ভাইফোঁটা জমে যাক বাহারি মিষ্টিতে। ছবি: সংগৃহীত।
দুর্গাপুজো, দীপাবলি শেষে এ বার ভাইফোঁটার পালা। বাঙালির ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির ছোঁয়া আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে রয়েছে সামাজিক যে আচার-অনুষ্ঠানগুলির মধ্যে, ভাইফোঁটা তেমনই একটি অনুষ্ঠান। মঙ্গলবার থেকেই ভাইয়ের কপালে চন্দনের ফোঁটা দিয়ে উদ্যাপন শুরু করে দিয়েছেন দিদি-বোনেরা। এই পর্ব চলবে বুধবার সকাল পর্যন্ত। বাঙালি যে মিষ্টিপ্রেমী, ভাইফোঁটার দিন সেটা আরও স্পষ্ট ভাবে ঠাহর করা যায়। মিষ্টির দোকানের সামনে লম্বা লাইন দেখে যে ডায়াবিটিসও ভয়ে পালিয়েছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। সাগর থেকে মুক্তো তুলে আনার মতো করে দিদিরাও শহর ঘুরে সেরা মিষ্টিগুলি ভাইয়ের প্লেটে সাজিয়ে দেন। তবে মিষ্টি কেনার আগে জেনে নিতে পারেন শহরের কোন ঠিকানায় কী কী বাহারি মিষ্টি পাওয়া যাচ্ছে।
বলরাম মল্লিক এবং রাধারমণ মল্লিকে রয়েছে ভাইফোঁটা উপলক্ষে পাঁচ রকম মিষ্টির বিশেষ থালি। তাতে রয়েছে ভাইফোঁটা লেখা সন্দেশ, গুড়ের প্যারা, ছানার সন্দেশ, খাজা, রসের মিষ্টি। থালির দাম পড়বে ৪০০ টাকা। এ ছাড়াও রসগোল্লা, ডাব সন্দেশ, ছানার মিষ্টি— সারা বছর যা যা থাকে, সেগুলি তো রয়েছেই। ভাইফোঁটার জন্য বাহারি কোনও মিষ্টি না থাকলেও কেসি দাশে রয়েছে খাজা, গজা, বালুসাই, বেকড রসগোল্লা, সন্দেশ। ডায়াবেটিকদের জন্য থাকছে কম মিষ্টির রসগোল্লা। সন্দেশের মধ্যে আছে রায়তক্তি।
ডায়াবিটিসের হাতছানি থাকলেও এমন উৎসবের দিনে মিষ্টি থেকে দূরে থাকা সম্ভব নয়। তা ছাড়া, ভাইকে মিষ্টি সাজিয়ে খেতে না দিলে অসম্পূর্ণ থেকে যায় ভাই-বোনের এই উৎসব। শহরের মিষ্টির দোকানগুলির ঠাসা ভিড় সে কথাই বলছে। সোমবার রাত থেকেই ক্রেতাদের ভিড়ে নাজেহাল ‘গাঙ্গুরাম’। ভাইফোঁটার জন্য থাকছে ছানা দিয়ে তৈরি রসের মিষ্টি আবার খাব, খাজা, ইন্দ্রাণী (রসমালাই), ভাইফোঁটা সন্দেশ। যার এক একটির দাম ৪০ টাকা। এগুলি ছাড়াও রসগোল্লা, ছানার জিলিপি, সন্দেশ, পান্তুয়া রয়েছে। সুগার ফ্রি কালাকাঁদ, সন্দেশও রয়েছে।
বাঞ্ছারাম সেজে উঠেছে ভাইফোঁটার বাহারি মিষ্টিতে। ভাইফোঁটা সন্দেশ, তালশাঁস, শঙ্খ সন্দেশ, চিত্রকূট, ল্যাংচা, পান্তুয়া, পদ্ম নিমকি, খাস্তা কচুরি— ডায়াবেটিকদের জন্য তেমন কিছু না থাকলেও ভাইফোঁটার জন্য রকমারি মিষ্টি আছে। মিষ্টির দাম শুরু হচ্ছে ৭০ টাকা থেকে। নোনতার দাম প্রায় ৩০-৪০ টাকা। নলিন চন্দ্র দাস অ্যান্ড সন্স-এ আবার ভাইফোঁটা উপলক্ষে রয়েছে ১৫০ বছরের পুরনো মিষ্টি তোতাপুলি। কালোজাম পটলের আকারে গড়ে মিষ্টির পেট চিরে ভরে দেওয়া হয় ক্ষীরের পুর। রস এবং সন্দেশের স্বাদ একসঙ্গে পাওয়া যাবে। এ ছাড়া বাটার স্কচ রোল, পুরনো দিনের পোস্ত সন্দেশ, নলেন গুড়ের বাটার স্কচ, কেশর সন্দেশ, কেশর রাবড়ি থাকছে। মিষ্টির দাম শুরু হচ্ছে ২৫-৩০ টাকা থেকে। ডায়াবেটিকদের জন্য থাকছে কেশর বাটার মিল্ক। এতে মিষ্টির চিহ্ন মাত্র নেই। পুরোটাই কেশর দিয়ে তৈরি।