ভালবাসতে শেখায় এই মঞ্চ। ছবি- সংগৃহীত
কারও বয়স ৭০। কারও আবার ২১। কেউ কারও পরিচিত নন। সকলেই যোগ দিতে পারেন পার্টিতে। কিন্তু শর্ত একটিই। পরনে যা কিছু, তা রেখে আসতে হবে দরজার বাইরে। এমন শর্ত রেখেই একটি ‘ঘরোয়া’ পার্টির আয়োজন করেছিলেন মডেল-শিল্পী চার্লি অ্যান ম্যাক্স।
নিজেকে উদ্যাপন করতে ২০২০ সাল থেকেই নগ্নতা নিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আসছেন ম্যাক্স। তিনি মনে করেন, নিজেকে ভালবাসতে বলা খুব সহজ, কিন্তু ভালবাসতে পারা ততোধিক কঠিন। তাই এ বার তিনি নিজেই উদ্যোগী হয়ে এমন একটি ‘ডিনার পার্টি’-র আয়োজন করেছেন। ম্যাক্স জানিয়েছেন, এই পার্টি শুধুমাত্র নিমন্ত্রিতদের জন্য। ইতিমধ্যেই ২৪ জন নিজেদের নাম নথিভুক্ত করেছেন। তবে কেউ যদি সমাজমাধ্যমে এই পার্টির কথা জেনে এই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে চান, অবশ্যই আসতে পারেন। তিনি বলেন, “এই ধরনের নগ্ন পার্টি এক এক জনের উপর এক এক রকম প্রভাব ফেলে। কেউ নিজের শরীরের সঙ্গে আরও বেশি করে একাত্ম হতে পারেন। আবার কেউ নতুন করে নিজেকে আবিষ্কার করতে সক্ষম হন।”
গত মার্চে এমনই একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসেছিলেন বছর ৪১-এর রোজ়ালিনা ভিলানোভা। তিনি জানিয়েছেন, বছর খানেক আগে এক সন্তানের মা হয়েছেন। তার পর থেকে নিজের চেহারা নিয়ে তাঁর মধ্যে হীনম্মন্যতা দেখা দেয়। বেশির ভাগ সময়ে সেই কারণেই অবসাদগ্রস্ত হয়ে থাকতেন। কিন্তু এই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এক অন্য জীবন ফিরে পেয়েছেন তিনি।
আবার ২১ বছর বয়সি ক্যাথরিন ফ্রাকারোলির অন্তর্মুখী স্বভাবের জন্য কোনও দিন ছোট পোশাক পরতে পারতেন না। কিন্তু এখানে এসে অবলীলায় যোগ দিয়েছিলেন নগ্ন পার্টিতে। অন্য অনেকের মতোই নিজের শরীরকে ভালবাসতে শিখেছিলেন। শরীর নিয়ে জড়তা ছিল না আর। ঋতুস্রাবের সময়ে খুব একটা বাইরে বেরোতে চাইতেন না চেলসি লেল্যান্ড। কারণ, পোশাকে দাগ লেগে থাকলে অস্বস্তি হয়। আশপাশের সকলে ঘুরে ঘুরে দেখেন। কিন্তু এই অনুষ্ঠানে এসে যখন দেখেন ঋতুস্রাবের রক্ত দিয়ে হাতে আঁকা ‘পেন্টিং’ ঝুলছে দেওয়ালে, তখন ঋতুস্রাব নিয়ে চেলসির ধারণাই বদলে যেতে শুরু করে।
মেয়েদের উপর পুরুষতান্ত্রিক সমাজের চাপিয়ে দেওয়া ভার বয়ে চলার কোনও মানেই নেই। খোলা মনে নিজেদের ভাল লাগা, খারাপ লাগা, রুচি, পছন্দ, যৌনতা, নিষিদ্ধ যা কিছু— সে সব নিয়ে আলোচনা করতে এবং অবশ্যই নিজেকে ভালবাসতে শেখায় এই মঞ্চ।