বন্ধুমহলে ‘ফিটনেস ফ্রিক’ হিসাবে বেশ নামডাক রয়েছে রণজয়ের। ছবি: সংগৃহীত
বাংলা টেলিভিশনের অন্যতম জনপ্রিয় মুখ রণজয় বিষ্ণু। সম্প্রতি ‘গুড্ডি’ ধারাবাহিকে তাঁর অভিনয় মন কেড়েছে দর্শকের। ধারাবাহিকের শুটিং নিয়ে বর্তমানে বেশ ব্যস্ত অভিনেতা। পাশাপাশি, সিরিজ এবং বড় পর্দাতেও কাজের পরিকল্পনা চলছে। কাজের ফাঁক পেলেই মাঝেমাঝে পাহাড়ে ছুটি কাটাতে চলে যান। এত ব্যস্ততার মাঝেও নিজেকে ফিট রাখতে ভোলেন না তিনি। টলিপাড়ার ফিটনেস সচেতন নায়কদের তালিকায় বেশ উপরের দিকেই থাকেন রণজয়। বন্ধুমহলে ‘ফিটনেস ফ্রিক’ হিসাবে বেশ নামডাক রয়েছে রণজয়ের। অভিনেতার পেশিবহুল চেহারা অবশ্য সেই তকমার স্বপক্ষেই যুক্তি দেয়। অভিনেতার ইনস্টাগ্রামের পাতায় উঁকি দিলেই দেখা যাবে, নিজেকে সুস্থ-সবল রাখতে ঠিক কতটা পরিশ্রম করেন তিনি। নিজের ফিটনেস রুটিন নিয়ে আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে মুখ খুললেন রণজয় বিষ্ণু।
রণজয়ের কথায়, ‘‘আমি বহু বছর ধরে নিয়ম করে ওয়ার্কআউট করি। এর মাঝে রোগা, মোটা সবই হয়েছি। আমি খুবই খাদ্যরসিক। যতই ডায়েট করি না কেন, খাবার থেকে দূরে থাকা অসম্ভব। তা ছাড়া, যে আবহাওয়ায় আমরা থাকি, তাতে খুব কঠিন ডায়েট করাও সম্ভব নয়। কিন্তু যদি মেপে খাওয়াদাওয়া করি, তা হলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। পাশাপাশি, ধারাবাহিক ভাবে শরীরচর্চাও করতে হবে। তার জন্য যে সব সময় জিমে যেতে হবে, তার কোনও মানে নেই। যোগাসন, হাঁটাহাঁটি করলেও হবে। কিন্তু প্রতি দিন করতে হবে। আমি যেমন এখন সপ্তাহে তিন-চার দিন মিক্সড মার্শাল আর্টস করি। ওয়েট ট্রেনিং করি। এইচএইচআই, কার্ডিয়োও থাকে সেই তালিকায়। তবে খাবারের দিকটা অনেকটা নির্ভর করে শরীরের ওজনের উপরে। ওজন বলে দেবে কে ঠিক কতটা প্রোটিন, ফাইবার, কার্বোহাইড্রেট খাবেন। বাড়ির খাবার খাওয়া যেতে পারে। তবে নজর রাখতে হবে সব পুষ্টিকর উপাদানগুলি যাতে শরীরে প্রবেশ করে। এই নিয়মগুলি মানলে এমনি ফিট থাকবে শরীর। কিচ্ছু আলাদা করতে হবে না। আমাদের যা কাজ, তাতে পেশাগত কারণে বাহ্যিক চেহারার বদল ঘটাতেই হয়। সেটা আলাদা বিষয়। কিন্তু এমনি সুস্থ থাকতে আর বিশেষ কিছু প্রয়োজন হয় না।’’
বাকিদের চেয়ে রণজয়ের চেহারায় বাড়তি কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে। খুব যত্ন নিয়ে ‘সিক্স প্যাক’ বানিয়েছেন। এমন চেহারা পাওয়া সহজ নয়। পরিশ্রম করতে হয়। খাটতে হয়। কোন রুটিন মানলে তবে এমন আকর্ষণীয় চেহারা পাওয়া যায়? রণজয় বলেন, ‘‘সব কাজেই পরিশ্রম রয়েছে। তবে এমন চেহারা তৈরি করতে যতটা সময় লাগে, তা ধরে রাখতে না পারলে দ্রুত বদলেও যায়। এর কারণ শুধুমাত্র ডায়েট। সারা বছর সিক্স প্যাক থাকলেও সব সময়ে তা বোঝা যায় না। খাওয়াদাওয়ার অনিয়মে একটু ফ্যাট হয়ে যায়। তবে মাথায় রাখতে হয় এমন কিছু খাব না, যাতে শরীরে মেদের আস্তরণ পড়ে যায়। শরীরে সবচেয়ে বেশি ফ্যাট জমা হয় নরম পানীয় এবং বাইরের ভাজাভুজি থেকে। সেগুলি আমি এড়িয়ে চলি। আর রোজের শরীরচর্চাটা মন দিয়ে করি। এর জন্য আলাদা করে সত্যিই কোনও খাটনির প্রয়োজন নেই। আমি অন্তত করি না। ফ্যাট কমে গেলেই অ্যাবস বেরিয়ে আসে। মেদ ঝরানোই এর মূলমন্ত্র। আমি তো ভাতও খাই। ’’
খাওয়াদাওয়ায় আর কী বিধি-নিষেধ মেনে চলেন রণজয়? রোজের খাদ্যতালিকায় কী কী থাকে অভিনেতার? তাঁর কথায়, ‘‘সকালে উঠে লেবু-জল, জিরের জল খাই। মরসুমি ফল খাই। সকালের খাবারে মূলত চিয়াবীজ, ফ্ল্যাক্সের বীজ, ওট্স, মুসলি থাকে। দুপুরে ভাত, ডাল, মাছ বাড়িতে যা রান্না হয়, সেগুলি খেয়ে নিই। সন্ধ্যায় খিদে পেলে শুকনো খোলায় ভাজা বাদাম আর চিঁড়ে ভাজা খেয়ে নিই। শুটিং না থাকলে সন্ধ্যায় জিমে যাই। ফিরে এসে তিন-চারটে ডিম খেয়ে নিই। ব্যস ওটাই আমার রাতের খাবার। অনেকেই ভাবেন আমি ভাত খাই না। সিক্সপ্যাক তৈরির পর্বেও ভাত খেতাম। কোনও সমস্যা হয়নি।’’