Menaka Gambhir

মধ্যরাতে ইডির তলব মেনকা গম্ভীরকে! মহিলাদের গ্রেফতার বা তলবের ক্ষেত্রে কী কী নিয়ম রয়েছে?

মহিলাদের গ্রেফতার এবং তলব করা নিয়ে আইনের বেশ কয়েকটি ধারায় নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম রয়েছে। এ প্রসঙ্গে কী বলছেন হাইকোর্টের আইনজীবীরা?

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৫:২৩
মেনকা গম্ভীর।

মেনকা গম্ভীর। ছবি-সংগৃহীত

রবিবার মাঝরাতে আইনজীবীকে সঙ্গে নিয়ে সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্স (যেখানে ইডির দফতর রয়েছে) যান তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্যালিকা মেনকা গম্ভীর। রবিবার সাড়ে ১২টা নাগাদ তাঁকে তলব করা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন মেনকা। সেই মতো সাড়ে ১২টার কিছু সময় আগেই আইনজীবী সৌমেন মহান্তিকে সঙ্গে নিয়ে ইডি দফতরে যান অভিষেকের শ্যালিকা। সেখানে কিছু ক্ষণ নোটিস হাতে অপেক্ষা করার পর ফিরে আসেন তিনি। মাঝরাতে এক জন মহিলাকে কেন তলব করা হল, তা নিয়ে শোরগোল শুরু হতেই অবশ্য টনক নড়ে ইডির। মেনকা গম্ভীরকে রাত নয়, বেলা সাড়ে ১২টায় ডাকতে চেয়েছিল ইডি। সূত্রের খবর, এই ‘ভুল’-এর জন্য অবশ্য দুঃখপ্রকাশ করেছে ইডি দফতর। ভুল করে ‘পিএম’-এর জায়গায় ‘এএম’ লিখে ফেলেছিল কেন্দ্রীয় সংস্থা।

মহিলাদের গ্রেফতার এবং তলব করা নিয়ে আইনের বেশ কয়েকটি ধারায় নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম রয়েছে। সেগুলি মেনে না চলা আইনের চোখে অপরাধসম। রাত সাড়ে ১২টায় এক জন মহিলাকে তলব করা কি আদৌ আইনসম্মত? মহিলাদের গ্রেফতার বা তলব করার ক্ষেত্রে আর কী কী নিয়ম রয়েছে? এ প্রসঙ্গে কী বলছেন হাইকোর্টের আইনজীবীরা?

Advertisement

হাইকোর্টের আইনজীবী ফিরদৌস শামিম বলছেন, ‘‘রাত বা দিন যে কোনও সময় কোনও মহিলাকে অবশ্যই জিজ্ঞাসাবাদ বা গ্রেফতার করা যায়। তবে তদন্তকারী সংস্থাকে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা মেনে উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে। যেমন মহিলাদের ক্ষেত্রে মহিলা পুলিশ অফিসারের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক। এ ছাড়া যে মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে তাঁর নিকট কোনও আত্মীয়কে জানানোর অধিকার-সহ অন্যান্য আইনগত সুরক্ষা দিতে হবে।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘এগুলো বাদ দিলে যে কোনও তদন্তকারী সংস্থার অধিকার রয়েছে তদন্তের জন্য পদক্ষেপ করার। সাক্ষ্যপ্রমাণ লোপাট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, এমন সব ক্ষেত্রে তদন্তকারী সংস্থার পূর্ণ অধিকার রয়েছে আইন মোতাবেক পদক্ষেপ করার। আর তা যদি না থাকে তবে কোনও ভাবেই অপরাধ আটকানো সম্ভব নয়। বিশেষ করে আর্থিক দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত (হোয়াইট কালার অফেন্ডার) অপরাধগুলি। মোদ্দা কথা, সব পদক্ষেপই করা যায়। তবে তা নির্ভর করে অপরাধের গুরুত্বের উপর।’’

অন্য দিকে হাইকোর্টের আইনজীবী জয়ন্ত নারায়ণ চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘যে বাড়িতে মহিলা রয়েছে, সন্ধ্যা ৬টার পর সেখানে তল্লাশি চালানো যাবে না। যদি মনে হয় কোথাও সেই মহিলা অপরাধী লুকিয়ে রয়েছে, সে ক্ষেত্রে বাড়িটি পুলিশ দিয়ে ঘিরে রাখতে হবে। তার পর সূর্যোদয়ের পর গ্রেফতার করতে হবে। এটি হল মহিলাদের গ্রেফতারের পদ্ধতি। কিন্তু মেনকা গম্ভীরের বিষয়টি আলাদা। রাত ১২টার পরে ইডি তো মেনকার বাড়ি যায়নি। গেলে সেটা চূড়ান্ত অন্যায় হতো। এখানে তো মেল করে নোটিস পাঠানো হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সময়টা ততটাও গুরুত্বপূর্ণ নয়। শুধু ইডি নয়। এখন রাজ্যপুলিশও যে কোনও সময় নোটিস পাঠায়। তবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার কাছ থেকে ‘এম’, ‘পিএম’ গুলিয়ে ফেলাটা একেবারেই কাম্য নয়।’’

আরও পড়ুন
Advertisement