Parenting Tips

ছোটখাটো ব্যাপারে জেদ করছে সন্তান? একগুঁয়ে হয়ে উঠছে, সামলাবেন কী ভাবে?

অনেক শিশুর মধ্যে খুব অল্প বয়স থেকেই অকারণে রাগ করার প্রবণতা দেখা যায়। সঠিক পথে আনার জন্য অভিভাবকেরা অনেক সময়ই বকাবকি করে থাকেন বা কড়া হাতে শাসন করেন। তাতে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকেই যায়।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৩:৪৫
Anger and stubbornness can have long-term effects on a child\\\\\\\\\\\\\\\'s emotional development, what to do

না বকে শিশুর জেদ সামলাবেন কী ভাবে? প্রতীকী ছবি।

খুব একগুঁয়ে হওয়া যেমন সমস্যার, তেমন শিশুর একটু-আধটু জেদ থাকাকে কিন্তু ইতিবাচক হিসাবেই দেখেন মনোবিদেরা। তাঁদের মতে, কোনও বিষয়ে একেবারেই একগুঁয়ে না হলে শিশুর নিজস্ব বিচার ক্ষমতা ও দৃঢ়তা তৈরি হয় না। কিন্তু জেদ বা একগুঁয়ে আচরণ যদি ক্রমশই বিরক্তির কারণ হয়ে উঠতে থাকে, তখন সে দিকে নজর দিতেই হবে অভিভাবকদের। অনেক শিশুর মধ্যে খুব অল্প বয়স থেকেই অকারণে রাগ করার প্রবণতা দেখা যায়। সঠিক পথে আনার জন্য অভিভাবকেরা অনেক সময়ই বকাবকি করে থাকেন বা কড়া হাতে শাসন করেন। তাতে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকেই যায়।

Advertisement

সন্তানের জেদ কী ভাবে সামলানো যায়, তা নিয়ে নিজের মতামত দিয়েছেন মুম্বইয়ের এক মনোবিদ ঋদ্ধি দোশি পটেল। তাঁর ব্যাখ্যা, শিশুর রাগ বা জেদকে বশে আনতে গেলে চেঁচামেচি করে বা বকাবকি করে লাভ হবে না। তার আগে বুঝতে হবে, শিশুর এমন আচরণের কারণ কী। কারণ, প্রতিটি শিশুর মনস্তত্ত্ব আলাদা। তাদের প্রাথমিক চাহিদাও আলাদা। তাই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে খুঁজে বার করুন, কেন তারা রেগে যাচ্ছে।

মনোবিদ তিনটি কারণ বলেছেন—

প্রথমত, শিশু খুব জেদ করছে বা রাগ দেখাচ্ছে মানে সে আপনার সাহচর্য চাইছে। বয়স অল্প হলেও খুদেদেরও তাদের মতো করে নানা রকম ইচ্ছে তৈরি হতেই পারে। সেই ইচ্ছে পূরণ না হলেই তাদের মেজাজ বিগড়ে যায়।

দ্বিতীয়ত, কোনও কারণে তার মনে ভীতি তৈরি হয়েছে অথবা কোনও বিষয় নিয়ে সে খুব ভয় পেয়েছে। সেই পরিস্থিতি সামলাতে না পেরেই তার মনমেজাজ খারাপ হয়ে আছে।

তৃতীয়ত, অনেক সময়েই অভিভাবকেরা শিশুর কথা শুনতে চান না। ধৈর্যের অভাবে বড়রাও ছোটদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে ফেলেন। যার ফলে তাদের মনে অনেক বেশি আঘাত লাগে। তার থেকেও জেদ বাড়ে।

কী করা উচিত?

শিশু জেদ করতে শুরু করলে তাকে বকাবকি না করে অন্য পরিবেশে নিয়ে যান। গল্পের বই পড়তে দিন বা ছবি আঁকতে দিন। আপনিও গল্প বলুন। গল্পের মধ্যে দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করুন।

শিশুর সঙ্গে কেমন ব্যবহার করছেন তা-ও গুরুত্বপূর্ণ। বড়রা অনেক সময়েই বোঝেন না যে, কথায় কথায় তুলনা টানলে বা অযথা প্রতিযোগিতার মধ্যে শিশুকে ঠেলে দিলে তার আত্মবিশ্বাস নষ্ট হয়ে যায়। তখন হয় শিশু নিজেকে গুটিয়ে নেবে, না হলে নিজের খামতিগুলোকে ঢাকতে প্রচণ্ড জেদি ও একগুঁয়ে হয়ে উঠবে।

শিশুর সঙ্গে কথা বলাও জরুরি। যতই ব্যস্ততা থাক, দিনের একটি সময়ে অন্তত শিশুকে সঙ্গ দিন। তার কথাগুলোও শোনা জরুরি। শিশুর মনে সাহস ও ভরসা জোগাতে হবে অভিভাবককেই। শিশুর মধ্যে আত্মবিশ্বাসের অভাব তৈরি হলে সে জেদি হয়ে উঠতে পারে। আবার হীনন্মন্যতাতেও ভুগতে পারে। তাই তাকেও স্বাধীন ভাবে মতামত প্রকাশের অবকাশ দিতে হবে। তা হলেই বোঝা যাবে শিশু কোন কাজটি সঠিক করছে আর কোনটি ভুল। তা হলে তাকে বোঝানোও অনেক সহজ হয়ে যাবে।

Advertisement
আরও পড়ুন