Parenting Tips

বাবা-মাকে দেখেই শেখে খুদে, কোন আচরণে কী ভাবে সন্তানকে সুশিক্ষায় বড়় করবেন অভিভাবকেরা?

শিশু বাবা-মাকে অনুকরণ করে। ফলে অভিভাবকদের আচরণ যেমন তাদের সুশিক্ষা দিতে পারে, তেমন কুপ্রভাবও পড়তে পারে। নিজেদের আচরণের মাধ্যমে সন্তানকে কী ভাবে শেখাবেন অভিভাবকেরা?

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৭:০৪
বাবা মায়ের কোন  আচরণ সন্তানকে ভাল শিক্ষা দিতে পারে?

বাবা মায়ের কোন আচরণ সন্তানকে ভাল শিক্ষা দিতে পারে? ছবি: সংগৃহীত।

পারিবারিক অনুষ্ঠানে মেয়ের মুখের কথা শুনে আকাশ থেকে পড়লেন অনন্যা। স্বামীর সঙ্গে পারিবারিক বিষয় নিয়ে মেয়ের সামনেই কোনও একদিন কথা বলেছিলেন তিনি। নিজে ভুলেও গিয়েছিলেন সে কথা। কিন্তু চার বছরের মেয়ে সকলের সামনে সে দিনের কথাই যে বলে দেবে, ভাবতেও পারেননি তিনি। স্বাভাবিক ভাবেই সকলের সামনে অস্বস্তিতে পড়তে হয় তাঁকে।

Advertisement

অনন্যার মতো শিশুর আচরণ নিয়ে অনেক সময়ই ধন্দে পড়ে যান অভিভাবকেরা। কখন কোন কথা, কোন জিনিস যে তারা শিখে ফেলে, বোঝা দায়! একই কথা বলছেন মনো-সমাজকর্মী মোহিত রণদীপ। তাঁর কথায়, ‘‘শিশুরা বাবা-মায়েদের দেখে শেখে। অনুকরণ করে। অভিভাবকের ভাল অভ্যাস, আচরণ যেমন তাদের মধ্যে ইতিবাচক গুণের বিকাশ ঘটায়, তেমনই খারাপ অভ্যাসের প্রভাবও তাদের উপরে পড়ে।’’ সে কারণেই দেখা যায়, মা-বাবার ভাল, খারাপ দুই আচরণই অজান্তে রপ্ত করে ফেলেছে সে।

শিশুর মধ্যে ভাল অভ্যাস গড়তে হলে তাই বাবা-মায়ের আচরণে নজর দেওয়া দরকার, বলেন মনোবিদেরা। কী ভাবে অভিভাবেকরা সেই দায়িত্ব পালন করবেন?

নিজের কাজ নিজে করা: ছোট থেকেই নিজের কাজ নিজে করার শিক্ষা সন্তানের ভবিষ্যতের জন্য ইতিবাচক, বলেন মনোবিদেরা। তবে সেই শিক্ষা আলাদা ভাবে তাকে দেওয়ার প্রয়োজন হবে না, যদি ছোট থেকে বাবা, মা এবং বাড়ির অন্যদের সে এই ভূমিকায় দেখে। অনেক বাড়িতেই দেখা যায়, শুধু মা কাজ করছেন, বাকিরা তাঁকে ফরমাশ করছেন। আবার যে পরিবারে বাবা, মা দু’জনেই কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেন, ঘরের কাজেও পুরুষেরা হাত লাগান, সেখানে সন্তান শিখবে, কাজ সকলের জন্য, নিজেরটা নিজেকেই করতে হয়।

সম্মানের শিক্ষা: বাবা-মা বাড়ির অন্যদের সম্পর্কে কী ভাবেন, কী বলেন, তা কিন্তু লক্ষ করে ছোটরা। বাবা-মায়েরা যে ভাষা ব্যবহার করেন, তা-ই বলতে শেখে সে। এ জন্য আলাদা করে শেখানোর প্রয়োজন হয় না। অভিভাবকেরা যদি বাড়ির বড়দের সম্মান করেন, নিজেদের মধ্যে শান্ত ভাবে কথা বলেন, সে ভাবেই কথা বলতে, সম্মান করতে শিখবে সে। বাড়ির পরিচারক থেকে অতিথি, কার সঙ্গে অভিভাবক কেমন আচরণ করছেন, শিশুর শিক্ষায় এই সব কিছুর প্রভাব পড়ে।

পড়াশোনা: জোর করে নয়, সন্তানকে পড়াশোনা, নিয়মানুবর্তিতার শিক্ষা দেওয়া যায় সহজ ভাবেই। খুদের পড়ার সময় যদি বাবা বা মা নিজেও বই নিয়ে বসেন, তাকে গল্প বলে শোনান, তা হলে শিশু বুঝবে, পড়াশোনা করাটাও জরুরি। বাবা, মাকে অবসরে বই পড়তে দেখলে, তারও কিন্তু বইয়ের প্রতি আগ্রহ জন্মাতে পারে।

অবসরযাপন: বর্তমান প্রজন্মের মোবাইলে আসক্তি বাড়ছে, যা নিয়ে উদ্বিগ্ন মনোরোগ চিকিৎসক থেকে মনোবিদেরা। মোহিত বলছেন, সমস্যার সূত্রপাত কিন্তু অভিভাবকদের থেকেই হতে পারে। সন্তানকে সময় না দিয়ে মা-বাবা মোবাইলে ডুবে থাকলে শিশু সেটাই শিখবে। সন্তানকে সংযত করতে হলে ছোট থেকেই অভিভাবকদের মোবাইল ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন। বদলে সেই সময় শিশুকে গল্পের ছলে জীবনের পাঠ দেওয়া যেতে পারে।

Advertisement
আরও পড়ুন