পাঁচ বছরের কম শিশুদের মধ্যে স্তন ক্যানসারের মতো রোগ সত্যিই বিরল। ছবি- সংগৃহীত
বছর সাতের এক শিশুকন্যা আক্রান্ত হয়েছে স্তন ক্যানসারে। চিলের এই ঘটনার কথা শুনে অবাক হয়েছেন অনেকেই। কিন্তু বিরল হলেও নানা দেশেই ঘটছে এমন ঘটনা। ৪ থেকে ৮ বছর বয়সি শিশুদের মধ্যে এই রোগে আত্রান্তের হার সারা বিশ্বে এখন এক শতাংশ।
চিলের ওই ক্যানসার আক্রান্ত শিশুর মা ঘটনাটি জানিয়েছেন। বলেছেন, ‘‘পাঁচ বছর বয়স থেকে আমার মেয়ের শরীরে ক্যানসারের উপসর্গ দেখা দেয়।’’ শিশুর পোশাক পাল্টাতে গিয়ে হঠাৎ তিনি লক্ষ্য করেছিলেন, স্তনের পাশে উঁচু মতো কী যেন একটা রয়েছে। ফোড়া ভেবে বাড়িতেই ওই অংশের চিকিৎসা শুরু করেন। তার পর নজরে পড়ে শিশুটির স্তনবৃন্তের মধ্যেও যেন কী একটা রয়েছে। তৎক্ষণাৎ তিনি মেয়েকে নিয়ে চিকিৎসকের কাছে ছুটে যান। চিকিৎসক তাঁকে জানান, এই লক্ষণগুলি একেবারেই স্বাভাবিক নয়। এখনই অস্ত্রোপচার প্রয়োজন, বেশি দিন ফেলে রাখলে জটিলতা বাড়তে পারে। শিশুরোগ এবং ক্যানসার চিকিৎসক ফ্রান্সিসকো বারিগা বলেন, “পাঁচ বছরের কম শিশুদের মধ্যে স্তন ক্যানসারের মতো রোগ সত্যিই বিরল।”
‘চিলিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অফ ক্যানসার পেশেন্ট’-এর সভাপতি ফেলিপ টগল বলেন, “বিরলতম এই রোগ এবং তার ভয়াবহতার কথা আন্দাজ করতে পেরে প্রথমে কোনও চিকিৎসকই রাজি হচ্ছিলেন না এই শিশুর চিকিৎসার ভার নিতে। তবে শেষমেশ শিশুটির অস্ত্রোপচার করা সম্ভব হয়।”
অস্ত্রোপচারের পর আক্রান্ত স্তনটি শিশুর শরীর থেকে কেটে বাদ দেওয়া হয়। পরে শিশুটির মা বলেন, “এই রোগের বিষয়ে কিছু বুঝে ওঠার আগেই এমন জটিল চিকিৎসা পদ্ধতির মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে আমার মেয়েকে। এর কষ্ট দেখে আমি থাকতে পারছি না। ও জানতেও পারল না যে এই বয়সে ওর একটি স্তন শরীর থেকে বাদ পড়ল। ওর শুধু একটিই চিন্তা। কেমোথেরাপি চলাকালীন চুল পড়ে যাওয়ার পর ওকে যেন খারাপ না দেখায়।”
শিশুদের মধ্যে বিরল হলেও এর আগে কানাডায় ৪ বছর বয়সি এক শিশুর স্তনে ধরা পড়েছিল ক্যানসার। ২০১৫ সালে আমেরিকায় এবং ব্রিটেনেও দুই শিশুর শরীরে ধরা পড়ে এই রোগ। ভারতে এমন ঘটনার কথা এখনও খুব বেশি শোনা যায়নি। কিন্তু এ বিষয়ে অভিভাবকদের সতর্ক থাকতে পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
শিশুদের স্তন ক্যানসারের লক্ষণগুলি কি বড়দের থেকে আলাদা?
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, লক্ষণগুলি মোটামুটি এক। খেয়াল রাখতে হবে, স্তনের আশপাশে এবং বাহুমূলের তলায় কোনও অস্বাভাবিক কিছু আছে কি না। স্তনের ওজনে বা আকারে কোনও পরিবর্তন হচ্ছে কি না। এ ছাড়াও স্তনবৃন্তের রং পরিবর্তন হলে, তার আশপাশের অঞ্চলে কোনও অবাঞ্ছিত ছিদ্র থাকলে, স্তনবৃন্ত থেকে রক্ত-সহ তরলজাতীয় কোন পদার্থ বেরোতে থাকলে তৎক্ষণাৎ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।